<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মানুষের ভরসাস্থল সেনাবাহিনীর প্রধানের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়েছিলেন। শপথ নিয়েছিলেন সততার। অথচ মনে-মগজে ছলচাতুরী, কারসাজি আর টাকা বানানোর নেশা। রাষ্ট্রীয় উঁচু পদকে কাজে লাগিয়ে ধরাকে শরাজ্ঞান করা চরম পরাক্রমশালী সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ নিজের আখের গোছাতেই যা খুশি তা-ই করেছেন। জমি, প্লট, ফ্ল্যাট, রিসোর্ট হেন কোনো সম্পদ নেই যার নেশা তাঁকে টানেনি। দুই হাত ভরে টাকা কামিয়েছেন, আর ওই টাকায় পাহাড় গড়েছেন অবৈধ সম্পদের। নিজের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ভাই-বেরাদারদেরও সুযোগ করে দিয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার। দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাঁর স্থাবর সম্পদের ছড়াছড়ি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনুসন্ধানে জানা যায়, জেনারেল আজিজ সম্পদ বাড়াতে যতটা উদার, ততটাই কৃপণ কর দেওয়ার ক্ষেত্রে। হাজার কোটি টাকার ধন-সম্পদের মালিক আজিজ মাত্র ১৯ কোটি টাকায় নামিয়ে এনেছেন তাঁর বৈধ সম্পদের ফিরিস্তিতে। কর ফাঁকি আর সম্পদ লুকাতে তিনি কোটি টাকার সম্পদকে দেখিয়েছেন লাখ টাকার হিসাবে। আবার নামে-বেনামে অনেক সম্পদের তথ্য তিনি কর নথিতে উল্লেখই করেননি। বিতর্কিত এই সেনা কর্মকর্তার কর বিভাগে দেওয়া সম্পদ বিবরণী আর বাস্তবে গড়ে তোলা সম্পদের বিশাল সাম্রাজ্যের খোঁজখবর করেই এসব তথ্য জানা গেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলও (সিআইসি) এ বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আজিজ আহমেদের আয়কর নথিতে দেখা গেছে, তিনি তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১৯ কোটি ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৬৯১ টাকা উল্লেখ করেছেন। সম্পত্তির বিবরণী অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালে ঢাকার মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদীয়া হাউজিং লিমিটেডে চার কাঠা জমির ক্রয়মূল্য এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে এক হাজার ৩৮০ বর্গফুট একটি ফ্ল্যাট পেয়েছেন পৈতৃক সূত্রে, যার মূল্য ধরা হয়েছে ১২ লাখ টাকা। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে উত্তরার বাইলজুরীতে তিন কাঠা জমির তিন ভাগের এক ভাগ নিয়েছেন তিনি, যার মূল্য ধরা হয়েছে ৬৫ হাজার ৬৬৭ টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দেখানো সম্পত্তির বিবরণী অনুযায়ী, উত্তরার বাউনিয়ায় ২.৫৭ কাঠা জমি ও ২.৭৭ কাঠা টিনশেড স্থাপনার তিন ভাগের এক ভাগ রয়েছে তাঁর নামে; যার ক্রয়মূল্য ১৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। ২০১২ সালে মিরপুর ডিওএইচএসে চার কাঠা প্লট কেনেন তিনি, যার দাম চার লাখ ২২ হাজার ৩১৩ টাকা। একই বছরে আটতলা বাড়ি নির্মাণে বিনিয়োগ ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ২০১২ থেকে ২০১৪ সালে মিরপুর সেকশন ৯-এ জাতীয় গৃহায়ণের ১৩ ও ১৪ নম্বর প্লটের (০৪৪৭ অযুতাংশ ও ০৪৯৩ অযুতাংশ) মূল্য ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার ৮৯০ টাকা উল্লেখ করেছেন। এই প্লটে ১০ তলা বাড়ি নির্মাণে বিনিয়োগ সাত কোটি ১২ লাখ ৪১ হাজার ৮৪ টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশের ছয়টি জায়গায় এক কোটি ৭৭ লাখ ৮৬ হাজার ১১০ টাকার জমি কিনেছেন তিনি। গাজীপুর জেলার রাথুরা মৌজায় ৫৭ লাখ ৯৩ হাজার ১৪০ টাকায় ৮৯.১৯ শতাংশ, কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার লেঙ্গুরবিল মৌজায় বিএস খতিয়ান নম্বর ২০৫৯, সৃজিত বিএস দাগ নম্বর ২০২১, সৃজিত বিএস খতিয়ান নম্বর ২০৭১, সৃজিত বিএস দাগ নম্বর ২০২১-এ ০.৩৮২০ একর এবং একই মৌজায় বিএস খতিয়ান নম্বর ৭৩, আপস বিএস দাগ নম্বর ২০২০-এ ৩৬ লাখ ৩১ হাজার ৯২০ টাকায় ০.৩২০০ একর জমি কিনেছেন। মোহাম্মদপুরের শেরশাহ শূরি রোডের বরদেশী মৌজায় বিভিন্ন দাগে জমি কেনেন আজিজ। এর মধ্যে দাগ নম্বর সিএস ও এসএস ১৫০ এবং আরএস দাগ নম্বর ৩৪৫০-এ ১৪ লাখ ১৭ হাজার ৫৬ টাকায় ২৬ শতাংশ; দাগ নম্বর সিএস ৭৮৯ ও এসএস ৩০৭ এবং আরএস ২৫০-এ ২০ লাখ ৭৮ হাজার ১৩৮ টাকায় ৩৮.২০ শতাংশ;  দাগ নম্বর সিএস ও এসএস ১৫০৪ এবং আরএস দাগ ৩৪৪৮-এ ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫২৮ টাকায় ১৯.৮০ শতাংশ; দাগ নম্বর সিএস ও এসএস ১৫০৪ এবং আরএস দাগ নম্বর ৩৪৪৮-এ ২২ লাখ ৩১ হাজার ৩২৮ টাকায় ৪১ শতাংশ জমি কেনেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১৯-২০ অর্থবছরে সাত জায়গায় এক কোটি ৩৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬২৭ টাকার জমি কিনেছেন আজিজ। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার লেঙ্গুরবিল মৌজায় আরএস ৪৫৯/১৫১ নম্বর ও ৪৫৯/১৫০ নম্বর খতিয়ান ও এমআরআর ৩০ নম্বর ও ৩১ নম্বর খতিয়ানের আরএস ১১০২-এ ১৭ লাখ টাকায় ০.৩৫০০ একর জমি কেনেন। একই মৌজায় ১৬ লাখ টাকায় ০.৩৩০০ একর;  নিউ মার্কেট সেন্ট্রাল রোডে বড়ডেইল মৌজায় ৬৫ লাখ পাঁচ হাজার টাকায় ১.১৫৫০ একর; কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার বড়ডেইল মৌজায় তিন লাখ ৪০ হাজার টাকায় ০.০৬০০ একর; একই মৌজায় ১৭ লাখ পাঁচ হাজার টাকায় ০.৩০২১ একর এবং ১৭ লাখ টাকায় ০.৩০০০ একর জমি কেনেন। এ ছাড়া ১০ জনের শেয়ারে ২.২২ কাঠার প্লট কেনায় ব্যয় করেন দুই লাখ ২৯ হাজার ৬২৭ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে জলসিঁড়ি আবাসনে চার লাখ ৪১ হাজার টাকায় ৭.৫ কাঠা জমি কেনার তথ্য দিয়েছেন আজিজ। যদিও এই এলাকায় প্রকৃতপক্ষে জমির দাম তখন আরো অনেক বেশি ছিল।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০২১-২২ অর্থবছরে এক কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার টাকার জমি কেনার তথ্যও নথিতে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সাভারের আশুলিয়া থানার মনসন্তোষ মৌজায় ২৭ লাখ টাকা বায়নায় ২৯ শতাংশ জমি কেনেন; জমির মূল্য এক কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। একই মৌজায় ২৩ লাখ টাকা বায়নায় ৪৯.৫০ শতাংশ জমি কেনেন। এই জমির মূল্য এক কোটি ১৬ লাখ ১১ হাজার টাকা। সাভারের আমিনবাজার থানার বড় বরদেশী মৌজায় ৪৮ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ১০০ শতাংশ; একই মৌজায় ২৫ লাখ ৩০ হাজার টাকায় ৫০ শতাংশ এবং সাভারের শ্যামপুর মৌজায় ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকায় ১৭ শতাংশ জমি কেনেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০২২-২৩ অর্থবছরে তিন কোটি ৭৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকার জমি কেনার তথ্য নথিতে উল্লেখ করেছেন আজিজ। সাভারের শ্যামলাপুর মৌজায় ৪৩ লাখ ৬৩ হাজার টাকায় ৩২ শতাংশ, সাভারের আমিনবাজার থানার বড় বরদেশী মৌজায় ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকায় ৫০ শতাংশ, একই মৌজায় ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০ শতাংশ জমি কেনেন। এ ছাড়া টেকনাফ থানার সাবরাং মৌজায় এক কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ৩.০৪৭৫ একর; একই মৌজায় ৩২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ৪৮ শতাংশ, ২০ লাখ টাকায় ০.৩১৯৯ একর, ২৯ লাখ ৪০ হাজার টাকায় ৫৪ শতাংশ জমি কেনেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আয়কর নথিতে তিনি বাড়িভাড়া বাবদ আয় দেখিয়েছেন ৬৪ লাখ ২৪ হাজার ২৩৫ টাকা। এর মধ্যে মিরপুর পল্লবীতে ১৪টি ফ্ল্যাট থেকে তাঁর বছরে আয় ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার ৫৬০ টাকা। মিরপুর ডিওএইচএসে তিনটি ফ্ল্যাট থেকে বছরে আয় ১২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। নূরজাহান রোডের মোহাম্মদীয়া হাউজিং লিমিটেডে তিনটি ফ্ল্যাট থেকে তিনি বাড়িভাড়ার হিসাব দেখিয়েছেন আট লাখ ৯০ হাজার টাকা। উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে দুটি ফ্ল্যাটের ভাড়া বাবদ তাঁর আয়ের পরিমাণ তিন লাখ ৮৮ হাজার টাকা। যদিও তাঁর নামে-বেনামে থাকা বাড়ি থেকে ভাড়া বাবদ আয়ের পরিমাণ আরো অনেক বেশি হওয়ার কথা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আয়কর কর্মকর্তাদের ধারণা, জেনারেল (অব.)  আজিজ আয়কর নথিতে  সেব  সম্পত্তির উল্লেখ করেছেন, প্রকৃতপক্ষে তার পরিমাণ শতগুণ বেশি। অনুসন্ধানে এরই মধ্যে আজিজ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। রাজধানীর তুরাগ নদ ঘেঁষা আমিনবাজার বড় বরদেশী মৌজায় সিলিকন সিটি হাউজিংয়ে আরএস ১৩০৩ নম্বর দাগে ৭৫ কাঠা, ১৩১১ নম্বর দাগে ৩০.৬ কাঠা, ১৭৬১ নম্বর দাগে ৮০ কাঠা জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। ওই জমিতে একটি বাংলোবাড়ি এবং সিলিকন সিটিতে আজিজের ছোট ভাই তোফায়েল আহমেদ জোসেফের নামে প্রায় ২০০ কাঠা জমি আছে। সেনাপ্রধানের পদে থাকার সময়ে সিলিকন সিটি হাউজিংয়ের এমডি সরোয়ার খালেদকে জমি দখলে সহায়তা করায় আজিজ ও তাঁর পরিবারকে এই সম্পত্তি উপহার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের মনোসন্তোষপুর মৌজায় পূর্ণিমারচালা এলাকায় আরএস ১৭১ ও ১৭২ নম্বর দাগে আজিজের প্রায় ২১ বিঘা জমির সন্ধান পাওয়া গেছে। ১৭১ দাগের জমিতে উঁচু প্রাচীরঘেরা একটি বাংলোবাড়ি আছে। পাশের ১৭২ দাগে ইটের রাস্তার পাশে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে সীমানাপ্রাচীর দেওয়া আছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মনোসন্তোষপুর মৌজায় ফারুকের নামে ৫০ বিঘার ওপরে জমি আছে। ফারুকের যত জমি সবই আজিজ আহমেদের বলে জানা যায়। এ ছাড়া মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্রপুর মৌজায় জাকের ডেইরি ফার্মের অপর পাশে আরএস ৫৮২ নম্বর দাগে আজিজ আহমেদের চার কাঠার দুটি প্লট আছে। প্লট দুটির দাম আনুমানিক ছয় কোটি টাকা। একই মৌজায় মোহাম্মদীয়া হাউজিং লিমিটেড ৪ নম্বর রোডে কুবা মসজিদের গলিতে ৯৯ নম্বর বাসায় আজিজ আহমেদ ও তাঁর ভাইদের নামে বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ ছাড়া ভাকুর্তা ইউনিয়নের বাহেরচর এলাকায় শ্যামলাপুর মৌজায় আজিজ আহমেদের নামে বেশ কিছু প্লটের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শ্যামলাসি কলাতিয়াপাড়ার পেছনে জমজম হাউজিংয়ের রাস্তার ডান পাশে ৮০ শতাংশের প্লট, এর একটু দূরেই ৫০ শতাংশের আরেকটি প্লট আছে আজিজ আহমেদের। এ ছাড়া শ্যামলাসি দুদু মার্কেট এলাকায় অ্যাকটিভ প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পাশে ১৭ শতাংশের একটি প্লট রয়েছে তাঁর। ভাকুর্তা ইউনিয়নের শ্যামলাপুর মৌজার বাহেরচর ও লুটেরচর এলাকায় আজিজ আহমেদের সহায়তায় বিপুল পরিমাণ জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বড় ভাই আনিস আহমেদের ছেলে আসিফ আহমেদের বিরুদ্ধে। সিএস ৩৪৩ ও ৩৪৪, আরএস ২৫০২ দাগে ৭৮ শতাংশ জমিটি আগে সেজান জুসের মালিকানায় ছিল।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ ছাড়া শ্যামলাপুর মৌজায় আরএস ২৬৬৪ দাগে ৯৮ শতাংশ জমি আছে। জমিটি আগে ছিল লুটেরচর বড় মসজিদ ও বছিলা মসজিদের। এই জমিতে ৩৮টি প্লট তৈরি করে চারদিকে প্রাচীর দিয়ে রাখা হয়েছে। পাশের প্লটেই এসএ ৮২৫, আরএস ২৫০০ ও ২৫০১ দাগে আজিজ আহমেদের বোনের জামাই নুরুল ইসলামের ৩৯ শতাংশ জমি রয়েছে। এ ছাড়া চরওয়াশপুরে আসিফের নামে ৫২ শতাংশ জমি আছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মিরপুর ১২ নম্বরের সিরামিক ৪ নম্বর গেটের পাশে বঙ্গবন্ধু কলেজ রোডে পাঁচ কাঠার প্লটে আজিজ আহমেদের একটি ১০ তলা বাড়ি রয়েছে। বাউনিয়া মৌজায় বাড়িটির নম্বর ১৩/১৪ ব্লক-ডি, এভিনিউ-২, মিরপুর-১২, পল্লবী। ওই বিল্ডিংয়ে ২১টি ফ্ল্যাট রয়েছে। মিরপুর ডিওএইচএসে আজিজ আহমেদের একটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। রোড নম্বর ১৩, প্লট নম্বর ১৩২০, এভিনিউ-২, মিরপুর, ঢাকা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা সেনানিবাসে আজিজ আহমেদের একটি বিশাল বাংলোবাড়ি রয়েছে। হাউস নম্বর ৩ (পথিকৃৎ) ঢাকা সেনানিবাস। এই বাড়িতে তিনি দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি পালন করেন। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের পাশে নিকুঞ্জ-১-এর ৬ নম্বর রোডের মাথায় আজিজ আহমেদের একটি আলিশান বাড়ি রয়েছে। বাড়ির নাম আজিজ রেসিডেন্স।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিংয়ের ৮ নম্বর রোডের মাথায় জমি দখল করে বিলাসবহুল একটি ১০ তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন আজিজ আহমেদের ভাই জোসেফ আহমেদ। বাড়ি নম্বর ৫৪/১৯ এ, ব্লক # ক # ১২। বাড়ির নাম মায়ের আঁচল। পাশেই আজিজের ভাতিজা আসিফ আহমেদেরও একটি বাড়ি রয়েছে। বাড়ি নম্বর ৫৪/১৯ বি, ব্লক # ক # ১২। বাড়ির নাম ডায়মন্ড রিজেন্সি। বাড়িটি নির্মাণে প্রায় চার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা যায়। আদাবর নবোদয় হাউজিংয়ের ৫ নম্বর রোডের এ ব্লকে ৭ নম্বর বাড়িটিও আজিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে দখলে নেন জোসেফ। পরে ওই বাড়িটি জোসেফের বোনের জামাই নুরুল ইসলামকে দেওয়া হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাড্ডার সাঁতারকুলে মগারদিয়ার পূর্ব হাররদিয়া মৌজায় প্রায় ২৩৫ বিঘা জমি দখলে রয়েছে আজিজ আহমেদের ভাই হারিছ আহমেদ ও স্থানীয় এমপির ছেলে হেদায়েতউল্লাহ রনর। হাজারীবাগ মডেল টাউনেও আজিজ আহমেদের ভাই হাসান হারিছ আহমেদ ও হেদায়েতউল্লাহ রনর নামে ১১টি প্লট রয়েছে। হেমায়েতপুর আলিপুর ব্রিজের পাশে মাকান রিভারভিউ হাউজিংয়ে হাসান হারিছ আহমেদ ও জোসেফের নামে ২১টি প্লট আছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নরসিংদীর মাধবদী রাইনাদী দিঘিরপাড়ে হ্যারিটেজ রিসোর্টের মালিকানা আছে আজিজ আহমেদের। প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে এই রিসোর্ট। এর মালিকানায় আছেন মিনহাজুর রহমান রাজু ভুঁইয়া। তিনি জোসেফের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। জানা গেছে, অনেকটা জোরজবরদস্তি করে পুলিশের ভয় দেখিয়ে রিসোর্টের জমি কিনে নেওয়া হয়েছিল।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে করদাতাদের হয়রানি না করতে এবং যাঁরা কর ফাঁকি দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের আয়কর বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান কিংবা যত বড় প্রভাবশালীই হোক, আইন অমান্যকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাঁর প্রকৃত সম্পদ এবং যে সম্পদ আয়কর নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে; এর মধ্যে পার্থক্য থাকা মানে সে ইচ্ছাকৃত কর ফাঁকিবাজ। এ ধরনের কাজ করে থাকলে আইন অনুযায়ী কর আদায়ের পাশাপাশি পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনবিআরের আয়কর নীতির সাবেক সদস্য ড. সৈয়দ আমিনুল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, এনবিআরের কাজ শুধু কর ফাঁকির বিষয়টি দেখা। এ ছাড়া দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন দেখবে। কর বিভাগের কাজ হচ্ছে প্রকৃত সম্পদ এবং প্রদর্শিত সম্পদের মাঝে যে পার্থক্য তার ওপর কর ও জরিমানা আদায় করা। এ ধরনের প্রতিটি কেস সঠিকভাবে তদন্ত করা দরকার। তদন্ত করে রাজস্ব আদায়ের যে ঘাটতি আছে তা পূরণ করা উচিত। এদের ধরতে এনবিআর সচেষ্ট হবে বলে আমি মনে করি।</span></span></span></span></span></p>