দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক ৬২টি আসনে বিজয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সংসদে ভূমিকা কী হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ নেতারা দলীয় পদ-পদবি হারাতে চান না। এ কারণে তাঁরা সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি নির্দেশনা দিলে বেশির ভাগ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগে যোগ দেবেন।
স্বতন্ত্র এমপিরা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়
নিজস্ব প্রতিবেদক

সংরক্ষিত নারী আসনের তফসিলের জন্য জাতীয় সংসদের চিঠির অপেক্ষায় রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু স্বতন্ত্রদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়ায় ইসির পাঠানো চিঠির জবাব দিতে পারেনি সংসদ সচিবালয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে বিজয়ী হলেও দ্বাদশ সংসদেও বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকছে, এটা অনেকটা নিশ্চিত।
জানা গেছে, একই কারণে দলের পদ-পদবি না থাকলেও সরকারের সঙ্গে থাকতে চান গাইবান্ধা-১ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ নাহিদ নিগার। জাপার সঙ্গে সমঝোতার কারণে ওই আসনের নৌকার প্রার্থী আফরোজা বারী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করায় তাঁর মেয়ে নাহিদ নিগার স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। আফরোজা বারী সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর পিরোজপুর-৩ আসনে জয়ী শামীম শাহনেওয়াজেরও আওয়ামী লীগে পদ নেই। তাঁর ভাই উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আশরাফুর রহমান মনোনয়ন পেয়েছিলেন। জাপাকে আসন ছাড়ায় নৌকা হারান। শামীম শাহনেওয়াজ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন নীলফামারী-৪ আসনে জেলা জাপার সহসভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার হওয়া সিদ্দিকুল আলম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে জয়ী হয়েছেন নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এ কে একরামুজ্জামান। এ ছাড়া সিলেট-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছেন ফুলতলীর হুজুরের ছেলে ও অনিবন্ধিত দল আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মোহাম্মদ হুছামউদ্দিন চৌধুরী। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করলেও সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, স্বতন্ত্র এমপিদের স্বতন্ত্র থাকাই ভালো।
বরগুনা-১ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার টুকু কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বতন্ত্র হিসেবে জয়ী প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের। কিন্তু দল থেকে এখনো কোনো সিগন্যাল পাইনি।
যেকোনোভাবেই সরকার ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে চান হবিগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী।
রাজশাহী-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক। শেখ হাসিনা আমার নেত্রী। তাই দলের সিদ্ধান্তের ওপর আমার সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে।’
সরকারে থাকতে আগ্রহী বরিশাল-৪ আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে সংসদে কাজ করব।
কুষ্টিয়া-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আরেফিন বলেন, ‘স্বতন্ত্র এমপিদের নিয়ে জোট গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে আমরা আওয়ামী লীগের বাইরে নই।’ সরকারে থাকতে চান ময়মনসিংহ-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান সুমন।
রংপুর-৫ আসনে জয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য জাকির হোসেন সরকার বলেন, দীর্ঘ ৩৭ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগে থাকতে চাই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী ১৬ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য দশম সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা হাজি সেলিমের নেতৃত্বে জোট করেন। তাঁরা আওয়ামী লীগের পদে থাকলেও দলটির সংসদীয় দলে যোগ দিতে পারেননি। যদিও পরবর্তী নির্বাচনী দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এবারও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের জোট করে বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা বেশি। সে ক্ষেত্রে জোটবদ্ধ হয়ে তাঁরা সংরক্ষিত নারী আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন।
সংরক্ষিত নারী নির্বাচনের বিষয়ে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের চিঠির অপেক্ষায় আছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির বৈঠকে সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করতে হবে। সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা এই নির্বাচনের ভোটার। যদিও সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচনে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, কোন দল কতটি আসন পাবে, সে বিষয়ে জানানোর জন্য জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। চিঠির জবাব এলে সংসদের সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হবে। এটার সময় আছে, আইন অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে এই নির্বাচন করতে হবে। আশা করছি, এই সপ্তাহে অথবা আগামী সপ্তাহে সংসদ সচিবালয়ের চিঠির জবাব পাব।
স্বতন্ত্র এমপিদের অবস্থান জানতে চেয়ে ইসির চিঠি
স্বতন্ত্র এমপিরা রাজনৈতিক দলে বা জোটে যোগদান করতে চাইলে তা আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে। এ বিষয়ে মতামত জানানোর জন্য সংসদ সদস্যদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল মঙ্গলবার ইসি সচিব জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে দল ও জোট গঠনের বিষয়টি ইসিকে জানাতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কোনো নির্দলীয় সংসদ সদস্য আপনার দলে বা জোটে যোগদান করেছেন কি না, অথবা সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে অন্য কোনো দলের সঙ্গে আপনার দলে জোট গঠিত হয়েছে কি না; তা ৩১ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা-৪ আসনের স্বতন্ত্র এমপি আওলাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমি ১৯৭৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। একটা প্রেক্ষাপটের কারণে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছি। এখন সংসদে আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে যোগদান করব।’

বিশেষ লেখা
বাংলাদেশ কি সত্যিই খাদের কিনারে?
- অদিতি করিম

বিলেতের প্রভাবশালী সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ানের’ সাংবাদিক হান্না এলিস পিটারসেন সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাত্ হয়। এই সব কিছু মিলিয়ে সম্প্রতি তিনি ‘দ্য গার্ডিয়ানে’ একটি দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এই প্রতিবেদনটি দেশে-বিদেশে সাড়া ফেলেছে।
তাঁর এই সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদনটি নিয়ে এ দেশের রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো বটেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক আলোচনায়ও হান্না এলিস পিটারসেনের এই উক্তিটি নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। অনেক রাজনীতিবিদ তাঁর উক্তিকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের সংকট মোকাবেলার জন্য আশু এবং জরুরি পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছেন।
এ কথা ঠিক যে, ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর নতুন সরকার খুব একটা স্বস্তিতে নেই। এই সরকারের মধুচন্দ্রিমা সময় পার হয়েছে। এখন এই সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশার চাপ দিন দিন বাড়ছে। প্রত্যাশা পূরণ না হলে হতাশাও তৈরি হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর এই সরকার সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে তা হলো কথায় কথায় রাজপথ দখল এবং বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সড়ক অবরোধ।
নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর একটি ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে পুলিশ প্রশাসনকে নতুন করে গড়ে তুলছে। এই প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। এই গণ-অভ্যুত্থান সামগ্রিক ভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা পুলিশের মনোবলকে দুর্বল করে ফেলেছে। পুলিশের বেশ কিছু সদস্য এই গণ-অভ্যুত্থানে মারা গেছেন। এটিও গোটা বাহিনীর মনোবল ভেঙে যাওয়ার একটি বড় কারণ। ফলে ৫ আগস্টের পর তাঁরা আগের মতো উদ্যম এবং দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছেন না। তাঁদের মধ্যে একটা ঢিলেঢালা ভাব। এক ধরনের আতঙ্ক এবং হতাশাগ্রস্ত মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে। এ কারণে বিভিন্ন রাস্তায় কথায় কথায় অবরোধ এবং অবস্থান কর্মসূচিগুলোতে পুলিশ বাহিনী নিরাপদ দূরত্বে থাকছে। গা বাঁচিয়ে তামাশা দেখছে। পুলিশের এই হতাশাজনক অবস্থা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার প্রধান কারণ।
আমরা জানি, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন থানা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র লুট হয়েছিল। এসব অস্ত্র এখনো সন্ত্রাসীদের দখলে। অস্ত্র উদ্ধারের নামে যে অভিযান পরিচালিত হয়েছিল, সেই অভিযান মোটেও সফল হয়নি। ফলে সন্ত্রাসীদের হাতে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। পাশাপাশি ৫ আগস্টের পর বেশ কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী কারাগার থেকে মুক্তি পায়। তারা নতুন করে তাদের নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। ফলে সারা দেশে চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি ইত্যাদি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে বিচার নিজের হাতে তুলে নেওয়া এবং মব জাস্টিসের নামে এক ধরনের মতলববাজি সারা দেশে রীতিমতো আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। সুযোগসন্ধানী দুর্বৃত্তরা এই সুযোগে যে যার মতো দখল বাণিজ্যে শামিল হয়ে প্রতিপক্ষের জমিজমা, ঘাট, হাট-বাজার ইত্যাদি সব দখল করে নিচ্ছে। দখল-পাল্টাদখল নিয়েও চলছে হানাহানি-খুনাখুনি। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সারা দেশে নির্বিচারে নারী নিপীড়নের ঘটনা। বিশেষ করে মাগুরার আছিয়া গোটা বাংলাদেশকে কাঁদিয়ে বিদায় নিয়েছে। এ রকম একটা নাজুক পরিস্থিতিতে শুধু সেনাবাহিনীর উপস্থিতির কারণে এখনো মানুষের মধ্যে কিছুটা আশা আছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একই রকম অবস্থান একটা পর্যায়ে মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তোলে, হতাশ করে তোলে এবং মানুষ বিরক্ত হতে শুরু করছে। যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে কিছু দর্বৃত্ত মব করে হামলা চালাচ্ছে, লুটপাট করছে, আগুন লাগিয়ে বিচার নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে, রাস্তায় কাউকে প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে পেটানো হচ্ছে ইত্যাদি ঘটনাগুলো একটা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশে। এসব উদ্বেগজনক।
এ রকম একটি নাজুক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণেই দেশের অর্থনীতিতেও সৃষ্টি হয়েছে স্থবিরতা। ব্যবসায়ীরা কেউ নতুন বিনিয়োগ করছেন না। সাম্প্রতিক প্রধান উপদেষ্টা অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য একজন বিশেষ সহকারী নিয়োগ দিয়েছেন। ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী একজন দক্ষ অর্থনীতিবিদ। দেশে-বিদেশে তিনি বিভিন্ন উদ্ভাবনী অর্থনৈতিক চিন্তার জন্য আলোচিত। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই একটি মতবিনিময়সভায় তিনি বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কে ব্যবসা করতে চাইবে? এই সরকারের মেয়াদ সম্পর্কে মানুষের সুস্পষ্ট ধারণা নেই। এই সরকার কত দিন টিকবে, সেটা মানুষ জানে না।’
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এই সরকারের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য কী, সে সম্পর্কে একটা অস্পষ্টতা থাকার কারণে বিদেশি বিনিয়োগ যেমন কমছে, তেমনি বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তারাও বিনিয়োগে আগ্রহী নন। আমরা জানি, ৫ আগস্টের পর থেকে বহু শিল্প-কারখানা আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে দর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। অনেকে নিরুপায় হয়ে শিল্প-কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে লাখ লাখ শ্রমিক এখন বেকার। বেতন-ভাতার দাবিতে প্রতিদিনই বিভিন্ন সড়ক অবরোধ হচ্ছে। সাধারণ চোখে আমরা মনে করতে পারি, বাংলাদেশ একটা নাজুক সময় পার করছে। দেশটির সার্বিক অবস্থা ভালো নয়।
কিন্তু আমরা যদি বিশ্বের যেকোনো দেশের বিপ্লবের তাৎপর্য অনুভব করি এবং বিপ্লবের পরবর্তী পরিস্থিতিগুলোকে বিচার-বিশ্লেষণ করতে চাই, তাহলে দেখব, বিপ্লবোত্তর সমাজে এই ঘটনাগুলো স্বাভাবিক ঘটনা। বিশেষ করে বিপ্লবের ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে নতুন সভ্যতার সূচনা হয়। নতুন দিন বিনির্মাণের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হয়। বাংলাদেশ এখন সেই নতুন বিনির্মাণের প্রাক-স্তরে রয়েছে। বাংলাদেশের গত ১৫ বছরে যে বিধিব্যবস্থা এবং আইন-প্রশাসন ইত্যাদি ছিল, সবই ছিল ভঙ্গুর, দলীয়করণে দুষ্ট। একটি নির্দিষ্ট দলকে ক্ষমতায় রাখার অভিপ্রায়ে আবর্তিত। এই অবস্থা থেকে একটি জনগণের সরকার এবং জনগণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা অনেক কঠিন কাজ। ৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ আসলে সেই কঠিন সময়টা পার করেছে। এ কারণেই হয়তো ঢাকার রাস্তায় ঘুরতে গিয়ে গার্ডিয়ানের সাংবাদিক হান্না এলিস পিটারসেনের মনে হয়েছে, বাংলাদেশ খাদের কিনারে। সে জন্যই জনগণের মধ্যে সাময়িক অস্থিরতা, হতাশা। কিন্তু এই অস্থিরতা ও হতাশা বেশি দিন থাকবে না। অতীত ইতিহাস তাই বলে। হান্না এলিস পিটারসেন যদি বাংলাদেশ সম্পর্কে আরো একটু গভীরভাবে অনুসন্ধান করতেন, এ দেশের মানুষের মনমানসিকতা, চেতনা, ঐতিহ্য এবং আকাঙ্ক্ষাগুলোকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতেন, তাহলে কিন্তু তিনি বাংলাদেশকে খাদের কিনারে দেখতেন না। তখন তিনি বাংলাদেশকে দেখতেন একটি নতুন অভিযাত্রার বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে। তখন তিনি তাঁর লেখায় কবি সুকান্তকে উদ্ধৃত করতেন।
সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী
অবাক তাকিয়ে রয়:
জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার
তবু মাথা নোয়াবার নয়।
বাংলাদেশ যেন সেই রকমই একটি ঐতিহ্যকে ধারণ করে। যে দেশটি জ্বলে-পুড়ে ছারখার হওয়ার পরও আবার মাথা তুলে দাঁড়ায়। আবার ঘুরে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে অফুরন্ত প্রাণশক্তি। স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটার অফুরন্ত সাহস। এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা রাজনৈতিক দুর্যোগ যাই হোক না কেন, বাংলাদেশের মানুষ লড়াই করে, ঘুরে দাঁড়ায়, হারে না, বাংলাদেশের মানুষ দমে না। নতুন স্বপ্নের জাল বোনে। এটাই হলো বাংলাদেশের ইতিহাস।
মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর আক্রমণ, হত্যা, লুণ্ঠন এবং অপারেশন সার্চলাইটের পরও বাংলাদেশ হারেনি। তখনো বাংলাদেশ খাদের কিনারায় চলে গিয়েছিল। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের অকুতোভয় বীর জনগণ সেই খাদের কিনারা থেকে এক অভূতপূর্ব মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশকে মুক্ত করেছে। আমরা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ।
অর্থনীতিবিদরা বলতেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভারাক্রান্ত বাংলাদেশ কখনো উন্নতি করতে পারবে না। বাংলাদেশ হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের একটি মডেল। যুক্তরাষ্ট্রের দুজন অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশ সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন, বাংলাদেশ যদি ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত হতে পারে, তাহলে সেটিই হবে বিশ্বের একটি মডেল। বিশ্বে তাহলে আর কোনো দেশেই ক্ষুধা-দারিদ্র্য থাকবে না। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও শ্রম তাদের ভবিষ্যদ্বাণী ভুল প্রমাণ করেছে। স্বাধীনতার পর কেউ চিন্তা করেনি, বাংলাদেশ ক্ষুধা-দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। কিন্তু বাংলাদেশ সারা বিশ্বকে যেন অবাক করে দেওয়ার জন্যই জন্ম হয়েছে। আমরা দেখি, ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ পেরিয়ে বাংলাদেশ একটি সুখী-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের পথে অভিযাত্রা করেছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হয়েছে। এই দেশের ১৮ কোটি মানুষ অফুরন্ত প্রাণশক্তি দিয়ে খাদ্য উৎপাদন যেমন বাড়িয়েছে, তেমনি শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থনীতিকেও নিয়ে গেছে একটি সম্ভাবনার দুয়ারে। যার ফলে বাংলাদেশ সম্পর্কে স্বাধীনতার পর যে মূল্যায়ন করা হতো, সেই মূল্যায়ন ৫৩ বছর পর এসে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের সাফল্য। বাংলাদেশ সম্পর্কে তাই কোনো পূর্ব অনুমান ঠিক নয়। এ দেশের মানুষ আবেগপ্রবণ, ভালোবাসার আলিঙ্গনে আপনার জন্য সব কিছু উজাড় করে দেবে। এ দেশের মানুষ হাসতে হাসতে মরতে পারে। ধ্বংসস্তূপের অন্ধকারে নতুন স্বপ্নের সকাল গড়ে। বাংলাদেশ নিয়ে হতাশার মুহূর্তে এ দেশের জনগণ নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করে। আর এ কারণেই বাংলাদেশ নিয়ে আজ যে হতাশা বা দুর্ভাবনা, সেটি হয়তো শেষ বিচারে সঠিক হবে না। কারণ এ দেশের মানুষ পরাজয় মানে না, হার মানে না। একাত্তরে যেমন বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে, তেমনি প্রমাণ করেছে চব্বিশে। বাংলাদেশ খাদের কিনারে নয়, বাংলাদেশ এখন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের দুর্গম পথে। তবে এ দেশের জনগণের জয় অনিবার্য।
লেখক : নাট্যকার ও কলাম লেখক
auditekarim@gmail.com

সস্ত্রীক বিদেশ যেতে বাধা নেই ওরিয়ন চেয়ারম্যানের
নিজস্ব প্রতিবেদক

ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান ওবায়দুল করিম ও তাঁর স্ত্রী মিসেস আরজুদা করিমের বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসা ও ওমরাহ হজ পালনের জন্য বিদেশ যেতে অনুমতি চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন ওবায়দুল করিম, তাঁর স্ত্রী আরজুদা করিম ও তাঁর মেয়ে জেরীন করিম। শুনানি শেষে আদালত ওবায়দুল করিম ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশ যাওয়ার অনুমতির আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল করিমসহ পরিবারের সদস্যদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন আদালত। আবেদনে বলা হয়, ওরিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গোপন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

ডা. শফিকুর রহমান
শহীদ সেলিম ও মন্টু দাসের পরিবারের পাশে জামায়াত
ঝালকাঠি ও বরগুনা প্রতিনিধি

রাজধানীতে জুলাইয়ে শহীদ সেলিম তালুকদারের শ্বশুরবাড়ি ঝালকাঠি শহরের কবিরাজবাড়ি এলাকায় গিয়ে তাঁর স্ত্রী-সন্তানের খোঁজখবর নিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল সোমবার দুপুরে ওই পরিবারকে সান্ত্বনা জানিয়ে শিশুটির দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এর আগে গতকাল সকালে বরগুনায় নির্যাতিত শিশু এবং তার বাবা নিহত মন্টু চন্দ্র দাসের বাড়িতে গিয়ে অসহায় পরিবারটির পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জামায়াতের আমির।
গতকাল দুপুরে হেলিকপ্টারে ঝালকাঠি শহরের পৌর মিনি স্টেডিয়ামে নামেন তিনি।
দুপুরে ঝালকাঠি পৌর মিনি স্টেডিয়ামের সামনে এক পথসভায় জামায়াতের আমির বলেন, ‘শহীদরা এ জাতির সম্পদ।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটি কল্যাণকর এবং মানবিক রাষ্ট্র গড়তে চাই। কোরআনের ভিত্তিতে একটি মানবিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি আমরা।
জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে পথসভায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বক্তব্য দেন ঝালকাঠি-২ আসনে জামায়াতের প্রার্থী শেখ নেয়ামুল করিম, বরিশাল জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার প্রমুখ।
এর আগে, সকাল ১০টায় জামায়াতের আমির ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে বরগুনা সার্কিট হাউস মাঠে পৌঁছান। এরপর শহরের কালীবাড়ি এলাকায় মন্টু দাসের বাড়িতে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারকে উপহারসামগ্রী দেন। এরপর সকাল এগারোটায় বরগুনা শহীদ মিনারে এক পথসভায় অংশ নেন তিনি।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহ আল-কোরআনে বলেছেন, যারা ধর্ষণ করে, তারা পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট। আমরা সামাজিকভাবে মজলুমের পাশে দাঁড়ালে, জুলুমকারী ভয় পাবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাড. মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, বরগুনা জেলা আমির অধ্যাপক মহিবুল্লাহ হারুন প্রমুখ।

এনডিটিভিকে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র
- গ্যাবার্ডের মন্তব্য সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে করা হয়নি : অন্তর্বর্তী সরকার
কালের কণ্ঠ ডেস্ক

বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশটির গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বজুড়ে ‘ইসলামী সন্ত্রাসবাদকে’ হারাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গতকাল সোমবার সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়েছে।
এনডিটিভি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, ‘হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন, হত্যা ও নিপীড়ন যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তাঁর প্রশাসনের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
এদিকে তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সরকার স্পষ্ট করে বলেছে, ‘তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যে আমরা গভীর উদ্বিগ্ন হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তিনি তাঁর মন্তব্যে অভিযোগ করেছেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও হত্যা চলছে’ এবং ‘বাংলাদেশের আদর্শ ও লক্ষ্যে ইসলামী সন্ত্রাসবাদীদের ‘মূল’ নিহিত, যারা বাংলাদেশে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। তাঁর এই বিবৃতি যেমন বিভ্রান্তিকর, তেমনি বাংলাদেশের সুনামের প্রতি অবিচার।
তুলসী গ্যাবার্ড বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন মন্ত্রিসভা এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে এটি আমাদের উদ্বেগের কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে রয়ে গেছে।’
এ সময় তিনি বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থা ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থানের কথা উল্লেখ করেন।
সাক্ষাৎকারে তুলসী গ্যাবার্ড ‘ইসলামী খিলাফত’-এর আদর্শের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বজুড়ে চরমপন্থী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো এমন একটি ফলাফল অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে। ইসলামী সন্ত্রাসীদের হুমকি এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈশ্বিক প্রচেষ্টা একই আদর্শ ও লক্ষ্যে নিবদ্ধ, যা হলো ইসলামী খিলাফতের মাধ্যমে শাসন বা শাসন করা।
তিনি আরো বলেন, এটি স্পষ্টতই অন্য যেকোনো ধর্মের মানুষকে প্রভাবিত করে, বিশেষ করে যারা তাদের গ্রহণযোগ্য ধর্মের বাইরে। তারা এটিকে সন্ত্রাস ও সহিংসতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চায়। সূত্র : এনডিটিভি