<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারত ও বাংলাদেশের দীর্ঘ সীমান্ত সব সময়ই সংবেদনশীল। সীমান্তে হত্যার ঘটনা সত্যিকার অর্থেই দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে কাঁটা হয়ে বিঁধে আছে। ২০২১ সালে ঢাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের ১৯তম স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের তরফ থেকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে ভারতকে। বিএসএফ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মধ্যে সীমান্ত সম্মেলন বা পতাকা বৈঠকে প্রতিবারই সীমান্তে আর গুলি চালাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয় বিএসএফ। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আর রক্ষা হয় না। ফলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হচ্ছে না বা বন্ধ করা যাচ্ছে না। চলতি মাসে আট দিনের ব্যবধানে দুজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সীমান্তে বাংলাদেশিদের ওপর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের গুলিতে হত্যার ঘটনা দিন দিন আরো উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত মাসে তিনজন নিহত ও তিনজন আহত হয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে ও নির্যাতনে অন্তত ৬০৭ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া অধিকার নামের একটি মানবাধিকার সংস্থার মতে, ২০০৯ থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বিএসএফ সদস্যদের হাতে অন্তত ৫৮২ বাংলাদেশি নিহত এবং ৭৬১ জন আহত হয়েছে।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সীমান্তে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা বা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সেটির সমাধানের জন্য আইনগত পথ-পদ্ধতি রয়েছে। কাউকে হত্যা করা কখনো কোনো সমাধান নয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্তর্জাতিক আইন কোনো বাহিনীকে বিশ্বের কোথাও নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের গুলি বা নির্যাতন করার অনুমতি দেয় না। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশের নাগরিক হত্যাকাণ্ডের একটিরও বিচার হয়নি। এমনকি বিএসএফ বা ভারত সরকার হত্যাকাণ্ডের কোনো ঘটনায় কখনো উদ্বেগও প্রকাশ করেনি। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জবাবদিহির বাইরে থাকার কারণেই মূলত সীমান্ত হত্যা বন্ধ হচ্ছে না। তাঁরা মনে করেন, সীমান্তে প্রবেশ করলেও সরাসরি নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করার বিধান নেই। দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইনের মাধ্যমে সীমান্ত হত্যা বন্ধে বাংলাদেশ সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সীমান্তে সংঘর্ষ কেন হবে? কেন বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যেও সংঘাত সৃষ্টি হবে? কেন সেখানে বাংলাদেশের নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে লিথাল অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হবে? দুই দেশের মধ্যে সীমান্তবর্তী এলাকার এই যে উদ্বেগ, তা অবিলম্বে মীমাংসা হওয়া প্রয়োজন।</span></span></span></span></p>