<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে স্থির ও নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয় মূল্যস্ফীতির কারণে। ক্রমাগতভাবে পরিবারের সদস্যদের পুষ্টিগ্রহণের সঙ্গে আপস করতে হয়। ক্রমাগতভাবে কমাতে হয় খাদ্যগ্রহণের পরিমাণ। এমনটিই দেখা গেছে নিকট অতীতে। প্রায় দুই বছর ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ শতাংশের ওপর। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট ক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তী সরকার। এসেই মূল্যস্ফীতি কমাতে তারা বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়। আর এর ফলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতিও হয়েছে। জুলাই মাসে যেখানে মূল্যস্ফীতি ছিল ১১.৬৬ শতাংশ, আগস্টে তা ১ শতাংশের বেশি কমে হয়েছে ১০.৪৯ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের ধারণা, এই ধারা অব্যাহত থাকলে সামনের মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে আসবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত কয়েক বছরে মূল্যস্ফীতি যে হারে বেড়েছে, মানুষের আয় সে হারে বাড়েনি। ফলে মানুষ আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারছে না। গত মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও এখনো দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানে রয়েছে। যে শ্রীলঙ্কা কিছুদিন আগেও অর্থনৈতিক সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছিল; কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, সেই শ্রীলঙ্কায়ও আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল মাত্র ০.৫ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ১.৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল মালদ্বীপে। ভুটানে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ২.০৪, নেপালে ৩.৫৭, ভারতে ৩.৬৫ শতাংশ। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতির হার ছিল অনেক বেশি। ২০২৩ সালে সেখানে মূল্যস্ফীতি ছিল ২৭ শতাংশ। সেই পাকিস্তানেও এখন মূল্যস্ফীতি এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে। আগস্ট মাসে পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৬৪ শতাংশ। তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে এই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি কেন? অর্থনীতিবিদরা এর জন্য বিগত সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি এবং দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতাকেই দায়ী করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক বরকত-ই-খুদার মতে, অনেক আগে থেকেই দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। বিবিএস ঘোষিত মূল্যস্ফীতির হারই ছিল ১১-১২ শতাংশ। তবে প্রকৃত মূল্যস্ফীতির হার ছিল আরো বেশি। কারণ এই সংস্থাটির প্রদত্ত পরিসংখ্যানের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরবরাহ চেইন ঠিক রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ডলার সংকটের মধ্যেও নিত্যপণ্য, বিশেষ করে আমদানিনির্ভর নিত্যপণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতেই হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশে দেখা যায় যে বাজারে পণ্যের যথেষ্ট সরবরাহ থাকার পরও লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ে। এভাবে বাজার অস্থির হওয়ার জন্য সিন্ডিকেট, মজুদদারি এবং এমন আরো কিছু বিষয়কে দায়ী করা হয়। তাই দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে এসব দিকেও নজর দিতে হবে। টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি, এক কোটি কার্ডের বিপরীতে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রিসহ বাজারে হস্তক্ষেপের অন্যান্য পদ্ধতিও কার্যকর রাখতে হবে এবং ক্রমান্বয়ে বাড়াতে হবে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>