<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূল্যস্ফীতির চাপে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, বিক্রি হ্রাস, সুদের উচ্চহার, শ্রম অসন্তোষ, পরিবহন ও কারিগরি সমস্যা, ডলার সংকটে কাঁচামালের ঘাটতি, বৈশ্বিক যুদ্ধ ও আকস্মিক বন্যার বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করছে ব্যবসা-উদ্যোগ। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, উন্নয়ন প্রকল্পে স্থবিরতায় কাজ কমেছে সাধারণ মানুষের। জনজীবনে অস্থিরতা, আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। ছোট-বড় সব বিনিয়োগ বা ব্যবসা প্রসারেও দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় মানুষ কেনাকাটা সীমিত করছে। ব্যবসায় বেচাকেনাও কমেছে। খুচরা বিক্রিতে মন্দা চলছে। দুর্বল হচ্ছে ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের ব্যাবসায়িক সক্ষমতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে এই অবস্থা চলার কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, তারা সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। কয়েক মাস ধরে শিল্পাঞ্চলগুলোতে ঘন ঘন বিক্ষোভ হচ্ছে। অনেক কারখানা সময়মতো বেতন দিতে পারছে না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভোক্তা চাহিদা খুব দুর্বল অবস্থায় আছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। আগে ক্রেতারা যে পরিমাণে পণ্য কিনত, এখন তার চেয়ে কম কিনছে। মানুষ এখনো মানসিকভাবে সাম্প্রতিক অস্থিরতা থেকে পুরোপুরি বের হতে পারেনি। এ কারণে অনেকে কাজ হারিয়েছে, অনেকে হারানোর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অনেকের বাড়তি আয় বন্ধ। এ কারণে খরচ সাশ্রয়ে মনোযোগী হয়েছে বেশির ভাগ পরিবার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার জন্য পরিবেশ লাগবে। চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা মহলে আস্থাহীনতা, শঙ্কা, ভয় আর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। থমকে আছে ব্যবসার প্রসার ও নতুন বিনিয়োগ। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকির পাশাপাশি ব্যবসা প্রসারেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরো কিছু কার্যকারণ। বাজারে নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানতে দফায় দফায় সুদের হার বাড়িয়ে টাকার প্রবাহ কমানোর কৌশলে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত। অন্যদিকে ডলারের উচ্চমূল্যও একটি অন্তরায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। সাধারণত মূল্যস্ফীতি ঘটলে সুদের হার বাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি নেওয়া হয়। কমিয়ে দেওয়া হয় সরকারি ব্যয়। কিন্তু বাংলাদেশে কি এসব পদ্ধতি কোনো কাজে আসছে? মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নীতি সুদ হার বাড়িয়ে চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদ হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, উচ্চ সুদহার তাঁদের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে; ঋণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল নীতির কারণে গত তিন-চার বছরে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির সমস্যাগুলো দীর্ঘায়িত হয়েছে। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন-পরবর্তী আন্দোলন-বিক্ষোভে বেশ কিছু অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে তিন বছর ধরে আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও খুব মন্থর অবস্থায় আছে। সেটিও বিনিয়োগ কমে যাওয়ার একটি বড় কারণ। বাজারে চাহিদা কম। অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমার মূল কারণ অতি উচ্চ মূল্যস্ফীতি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা দেখা দিলে বাজারে তার প্রভাব পড়বে। বিনিয়োগ কমে গেলে কর্মসংস্থান হবে না। মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়বে জনজীবনে। কাজেই মূল্যস্ফীতি কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে।</span></span></span></span></p>