<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বেশ কয়েক দিন ধরে দেশজুড়ে বেড়েই চলেছে লোডশেডিং। এই গরম এবং ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। রাজধানীতে তেমন লোডশেডিং না হলেও রাজধানীর বাইরের জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং পরিস্থিতি অসহনীয়। বর্তমানে গ্রামাঞ্চলে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"><img alt="লোডশেডিং বাড়ছেই অতিষ্ঠ জনজীবন" height="200" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/09.September/11-09-2024/121/767990.jpg" style="float:left" width="360" />বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, সাড়ে তিন মাস ধরে সামিট গ্রুপের একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় দৈনিক এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের মতো গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। বকেয়া পরিশোধ না করায় ভারতের আদানি গ্রুপও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। আবার কয়লাসংকটে মাতারবাড়ী এবং এস আলমের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদন কমে গেছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনও। বকেয়ার কারণে বেসরকারি খাতের তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও সর্বোচ্চ চাহিদায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এসব কারণে দেশে বিদ্যুতের বড় ঘাটতি তৈরি হয়ে লোডশেডিং বেড়েছে বলে জানান তাঁরা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিপিডিবির তথ্য মতে, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াটের কম। কিন্তু বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে প্রায় ২৮ হাজার মেগাওয়াট। তবে বর্তমানে দৈনিক গড়ে ১৩-১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ায় দৈনিক লোডশেডিং করতে হচ্ছে দু-তিন হাজার মেগাওয়াটের মতো। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে দেশে লোডশেডিং হয়েছে এক হাজার ৮৭৩ মেগাওয়াট। এ সময় ১৪ হাজার ৬৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ৬৮৯ মেগাওয়াট। পিজিসিবির দৈনিক প্রতিবেদনে লোডশেডিংয়ের সঠিক তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহে বড় ধরনের ঘাটতি থাকায় বর্তমানে অন্তত দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানতে চাইলে বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সামিটের এলএনজি টার্মিনালটি বন্ধের কারণে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট কমেছে। অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের এটি বড় একটি কারণ। এ ছাড়া বকেয়ার কারণে আদানি গ্রুপ তাদের সরবরাহ কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে। যদিও আমরা কিছু কিছু বকেয়া পরিশোধ করছি। আবার ২ সেপ্টেম্বর থেকে এস আলম বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে, যার কারণে ওখান থেকেও ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাচ্ছি। এ ছাড়া মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৩০০ মেগাওয়াট কম সরবরাহ হচ্ছে। এদিকে কারিগরি ত্রুটির কারণে পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ রয়েছে বড়পুকুরিয়ার। মূলত এসব কারণে বর্তমানে লোডশেডিং বেড়ে গেছে। সামিটের টার্মিনালটি সচল হলেই লোডশেডিং পরিস্থিতি অনেকটা কমে যাবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। এই প্রতিষ্ঠানের বিতরণ এলাকায় বর্তমানে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। আরইবির সদস্য দেবাশীষ চক্রবর্তী (বিতরণ ও পরিচালন) জানান, চাহিদার তুলনায় প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ কম সরবরাহ পাওয়ায় তাঁদের বিতরণ এলাকায় লোডশেডিং বেড়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পেট্রোবাংলার তথ্য মতে, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। গতকাল সরবরাহ করা হয়েছে দুই হাজার ৫৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট। ঘাটতি ছিল এক হাজার ৪২৫ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। স্বাভাবিক সময়ে দুটি টার্মিনাল থেকে এলএনজি রূপান্তরের মাধ্যমে এক হাজার ৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হতো। গতকাল একটি টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ৫৫৭ মিলিয়ন ঘনফুট। এতে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ কমে গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজধানীর বাইরে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং </span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোয় লোডশেডিং কিছুটা কম হলেও ছোট শহর ও গ্রামাঞ্চলে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। রাজধানীর বাইরে অনেক এলাকায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছয় ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছে না গ্রাহকরা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সিলেট : সিলেটে তীব্র গরমের মধ্যে সীমাহীন লোডশেডিং জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। দিনে </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এক ঘণ্টা পর পর দুই ঘণ্টা</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> করে লোডশেডিং হচ্ছে। অতিষ্ঠ নগরবাসী বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়ে বলেছে, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সিলেট বিদ্যুৈবষম্যের শিকার হচ্ছে। চাহিদার দ্বিগুণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেও সিলেটবাসীকে থাকতে হচ্ছে বিদ্যুত্হীন।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্য মতে, সিলেট বিভাগে বর্তমানে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ৭০০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে বিপিডিবির ২০৭.৮০ মেগাওয়াট এবং পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা ৪৯২.২ মেগাওয়াট। এই চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ৫২০ থেকে ৫৪০ মেগাওয়াট। ফলে বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাবে প্রতিদিন লোডশেডিং থাকছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ। এসব তথ্য কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন বিপিডিবির সিলেট কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির। এদিকে সিলেট জেলায় গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩০ মেগাওয়াট। সেখানে পাওয়া গেছে ১০০ মেগাওয়াট। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সিলেটে চাহিদার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় অথচ এই তীব্র গরমে সিলেটের মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুত্হীন করে রাখা হচ্ছে। এটি সিলেটের প্রতি অবিচার।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময়ে আন্দোলনে নামতে চাই না। কিন্তু আমাদের যদি বাধ্য করা হয়, যদি কোনো পথ না থাকে, তাহলে আমরা দাবি আদায়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হব।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জামালপুর : তীব্র গরমের মধ্যে জামালপুরে দিনে-রাতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় আমন ধান ক্ষেতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষকরা। শহরের কাচারিপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী কারিমুল ইসলাম বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দিনের বেলায় বিদ্যুৎ কিছুক্ষণ পর পর যাচ্ছে আর আসছে। তিন দিন ধরে দিনের বেলায় প্রখর রোদ উঠছে। ভাদ্র মাসের শেষ পর্যায়ে এসে দাবদাহ শুরু হয়েছে। এমন সময়ে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি আমরা।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জামালপুরের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা জানান, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাত-দিনে ১৫-১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। অনেক এলাকায় এখনো আমন ধান লাগানো শেষ হয়নি। ফলে ধানক্ষেতে পানি দরকার। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় জমিতে পানি দেওয়া যাচ্ছে না। রাতের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকায় লোকজন ঠিকমতো ঘুমাতেও পারছে না।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন কালের কণ্ঠ</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">র ইয়াহইয়া ফজল (সিলেট) ও রকিব হাসান নয়ন (জামালপুর)] </span></span></span></p>