রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

রাশিয়াকে প্রকল্পের ব্যয় টাকায় পরিশোধ

সজীব আহমেদ
সজীব আহমেদ
শেয়ার
রাশিয়াকে প্রকল্পের ব্যয় টাকায় পরিশোধ

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মীয়মাণ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের চুক্তিমূল্যের একাংশ দেড় কোটি ডলার মার্কিন ডলারের পরিবর্তে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকায় পরিশোধ করেছে সরকার। সম্প্রতি রাষ্ট্র পরিচালিত সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে রাশিয়ার ঠিকাদারকে ওই অর্থ পরিশোধ করা হয়।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ডলার সংকটের কারণে চুক্তিমূল্যের অগ্রিম অর্থ নিয়মিত পরিশোধ করা যাচ্ছিল না। বিল নিয়মিত পরিশোধের ক্ষেত্রে ডলারের বিকল্প হিসেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট বাংলাদেশি মুদ্রা নিতে রাজি হওয়ায় তা টাকায় পরিশোধ করা হয়।

রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মিত হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক জ্বালানি কেন্দ্র রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৭৮.১৪ শতাংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরমাণু শক্তি কমিশন। প্রকল্পে বছরে বরাদ্দ করা ব্যয়ের ১০ শতাংশ দিতে হয় বাংলাদেশ সরকারকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাছান কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রকল্পের মোট চুক্তিমূল্যের অগ্রিমের ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বাংলাদেশি টাকা এরই মধ্যে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ করা হয়েছে। এই টাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় সাব-কন্ট্রাক্টের কাজে ব্যয় করবে।

রূপপুর প্রকল্পের আওতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রের এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু সংস্থা রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট। প্রথম ইউনিটের কাজ শেষ পর্যায়ে।

চলতি বছরের শেষ দিকেই এর পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হতে পারে। আর আগামী বছর বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তুতি চলছে।

গত জুন মাসের শুরুতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) বৈঠকে ডলারের পরিবর্তে দেশীয় মুদ্রায় চুক্তির অর্থ পরিশোধের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। পিআইসির বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা গেছে, চুক্তিমূল্যের ১০ শতাংশ অগ্রিম পরিশোধের বিষয়ে জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটির (জেসিসি) সভায় ডলারের পরিবর্তে আংশিক অর্থ টাকায় পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এটমস্ট্রয়এক্সপোর্টের সঙ্গে সম্পূরক চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে।

স্বাক্ষরিত চুক্তির ধারা ১ অনুসারে এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট ২০২৩ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকের অগ্রিমের ছয় কোটি ৪৫ লাখ ১৫ হাজার ডলার থেকে দেড় কোটি ডলার টাকায় পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পিআইসির সভার কার্যপত্রে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকাজের চুক্তিমূল্য ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চুক্তিমূল্যের ৯০ শতাংশ (১১.৩৮ বিলিয়ন ডলার) রাশিয়ার ঋণ সহায়তা এবং বাকি ১০ শতাংশ (১.২৬৫ বিলিয়ন ডলার) বাংলাদেশ সরকার অগ্রিম হিসেবে দেবে। চুক্তিতে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বছরে চারটি হিসাবে মোট ৩২ কিস্তিতে ১২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার পরিশোধের কথা রয়েছে। চুক্তির শর্তানুসারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ভেনোশকোনমন ব্যাংকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২২ কিস্তিতে ১০৭ কোটি ডলারের কিছু বেশি পরিশোধ করা হয়েছে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধাবস্থার কারণে রুশ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ব্যাংকের ওপর পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আসে। এ কারণে ১০ শতাংশ অগ্রিম পরিশোধ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় প্রকল্পের কাজ চালু রাখতে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সভার নির্দেশনা অনুযায়ী রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেএসসি এটমস্টয়এক্সপোর্টের নামে সোনালী ব্যাংকে সে বছরের ২৫ মে থেকে একটি এফসি (ফরেন কারেন্সি) হিসাব পরিচালনা করা হচ্ছে। ওই ব্যাংক হিসাবে ২০২২ সালের নির্ধারিত সোয়া আট কোটি ডলারের মতো পরিশোধ করা হয়। ২০২৩ সালের সারা বছর এবং ২০২৪ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক মিলিয়ে ১০ কোটি ডলারের কিছু বেশি অর্থ এটমস্ট্রয়এক্সপোর্টকে পরিশোধের জন্য সোনালী ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু সেই অর্থ ডলারে পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে সপ্তম জেসিসি সভায় আংশিক অর্থ বাংলাদেশি টাকায় পরিশোধের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

পাকিস্তান আমল থেকেই পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কথা বলাবলি হলেও এটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয় অনেক পরে, স্বাধীন বাংলাদেশে। ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম পর্যায়ের কাজ উদ্বোধন করা হয়। তবে মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। এই প্রকল্পে রাশিয়ার উদ্ভাবিত থ্রিজি (+) ভিভিইআর ১২০০ রিঅ্যাক্টর স্থাপন করা হয়েছে। পরিকল্পিত দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশেই নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বগুড়ার দইয়ের সুনাম দেশজুড়ে

শেয়ার
বগুড়ার দইয়ের সুনাম দেশজুড়ে
বগুড়ার দইয়ের সুনাম দেশজুড়ে। সেই দই রাখার মৃৎপাত্র তৈরি করে রোদে শুকানো হচ্ছে। জেলার শাজাহানপুর উপজেলার করতোয়া নদীর তীরঘেঁষা আড়িয়া গ্রাম থেকে তোলা। ছবি : ঠাণ্ডা আজাদ
মন্তব্য
ডিএমপি

শাহবাগ, সচিবালয় ও যমুনার সামনে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
শাহবাগ, সচিবালয় ও যমুনার সামনে সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ

রাজধানীর শাহবাগসহ বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ও এর আশপাশে কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিএমপি অর্ডিন্যান্সের ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে ১৩ মার্চ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল, শোভাযাত্রা করা যাবে না।

বিজ্ঞপ্তিতে যমুনার পার্শ্ববর্তী এলাকা হিসেবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল মোড়, শাহবাগ মোড়, কাকরাইল মোড়, মিন্টো রোডের কথা উল্লেখ রয়েছে।

এর আগে গত বছরের ২৫ আগস্ট এই দুটি জায়গায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছিল ডিএমপি।

গত মঙ্গলবার বিকেলে শাহবাগে ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় নারী-পুরুষের একটি বিক্ষোভকারী দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল মোড়ে বাধা প্রদান করে। এ সময় পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। নিকটবর্তী স্থানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে তারাও ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পুলিশের লাঠিচার্যে অন্তত ১২ জন শিক্ষার্থী এবং রমনা জোনের এসিসহ পাঁচজন পুলিশ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এক পর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়।

হামলায় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা ডিভিশনের উপপুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম, দুই নারী পুলিশ সদস্য এবং তিনজন পুরুষ কনস্টেবল আহত হন। পরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের মাধ্যমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

 

মন্তব্য

জামায়াত আমিরের সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জামায়াত আমিরের সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি. খোজিন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এবং রাশিয়া দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর অ্যানটন চেরনোভ।

বৈঠক শেষে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, এটাই প্রথমবার যেকোনো রুশ রাষ্ট্রদূত আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন।

আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগ ছিল ও আছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রথমবার।

তিনি আরো বলেন, বৈঠকে রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক, অর্থায়ন এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী কেমন বাংলাদেশ চায় এবং আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

দুটি বিষয়ে আমরা একমত হয়েছিপ্রথমত, বাংলাদেশে রাশিয়ার আর্থিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ বাড়বে। দ্বিতীয়ত, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে।

এ সময় একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে রাশিয়ার সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে কি নাএমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

 

উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যের নিন্দা

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সমপ্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল এমন মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, মাহফুজ আলম অসত্য ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি প্রতিবেশী দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন।

তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে গঠিত তদন্ত কমিশন জামায়াতের যুদ্ধাপরাধে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়নি এবং শেখ মুজিব সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আদালতের রায়গুলো রাজনৈতিক প্রভাবিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ছিল।

তিনি মাহফুজ আলমের উদ্দেশে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে রাজনৈতিক দল নিয়ে মন্তব্য করা তাঁর উচিত নয়। জামায়াত আহলে সুন্নত আল জামায়াতের অনুসারী এবং দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে।

মাহফুজ আলমকে তাঁর মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশের আহ্বান এবং ভবিষ্যতে জামায়াত সম্পর্কে ভত্তিহীন বক্তব্য না দেওয়ার অনুরোধ করা হয় বিবৃতিতে।

 

 

মন্তব্য
মির্জা ফখরুল

ধর্ষণের প্রকাশ্য শাস্তির আইন করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ধর্ষণের প্রকাশ্য শাস্তির আইন করতে হবে
মির্জা ফখরুল

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ এবং গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা বিগত সরকারের অনৈতিক শাসনেরই ধারাবাহিকতা। তাই এখন এই প্রথা ভেঙে রাষ্ট্রকে একটি নৈতিক জায়গায় আনতে হবে। একটি বৈধ সংসদে ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য শাস্তির আইন পাস করতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি মাগুরায় একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, যেখানে আট বছরের একটি শিশু, আছিয়াকে ধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনা সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সার্বক্ষণিক নির্যাতিতা আছিয়ার শারীরিক ও চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন।

আইনি সহায়তার জন্য আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী সরকারের একতরফা নির্বাচনের সময় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার কারণে বিএনপির সমর্থক এক গৃহবধূকে তাঁর বাড়িতে ঢুকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সন্তানদের সামনে ধর্ষণ করে। নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা বিগত সরকারের অনৈতিক শাসনেরই ধারাবাহিকতা।

তিনি বলেন, দেশজুড়ে ভয়াবহভাবে ধর্ষণ বেড়েছে।

তবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিতভাবে এমন ঘটনা ঘটছে, যা অনেকেই ভয়ে কিংবা মান-সম্মানের কারণে প্রকাশ করেন না। বিভিন্ন বয়সী নারীরা আক্রান্ত হচ্ছে, বাদ পড়ছে না শিশুও। প্রশাসনের কর্তৃত্ব না থাকায় ধর্ষণের ঘটনা ক্রমে বেড়েই চলেছে। এতে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, এসব অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। দেশে এখন যা চলছে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।

বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে আছিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। একই সঙ্গে শোকবিহ্বল পরিবার, নিকটজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

 

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ