<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের বড় সমস্যা হচ্ছে বেকারত্ব। আমরা সমন্বিত উন্নয়নের দিকে যেতে পারিনি। অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন করলেও আমরা মানবসম্পদের মানসম্পন্ন উন্নয়ন করতে পারিনি। বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কর্মসংস্থান। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে শ্রমশক্তির তুলনায় কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি কম। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটি বড় অংশই এখন বেকার। পড়াশোনা শেষ করে বছরের পর বছর চাকরির জন্য অপেক্ষা করছে তারা। আজকের তরুণদের জন্য যথাযথ ও পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপের তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদনের তথ্য নিয়ে কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়ে এখন ২৬ লাখ ৬০ হাজার। আর বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৪.৪৯ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে তা ছিল ৪.০৭ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে দেশে বেকার জনগোষ্ঠী ছিল ২৪ লাখ ৯০ হাজার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত এক বছরে দেশে তেমন কোনো বিনিয়োগ হয়নি। সরকারি-বেসরকারি সব বিনিয়োগই কমেছে। এর সঙ্গে গত জুলাই থেকে শুরু হওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবও পড়েছে বিনিয়োগে; যার ফলে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছে, বেকারত্বের হারও বেড়েছে। শিল্প খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বর্তমানে বিনিয়োগের কোনো পরিবেশ নেই। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের ধারাবাহিকতার কারণে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তা ছাড়া বিনিয়োগের বাধার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যাংকের উচ্চ সুদহার। এমন পরিস্থিতিতে বেকারত্বের হার আরো বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা। গত এক বছরে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ না থাকা আর গত জুলাই থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করেছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতে, দেশে যত বেশি উৎপাদন বাড়বে, কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে। গত বছর কিংবা গত জুলাই বা আগস্টের শেষেও নতুন কোনো বিনিয়োগ হয়নি। বিনিয়োগ বাড়লেই দেশে উৎপাদন বাড়বে, ক্যাপাসিটি বাড়বে। তখন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, বেকারত্বের হারও কমবে। শিল্প খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, দেশে বিনিয়োগ না আসায় অনেক কারাখানা এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে পড়েছে, কর্মসংস্থানের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে বিনিয়োগ আরো কমবে, অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে পড়বে, বেকারত্বের হার আরো বাড়বে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের অনেক তরুণ এখন অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত। তাদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাটাই এখন জরুরি। উচ্চশিক্ষিত তরুণদের উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে দেশ এগিয়ে যাবে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে মেধা। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম মেধাবী। অথচ চাহিদা অনুযায়ী কর্মসংস্থান না হওয়ায় প্রতিবছর কর্মক্ষম মানুষ নতুন করে বেকার হচ্ছে। কারণ প্রবৃদ্ধির সমান্তরালে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। ফলে দেশের কর্মক্ষম শ্রমশক্তির একটি বড় অংশ কাজের বাইরে থেকে যাচ্ছে। অথচ দেশের সার্বিক উন্নয়নে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। ইউএনডিপি তাদের এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অতিক্রম করছে। একটি জাতির জীবনে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অবস্থা একবারই আসে এবং তা সাধারণত ৩০ বছর স্থায়ী হয়। আমাদের এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি নতুন কর্মপরিবেশের উপযোগী একটি শ্রমশক্তিও তৈরি করতে হবে। উচ্চশিক্ষিত তরুণদের উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে দেশ এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কর্মসংস্থান। তরুণদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যথাযথ কাজে লাগাতে হবে। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাটাই এখন জরুরি। বেকারত্ব ঘুচিয়ে তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গেলে সমাজে আস্থার সংকট কেটে যাবে। উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে দেশ এগিয়ে যাবে।</span></span></span></span></p>