<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৪৫ সালের ৬ আগস্টের সকাল। জাপানের হিরোশিমাতে বসবাসরত মিচিকো ঘুম থেকে উঠতে দেরি করে ফেলেছিলেন। মিচিকো কাজ করেন টয়ো কোগিও কারখানায়। মূল শহর থেকে তা প্রায় আট কিলোমিটার পূর্বে। আলসেমি না করে দৌড় লাগালেন মিচিকো। খুব কষ্টে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করা ট্রেনে শেষ অব্ধি উঠতে পারলেন তিনি। কারখানায় ঢুকে মাত্র কাজ শুরু করেছেন, হঠাৎ ৮টা ১৫ মিনিট নাগাদ শুনতে পান বিকট শব্দ। হিরোশিমা শহরের কেন্দ্র আর তাঁর কারখানার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে হিজিয়ামা পর্বত। বোমা বিস্ফোরণের পর এই পাহাড়টির অন্যদিক থেকে শুধু কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। মূলত মিচিকো ও তাঁর অন্য সহকর্মীদের বোমা থেকে বাঁচাতে কিছুটা হলেও সাহায্য করেছিল এই পাহাড়। মিচিকো বেঁচে গেলেন, কিন্তু বাঁচতে পারল না হিরোশিমার লক্ষাধিক মানুষ। ধারণা করা হয়, হিরোশিমা শহরে বসবাস করা সাড়ে তিন লাখ মানুষের মধ্যে এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ শুধু বোমার বিস্ফোরণেই মারা যায়। আর এই বোমার শিকার হয়েও যারা বেঁচে গিয়েছিল, তাদের বলা হতো হিবাকুশা। ভয়ংকর শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে বাকি জীবন অতিবাহিত করতে হয়েছে তাদের। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত চলা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দুই পক্ষ, অক্ষশক্তি ও মিত্রশক্তি। ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল অক্ষশক্তির অ্যাডলফ হিটলার আত্মহত্যা করার পর ৮ মে জার্মান সশস্ত্র বাহিনী আত্মসমর্পণ করে, কিন্তু জাপান তখনো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিল। অক্ষশক্তির বলয়ে থাকা জাপানের বিরুদ্ধে ব্রিটেন এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মোট ৭১ হাজার সৈন্য হত্যার অভিযোগ তোলা হয়। মিত্র বাহিনী ২৮ জুলাই পর্যন্ত জাপানকে আত্মসমর্পণের সময়সীমা বেঁধে দেয়। কিন্তু সেই সময়সীমা পার হলেও জাপান আত্মসমর্পণ করেনি। জাপানকে সব দিক থেকে শায়েস্তা করার দায়িত্ব নেয় মার্কিন সরকার। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ম্যানহাটান প্রজেক্ট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ছিল মার্কিন সরকারের এক অতি গোপন গবেষণা প্রকল্প। এরাই তৈরি করেছিল বিশ্বের প্রথম পরমাণু বোমা। ম্যানহাটানের বানানো যে বোমাটি হিরোশিমায় ফেলা হয়েছিল, তার নাম ছিল </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লিটল বয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এটির শক্তি ছিল প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টন টিএনটির বিস্ফোরণ ক্ষমতার সমান। পাঁচ বর্গমাইল এলাকা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিল এটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে হিরোশিমাকে ঘোষণা করা হয় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শান্তির শহর</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। নির্মিত হয় শান্তি স্মৃতি পার্ক। প্রতিবছরই শোক আর বেদনায় দিনটিকে স্মরণ করে পুরো বিশ্ব, চলে যুদ্ধবিরোধী প্রচার।</span></span></span></span></p>