<p><span style="font-size:18px"><sub>গলায় ব্যথা হলেই সাধারণত ধরে নেওয়া হয় টনসিলে ইনফেকশন হয়েছে। টনসিল হলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী অঙ্গ এবং এগুলো মুখের ভেতরে কয়েকটি গ্রুপে অবস্থান নেয়। এগুলোকে প্যালাটাইন, লিংগুয়াল, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড টনসিল বলে। সাধারণত প্যালাটাইন টনসিলই সাধারণ মানুষের কাছে টনসিল হিসেবে পরিচিত।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>টনসিলের ইনফেকশন বা টনসিলাইটিস শিশু এবং বাচ্চাদের বেশি হলেও এটি যেকোনো বয়সেই হতে পারে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>এই ইনফেকশন সাধারণত দুই ধরনের হয়—তীব্র বা হঠাৎ প্রদাহ এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ। </sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>কখনো কখনো টনসিলের চারপাশে ফোড়া হতে পারে। এ ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ লোকাল অ্যানেসথেসিয়ার মাধ্যমে পুঁজ বের করে দিতে হয় এবং পরে এক থেকে দেড় মাস পর অপারেশন করে টনসিল ফেলে দিতে হয়। </sub></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:18px"><sub>লক্ষণ</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦            গলা ব্যথা, তীব্র বা মাঝারি ধরনের। </sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦            মাথা ব্যথা, জ্বর। </sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦             খাবার খেতে কষ্ট ও মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হয়।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦            ব্যথা হতে পারে কানেও।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦          মুখ দিয়ে লালা বের হয় ও কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যেতে পারে। মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে পারে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦            স্বরভঙ্গ, গলায় ঘাসহ টনসিল স্ফীতি, ঢোক গিলতে কষ্ট হয় এবং গলা ফুলে যায়।</sub></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:18px"><sub>কারণ</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>পুষ্টির অভাব বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া; আইসক্রিম ও ফ্রিজে রাখা শীতল পানি বেশি পান করা; মুখ ঠিকমতো পরিষ্কার না রাখা এবং ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ টনসিলের ইনফেকশনের কারণ হতে পারে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>স্যাঁতসেঁতে বাসস্থান, ঠাণ্ডা আবহাওয়া, শীতের প্রকোপ বেশি হলে এবং গরমে ঘাম বসে গেলে টনসিলের প্রদাহ বেড়ে যেতে পারে।</sub></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:18px"><sub>করনীয়</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦             প্রচুর পরিমাণে কুসুম গরম পানি ও তরল খাবার খেতে হবে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦            যত দিন সুস্থ না হবেন, তত দিন পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦              মুখের হাইজিন (মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য) বা ওরাল হাইজিন ঠিক রাখতে হবে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>♦            বারবার কুলি বা মাউথ ওয়াশ করতে হবে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>            সাধারণ স্যালাইন বা লবণ মেশানো গরম পানি দিয়ে বারবার কুলি করতে হবে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>             লেবু বা আদা চা খেতে পারেন।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>            গলায় ঠাণ্ডা লাগানো যাবে না।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>              টনসিলের অসুখে যেহেতু তীব্র ব্যথা ও জ্বর থাকে, সে ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ এবং পরে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>             নিয়মিত ওষুধ খেলে, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও নিয়ম মেনে চললে রোগী সাধারণত এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>n</sub><sub>              অপর্যাপ্ত চিকিৎসা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে দীর্ঘমেয়াদি ইনফেকশন বা ক্রনিক টনসিলাইটিস হতে পারে এবং কিছু শারীরিক জটিলতা যেমন—কিডনি ও হার্টের ভালভের সমস্যাও হতে পারে।</sub></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:18px"><sub>চিকিৎসা</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px"><sub>দীর্ঘমেয়াদি টনসিলাইটিসের চিকিৎসা সাধারণত অস্ত্রোপচার বা অপারেশন। যদি বারবার টনসিলাইটিস হয় বা এটির জন্য অন্য কোনো জটিলতার সৃষ্টি হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে টনসিল ফেলে দেওয়াই ভালো।</sub></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:18px"><sub>কখন অপারেশন?</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>              দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক টনসিলাইটিস।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>    </sub><sub>          টনসিল বড় হয়ে শ্বাসনালি বন্ধ হয়ে গেলে এবং নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হলে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>            টনসিলে যদি ফোড়া বা পেরিটনসিলার এবসেস হয়।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>            যদি বছরে তিন-চার বারের বেশি ইনফেকশন হয়।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>             এসব কারণ ছাড়াও যদি দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক ক্রিপটোকংকাল ইনফেকশন হয়।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>             স্টাইলয়েড প্রসেস অপারেশনের সময়।</sub></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:18px"><sub>যখন নয় অপারেশন</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>             অ্যাকিউট ইনফেকশন থাকলে টনসিলে অস্ত্রোপচার করা যাবে না। কারণ তখন ইনফেকশন সারা শরীরে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং রক্তপাত বন্ধ না-ও হতে পারে।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>             জ্বর বা ব্যথা থাকা অবস্থায় করা যাবে না।</sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>            যদি কারো রক্তরোগ থাকে, যেমন— থ্যালাসেমিয়া। </sub></span></p> <p><span style="font-size:18px">♦<sub>             রক্তনালি ও রক্তরোগ থাকলে টনসিলে অপারেশন করা যাবে না। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না এনে অপারেশন করা যাবে না।</sub></span></p>