জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার জি. খোজিন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এবং রাশিয়া দূতাবাসের পলিটিক্যাল কাউন্সিলর অ্যানটন চেরনোভ।
বৈঠক শেষে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘এটাই প্রথমবার যেকোনো রুশ রাষ্ট্রদূত আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন।
আমাদের সঙ্গে রাশিয়ার যোগাযোগ ছিল ও আছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রথমবার।’
তিনি আরো বলেন, ‘বৈঠকে রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্ক, অর্থায়ন এবং দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী কেমন বাংলাদেশ চায় এবং আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
দুটি বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি—প্রথমত, বাংলাদেশে রাশিয়ার আর্থিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ বাড়বে। দ্বিতীয়ত, জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে।’
এ সময় একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে রাশিয়ার সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে এসেছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বক্তব্যের নিন্দা
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সমপ্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ‘জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল’ এমন মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, মাহফুজ আলম অসত্য ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি প্রতিবেশী দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন।
তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে গঠিত তদন্ত কমিশন জামায়াতের যুদ্ধাপরাধে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়নি এবং শেখ মুজিব সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে আদালতের রায়গুলো রাজনৈতিক প্রভাবিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য ছিল।
তিনি মাহফুজ আলমের উদ্দেশে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে রাজনৈতিক দল নিয়ে মন্তব্য করা তাঁর উচিত নয়। জামায়াত আহলে সুন্নত আল জামায়াতের অনুসারী এবং দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে।
মাহফুজ আলমকে তাঁর মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশের আহ্বান এবং ভবিষ্যতে জামায়াত সম্পর্কে ভত্তিহীন বক্তব্য না দেওয়ার অনুরোধ করা হয় বিবৃতিতে।