<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উচ্চ মূল্যস্ফীতি, নির্বাচনকেন্দ্রিক অনিশ্চয়তা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অত্যধিক খেলাপি ঋণ, ব্যাংক মার্জারসহ অন্যান্য কারণে প্রায় এক বছর ধরেই ব্যাংকের ওপর মানুষের আস্থা কমছিল। মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিজের কাছে রাখছিল। এই ধারা আরো ব্যাপক হয় গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময়। আশার কথা যে সেই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োচিত পদক্ষেপের কারণে ব্যাংক কার্যক্রমের ওপর মানুষের আস্থা বাড়তে শুরু করেছে। টানা ১০ মাস পর ঘরে রাখা টাকা আবার ব্যাংকে ফিরতে শুরু করেছে। কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গত দুই মাসে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যাংকে ফিরেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটি দেশের অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি অনেকটাই নির্ভর করে সে দেশের ব্যাংকিং কার্যক্রমের ওপর। সুস্থ ধারার ব্যাংকিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে মানুষ স্বস্তিতে থাকে, বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ে, অর্থনীতি গতিশীল হয়। নিকট অতীতে দেশের ব্যাংকিং খাতে এক ধরনের নৈরাজ্য চলছিল। মানুষ ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখতে ভয় পেত। তা ছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয়ও কমে আসছিল। জুলাই-আগস্টে রেমিট্যান্স বয়কটের কারণেও দেশে অর্থের প্রবাহ কিছুটা শ্লথ হয়েছিল। সব মিলিয়েই মানুষ ব্যাংকে অর্থ রাখার চেয়ে নিজের কাছে নগদ অর্থ রেখে দিচ্ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানামুখী উদ্যোগের কারণে আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরেছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে। তাই ব্যাংক খাতের প্রতি পুনরায় মানুষের আস্থা বাড়ছে এবং ঘরে থাকা টাকা ব্যাংকে ফিরছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংক খাতে আমানত গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭.২৬ শতাংশ বা ৯ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা বেড়ে ১৭ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যদিও আগের মাস আগস্টে মোট আমানত ১৭ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকায় নেমে আসে, যা ছিল জুলাইয়ের তুলনায় ০.১৬ শতাংশ কম। তবে আগের বছরের তুলনায় আগস্টে আমানত প্রবৃদ্ধি দাঁড়ায় ৭.০২ শতাংশ, যা ১৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ব্যাংক খাতে সাধারণত প্রতি মাসে আগের মাসের তুলনায় আমানত বাড়ে। তবে জুলাই ও আগস্ট মাসে আমানত বাড়ার বদলে উল্টো কমেছে। স্বস্তির বিষয়, সেই কমার ধারা থেকে আমানত পুনরায় বৃদ্ধির ধারায় ফিরেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তী সরকারের সঠিক নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত নীতি ও পদক্ষেপ দেশের আর্থিক খাতকে আরো সুশৃঙ্খল করবে। ব্যাংক খাতে মানুষের আস্থা ফিরুক এবং সঞ্চয় ও বিনিয়োগ ত্বরান্বিত হোক, এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>