<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঘড়িতে তখন বিকেল সাড়ে ৪টা। রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়। চারপাশেই গাড়ির তীব্র জট। এই যানজটের প্রভাব ছড়িয়ে গেছে পান্থপথ, তেজগাঁও, ফার্মগেট ও শাহবাগ পর্যন্ত। পান্থপথের প্রভাব পড়েছে গ্রিন রোডে। গ্রিন রোডের গাড়ির চাপ সায়েন্সল্যাবে মিশেছে। শাহবাগের প্রভাব পড়েছে কাঁটাবন, এলিফ্যান্ট রোডে। এভাবেই স্থবির হয়ে গেছে নিউ মার্কেট ও কলাবাগানকেন্দ্রিক মিরপুর রোড। গতকাল বুধবারের চিত্র এটি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুধু যে ঢাকার এক অংশের অবস্থা এমন তা নয়। গতকাল গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, বংশাল, কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক, বাড্ডা, রামপুরা, মহাখালী, বনানী ও উত্তরা এলাকায় থেমে থেমে দিনভর তীব্র যানজট ছিল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কয়েক দিন ধরেই রাজধানীতে যানজটের কারণে সীমাহীন জনদুর্ভোগ চলছে। আগে অফিস শুরু ও ছুটির সময় কেন্দ্র করে যানজট হতো, কিন্তু এখন রাত ১১টায়ও মূল সড়কে গাড়ির চাপ লক্ষ করা যায়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে ৩০০ ফুটের কুড়িলমুখী সড়কেও তীব্র যানজট দেখা যায়। সাধারণত এই সড়কে যানজট হয় না। আবার উল্টোদিকে উত্তরামুখী গাড়ির জটলা বনানী পর্যন্ত পৌঁছে। ওই সময় অবশ্য মহাখালীমুখী সড়কে গাড়ি কম ছিল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকার মূল সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, উল্টোপথে গাড়ি চলাচল বেড়ে যাওয়া, ঢাকা জেলার নিবন্ধিত অটোরিকশা মহানগরের ভেতর চলাচল, দিনের বেলায় পণ্যবাহী যান চলাচল, অপরিকল্পিতভাবে নানা দাবিতে বিভিন্ন সড়ক অবরোধ, সড়ক ব্যবহারকারীদের আইন না মানা, পুলিশের গুরুত্ব কমে যাওয়া এবং বদলিতে আসা নতুন কর্মকর্তাদের সব কিছু বুঝে উঠতে সময় লাগায় সড়কের বিশৃঙ্খলা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানতে চাইলে ঢাকা মহানগরের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) খন্দকার নাজমুল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। কিন্তু যাঁরা সড়ক ব্যবহার করেন, তাঁদের সহযোগিতা পাওয়া জরুরি। ৯০ শতাংশ মানুষ আইন মানলে বাকি ১০ শতাংশকে শৃঙ্খলায় আনা যায়। কিন্তু এখন ৭০ শতাংশ মানুষ আইন মানছে না। এমনকি শৃঙ্খলা ফেরানোর দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরাও বাধার মুখে পড়ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাফিকের উচ্চপদস্থ আরেক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সড়ক অবরোধ থামানো যাচ্ছে না। হুটহাট সড়ক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আজও (বুধবার) মহাখালী, মতিঝিল, ওয়ারীতে সড়ক বন্ধ থাকার খবর পেয়েছি। গতকাল (মঙ্গলবার) তেজগাঁও বন্ধ ছিল। সড়কে বিশৃঙ্খলা এবং আমাদের ভেতরের অব্যবস্থাপনা দুইয়ে মিলে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে যানজটের কবলে পড়ে গাড়িচালকদের আয় নেমে এসেছে অর্ধেকে। গতকাল মিজান রহমান নামের এক অটোরিকশাচালক জানান, ছয় ঘণ্টায় তিনি মাত্র তিন ট্রিপ দিতে পেরেছেন। এতে ভাড়া পেয়েছেন মোট ৭৫০ টাকা। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এভাবে চললে তো জমা আর গ্যাস খরচের টাকাই উঠবে না। ঘর চালাব কেমনে?</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যানজটের কারণে বাসের ট্রিপও কমে এসেছে। রামপুরা এলাকায় ভিক্টর ক্ল্যাসিক বাসের চালক জায়নাল বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাস্তা আর ভালো হবে বলে মনে হয় না। আগের দিন যে পরিমাণ জ্যাম ছিল ওই তুলনায় আজ কম। তাও তো গাড়ি চলে না। টানা পাঁচটা মিনিট গাড়ি চালানোর সুযোগ নাই। আসা-যাওয়ায় দুই ট্রিপ দিতেই কষ্ট হয়ে যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রামপুরা এলাকায় পথচারী আমিনুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি মেরুল যাব। বাস থেকে নেমে হাঁটা ধরেছি। কতক্ষণ বাসে বসে থাকা যায়? তাই নেমে গেলাম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> একই অবস্থা পথচারী খোরশেদ আলমের। তিনি নতুনবাজার পার হয়ে বাস থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেছেন। তাঁর গন্তব্য নদ্দা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>