<p>কোটি কোটি টাকা ঘুষের মাধ্যমে টেন্ডার বাগিয়ে শত শত কোটি টাকা কামিয়েছেন যুবলীগ নেতা পরিচয়দানকারী জি কে শামীম। ঢাকায় অঢেল সম্পদসহ বিদেশেও রয়েছে তাঁর বিপুল অর্থ। এই টেন্ডার মাফিয়ার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে দায়ের হওয়া মামলায় অভিযোগের প্রমাণ মিললে তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে। শুধু তিনি নন, চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া প্রত্যেকেরই হতে পারে একই পরিণতি। সিআইডি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।</p> <p>যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনু ও তাঁর ভাই একই থানার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়া এবং অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা হয়েছে। মামলাগুলো এরই মধ্যে সিআইডিতে স্থানান্তরিত হয়েছে। আসামিদের মধ্যে জি কে শামীমকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।</p> <p>জানা গেছে, সিআইডি হেফাজতের প্রথম দিনে গতকাল মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদে জি কে শামীম তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ নিয়ে নানা তথ্য জানিয়েছেন। কোথায় কয়টি বাড়ি ও গাড়ি, বিদেশের ব্যাংকে জমানো অর্থের পরিমাণ, এমনকি কার মাধ্যমে কোন কোন সন্ত্রাসীর কাছে বিদেশে টাকা পাঠিয়েছেন সে তথ্যও দিচ্ছেন। সেসব যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।</p> <p>সিআইডির ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মানি লন্ডারিং অভিযোগের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট অপরাধীর যাবতীয় ব্যাংক ব্যালান্স, বাড়ি-গাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান—সবই সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হবে। ফলে কারাগার থেকে বের হতে পারলেও তাদের সহায়-সম্বল বলতে কিছু থাকবে না। মানুষ ক্রাইম করে টাকার জন্য। আর অভিযোগের প্রমাণ মিললে জড়িত ব্যক্তির স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এতে যে অর্থ তিনি কামিয়েছেন এবং সম্পদ করেছেন, তা ভোগ করার সুযোগ আর থাকে না। অবৈধভাবে অর্থ কামানোকে নিরুৎসাহ করতে এ ধরনের কঠোর আইন করা হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থ বিদেশের ব্যাংকে রাখলেও দুই দেশের আদালতের অনুমতিক্রমে তা ফেরত এনে বাজেয়াপ্ত করার সুযোগ রয়েছে।’</p> <p>চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে রাজধানীর গুলশান, সূত্রাপুর, ওয়ারী ও গেণ্ডারিয়া থানায় মানি লন্ডারিং আইনে সাতটি মামলা দায়ের করেছে র‌্যাব। সিআইডিতে স্থানান্তরিত হওয়া এসব মামলার আসামি হলেন গ্রেপ্তারকৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, সেলিম প্রধান, এনামুল হক এনু, রুপন ভূঁইয়া, হারুনুর রশীদ ও জি কে শামীমের সাত দেহরক্ষী। তাঁদের মধ্যে এনু, রুপন ও এনুর বন্ধু হারুনুর রশীদ ছাড়া বাকিরা র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। মানি লন্ডারিং আইনে দায়ের করা সাতটি মামলা তদন্তের জন্য সাতটি বিশেষ টিম করে দেওয়া হয়েছে। তারা তদন্তের পাশাপাশি পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে।</p> <p>বর্তমানে খালেদকে হেফাজতে নিয়ে র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এরপর তাঁকে সিআইডি হেফাজতে নেবে। আর জি কে শামীমের সাত দেহরক্ষীকে হেফাজত শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। কারাবন্দি সেলিম প্রধানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিআইডি।</p> <p> </p>