<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অপসারিত সদস্য মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দেশে-বিদেশে অবৈধ অর্থে বিলাসী জীবন যাপন করছেন। মতিউর, তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, প্রথম পক্ষের সন্তান ছাগলকাণ্ডের আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণব গাঢাকা দিয়ে দেশেই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী এবং প্রথম পক্ষের মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতা বিদেশে পলাতক। এই পাঁচজনের সম্পদ বিবরণী বর্তমানে যাচাই-বাছাই করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যাচাই-বাছাই শেষে শিগগিরই প্রতিবেদন দাখিল করে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করবে কমিশন। দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানতে চাইলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে জানান, মতিউর রহমান, তাঁর এক স্ত্রী ও ছেলে দেশেই অবস্থান করছেন। আরেক স্ত্রী ও মেয়ে বিদেশে পলাতক। কমিশনে তাঁরা সম্পদ বিবরণী দাখিল করেছেন। ওই সম্পদ বিবরণী বর্তমানে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষে শিগগিরই কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিন দফায় বিপুল সম্পদ জব্দ : গত ১৬ জুলাই তৃতীয় দফায় স্থাবর সম্পদের মধ্যে গাজীপুরে মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলীর একক নামে এবং এম এ কাইয়ুম হাওলাদারের সঙ্গে যৌথ নামে ১৩৭.২৮ শতাংশ জমি, ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে রাজধানীর একটি অভিজাত এলাকায় আট হাজার ৭০ স্কয়ার ফিটের কমার্শিয়াল স্পেস ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। আর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৯টি কম্পানির তিন কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ হাজার ৫১৭টি শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে গত ১১ জুলাই দ্বিতীয় দফায় স্থাবর সম্পদের মধ্যে মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে সাভার, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, নরসিংদী ও নাটোরে মোট ২৩৬৭.০৭ শতাংশ জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের ১১৬টি হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়। এসব ব্যাংক হিসাবে ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪৭১ টাকা জমা রয়েছে। এ ছাড়া মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা ২৩টি বিও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এরও আগে গত ৪ জুলাই প্রথম দফায় স্থাবর সম্পদের মধ্যে মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা বরিশাল ও নরসিংদীতে ১০১৯ শতাংশ জমি, রাজধানীতে বহুতল ভবনসহ ১০ কাঠা জমি ও দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ দেন আদালত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিদেশে সম্পদের খোঁজে বিএফআইইউয়ে চিঠি : মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগও রয়েছে। গত ১০ জুলাই মতিউর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে বিদেশে যে সম্পদ রয়েছে, তা জানানোর জন্য নির্ধারিত ফরমে বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে (বিএফআইইউ) চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সপরিবারে সম্পদ বিবরণী দাখিল : দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় গত ২ জুলাই মতিউর রহমান, তাঁর দুই স্ত্রী ও তিন সন্তানকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের পৃথক নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, দায়দেনা ও আয়ের বিবরণী কমিশনে দাখিল করতে বলা হয়। এরপর সময়ের আবেদন করে পরে গত মাসে আইনজীবীর মাধ্যমে কমিশনে সপরিবারে সম্পদ বিবরণী দাখিল করে মতিউর পরিবার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা : দুদকের অনুসন্ধান টিম জানতে পারে, অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরুর পরই মতিউরের সপরিবার দেশত্যাগের চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় গত ২৪ জুন দুদকের অনুসন্ধান টিম আদালতে মতিউর রহমান, তাঁর প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পঞ্চমবার অনুসন্ধান শুরু যেভাবে : গত ঈদুল আজহার সময় মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান অর্ণব ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কিনতে গিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় আসেন। ছেলের বিলাসী জীবনযাপনের সূত্র ধরে ফের মতিউরের সম্পদের বিষয়টি নজরে আসে। এরপর গত ৪ জুন কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে গত দুই যুগে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে চারবার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগ পৃথকভাবে অনুসন্ধানও করে দুদক। তবে প্রতিবারই মতিউর দুদক থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ পায়নি দুদক। তবে পুরনো যে চারটি অভিযোগ থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছিলেন, এবার সেসব অভিযোগের বিষয়েও অনুসন্ধান টিম খতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব। </span></span></span></span></p>