<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবারও রক্তাক্ত হয়েছে পাহাড়ি জনপদ। গত বুধবার খাগড়াছড়িতে মো. মামুন নামের এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঙালিরা মিছিল বের করলে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তাদের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটে গোলাগুলির ঘটনাও। এসব ঘটনায় খাগড়াছড়িতে তিনজনের মৃত্যু হয়। এর রেশ ধরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে আরেক পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে। সেখানে শুক্রবার পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কয়েক হাজার মানুষ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপায় গেলে মিছিলের পেছন দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে এমন অভিযোগে কিছু দোকানপাট ভাঙচুর করার পাশাপাশি একটি মসজিদে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এর প্রতিবাদে স্থানীয় বাঙালিরা একত্র হয়ে পাল্টা মিছিল করে। এ সময় পাহাড়িদের মালিকানাধীন কিছু দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর শহরের আরো কিছু স্থানে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব সংঘর্ষে একজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি উভয় জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশের পাশাপাশি পার্বত্য জেলাগুলোতে সবাইকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও সবাইকে সমপ্রীতি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আড়াই দশক আগে শান্তিচুক্তি হলেও পাহাড়ে শান্তি আসেনি। কখনো পাহাড়ি বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কখনো পাহাড়ি ও বাঙালিরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। অনাকাঙ্ক্ষিত এসব রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান হওয়া জরুরি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে আজ নতুন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বৈরাচারমুক্ত পরিবেশে মানুষ সাম্য, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, শান্তি ও সম্প্রীতির প্রত্যাশা করছে। সেখানে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা আশা করব, তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসকারী সবাই নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যকার সব ভেদাভেদ ভুলে সম্প্রীতির নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সব ধরনের হানাহানি থেকে তারা সবাই নিজেদের বিরত রাখবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুক্রবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে, অনাকাঙ্ক্ষিত এসব হামলা, আক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসকারী সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে সরকার খুব শিগগির একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করবে। এ ছাড়া আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দ্রুত নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা আশা করি, পাহাড়ি জনপদে শান্তি ফিরে আসবে। বিদ্যমান সংকট ও সমস্যাগুলো আলোচনার ভিত্তিতে দ্রুত সমাধান করা হবে। একই সঙ্গে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করতে হবে।</span></span></span></span></p>