<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের আন্তর্জাতিক দরপত্র জমার মেয়াদ আরো তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। এতে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ আরো পিছিয়ে গেল। আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় এবং কয়েকটি বহুজাতিক কম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দরপত্রে অংশ নেওয়ার সময় তিন মাস বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে গত ১০ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করে পেট্রোবাংলা। একই সঙ্গে দরপত্রে অংশ নিতে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের ৫৫টি কম্পানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দরপ্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে দর প্রস্তাব কিনেছে ছয়টি বহুজাতিক তেল-গ্যাস কম্পানি। দরপত্র জমার সময় ছিল ছয় মাস, সেটি গত ৯ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বহুজাতিক তেল-গ্যাস কম্পানির মধ্যে মার্কিন কম্পানি এক্সনমবিল ও শেভরন, মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস, নরওয়ে ও ফ্রান্সের যৌথ কম্পানি টিজিএস অ্যান্ড স্লামবার্জার, জাপানের ইনপেক্স করপোরেশন ও জোগম্যাক, চীনের সিনুক, ইতালির ইনি এসপিএ, সিঙ্গাপুরের ক্রিস এনার্জি ও ভারতের ওএনজিসি আগ্রহ প্রকাশ করে বিভিন্ন সময় পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানা গেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেশ কয়েকটি বহুজাতিক কম্পানি টেন্ডারের সময় বাড়াতে বলেছিল, তাদের অনুরোধে আমরা সময় তিন মাস বাড়িয়েছি। এতে আরো কয়েকটি কম্পানির অংশগ্রহণ বাড়বে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অংশে গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ১১টিসহ ২৬টি ব্লক রয়েছে। এর মধ্যে ২০১০ সালে গভীর সমুদ্রে দুটি ব্লকে কাজ নেয় কনোকোফিলিপস। দ্বিমাত্রিক জরিপ চালালেও পরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি পূরণ না হওয়ায় কাজ ছেড়ে চলে যায় তারা। একইভাবে চুক্তির পর কাজ ছেড়ে চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস ও দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো দাইয়ু। এখন একমাত্র কম্পানি হিসেবে অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কম্পানি ওএনজিসি। এই দুটি বাদ দিয়ে বাকি ২৪টি ব্লকে দরপত্র আহবান করা হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বহুজাতিক কম্পানিগুলোকে আগ্রহী করে তোলার জন্যই আকর্ষণীয় করা হয়েছে প্রডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট (পিএসসি)। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবার আগের চেয়ে বেশ কিছু সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। দরপত্রে দেশের স্বার্থের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী কম্পানির স্বার্থও দেখা হয়েছে। আগের পিএসসিগুলোতে গ্যাসের দর স্থির করা দেওয়া হলেও এবার গ্যাসের দর নির্ধারিত করা হয়নি। ব্রেন্ট ক্রুডের আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে ওঠানামা করবে গ্যাসের দর। প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে ব্রেন্ট ক্রুডের ১০ শতাংশ দরের সমান। অর্থাৎ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৮০ ডলার হলে গ্যাসের দাম হবে আট ডলার। দামের পাশাপাশি সরকারের শেয়ারের অনুপাতও কমানো হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেট্রোবাংলার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দরপত্র জমা দেওয়ার সময় ডিসেম্বরে শেষ হলে আগামী বছরের শুরুতেই আগ্রহী কম্পানিগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে পেট্রোবাংলা। এরপর সেগুলো মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হলে তাদের সঙ্গে চুক্তি সই করা হবে। তবে এর আগেও দরপত্রে অংশ নিতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করবে পেট্রোবাংলা। সব প্রক্রিয়া শেষে গ্যাস উত্তোলন পর্যন্ত প্রায় সাত-আট বছর সময় লাগতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানতে চাইলে ভূতত্ত্ববিদ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরূল ইমাম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দরপত্রের সময় বাড়ানোতে যদি বিদেশি কম্পানির অংশগ্রহণ বাড়ে তাহলে তো সময় বাড়ানো খারাপ কিছু নয়। তবে আর মেয়াদ বাড়ানো ঠিক হবে না। কারণ সমুদ্রে অনুসন্ধানে এমনিতেই অনেক পিছিয়ে গেছি আমরা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সমুদ্রে আমাদের বিপুল পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভালোভাবে যদি অনুসন্ধানের কাজ শুরু হয়, তাহলে হয়তো এর মাধ্যমে নতুন দিগন্ত উন্মোচন হতে পারে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বঙ্গোপসাগরে প্রাথমিক সম্ভাবনা যাচাই করতে জার্মানির কম্পানি স্লামবার্জারকে দিয়ে বহুমাত্রিক জরিপ চালানো হয়েছে। এই জরিপের তথ্য এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বহুজাতিক কম্পানি কিনে নিয়েছে। দরপত্রে আগ্রহী যেকোনো কম্পানি জরিপের তথ্যগুলো কিনতে পারবে। এ ছাড়া কনোকোফিলিপসের পরিচালিত দ্বিমাত্রিক জরিপের তথ্যও আছে পেট্রোবাংলার কাছে। এতেও গ্যাসের সম্ভাবনা দেখা গেছে বঙ্গোপসাগরে। যদিও অনুসন্ধান কূপ খনন ছাড়া উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ আবিষ্কার করা যায় না। এখন পর্যন্ত গভীর সমুদ্রে কোনো কূপ খনন করা হয়নি। তবে একই সমুদ্রে গ্যাস পেয়েছে পাশের দুই দেশ ভারত ও মায়ানমার।</span></span></span></span></p>