<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবাস আয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের জন্য অতি প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস এটি। বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মীদের ক্ষেত্রে বাস্তবতা এই যে অনেক পুরনো বাজার বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন বাজার খুলছে না। আবার পুরনো অনেক বাজার নানা কারণে সংকুচিত হয়ে গেছে। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন কর্মী এবং ২০২৩ সালে ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ৪৫৩ জন কর্মী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। আর চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯ লাখ ৭১ হাজার ৪৪১ জন কর্মী বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। চলতি বছর ২০২২ সালের তুলনায় ১৪.৪৮ শতাংশ এবং ২০২৩ সালের তুলনায় ২৫.৫৯ শতাংশ কর্মী কম গেছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সৌদি আরবের পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান এবং এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া ছিল বাংলাদেশি কর্মীদের সবচেয়ে বড় পছন্দের স্থান। ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর দুর্নীতি, অনিয়ম ও কাজ না থাকার অভিযোগে বন্ধ হয়ে যায় ওমানের শ্রমবাজার। এরপর আর চলতি বছর এই শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়নি। ২০১৬ সালের পর ২০২২ সালের আগস্ট মাসে চালু হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এরপর দীর্ঘ ২২ মাস চালু থাকার পর ওমানের মতো একই অভিযোগে চলতি বছরের ৩১ মে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। গত আগস্ট মাস থেকে অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার। গত ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ইতালির শ্রমবাজার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য বড় সমস্যা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাব। আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের বাস্তবতায় বাংলাদেশের শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে অদক্ষ। যেসব দেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ আছে, সেসব দেশে জনশক্তি রপ্তানি করা সম্ভব হয় না। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন বাজার হয়ে গেছে প্রতিযোগিতামূলক। আমাদের শ্রমবাজারগুলোতে সঠিক পদ্ধতি নির্ণয় করা প্রয়োজন। এরপর প্রয়োজন দক্ষ কর্মী। দক্ষ কর্মী তৈরি না হলে আমরা পিছিয়ে পড়ব। তারা মনে করেন, দক্ষতার প্রতিযোগিতা বাড়লে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেকোনো দেশে মানুষই সম্পদ। মানুষের শ্রমে-ঘামে-মেধায়-পরিকল্পনায় একটি দেশ বা জাতির অগ্রগতি নিশ্চিত হয়। দক্ষ জনশক্তির রপ্তানি বাড়াতে পারলে রেমিট্যান্সও বাড়বে। আমাদের এখন দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করতে হবে। বাইরের দেশে তুলনামূলকভাবে কায়িক শ্রমের চাহিদা কম। বাংলাদেশের শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে অদক্ষ। অনেক পেশায় আমাদের কর্মীরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। তাই ভালো ও বেশি আয়ের পেশায় বাংলাদেশিদের নিয়োগ কম। কাজেই আমাদের এখন শ্রমবাজারের চাহিদার পরিবর্তন ও দক্ষতার বিষয়ে নজর দিতে হবে। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় শিক্ষিত ও দক্ষতাসম্পন্নদের কদর বাড়ছে। সব কর্মক্ষেত্র সবার জন্য উন্মুক্ত না হলেও দক্ষ জনশক্তি নিজ নিজ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে নিতে পারে। শ্রমশক্তি হিসেবে বিদেশ গমনেচ্ছুদের বিদেশি ভাষায় পারদর্শী করে তোলাও প্রয়োজন। সঠিক প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিকাশমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। আমরা আশা করব, আমাদের কূটনৈতিক মিশন ও সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় জনশক্তি রপ্তানিতে নতুন করে জোয়ার আসবে।</span></span></span></span></p>