<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজাধিরাজ আবদুল হামিদ রসবোধে ঠাসা। রাষ্ট্রপতির পদে থেকেও সরল কথার মারপ্যাঁচে মোহমুগ্ধ করে রাখতেন সবাইকে। অথচ তাঁর রাষ্ট্রপ্রধানের ক্ষমতা ও মন-ভোলানো গল্পগাথায় গড়ে ওঠা ভাবমূর্তি সামনে রেখে, পেছনে লাইন দিয়ে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রামরাজত্ব</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কায়েম করেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে পরিবারের একেক সদস্য রীতিমতো <img alt="হাওরে হামিদ পরিবারের রাজত্ব" height="271" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/01-10-2024/990.jpg" style="float:left" width="312" />হাওরাঞ্চলের দানবে পরিণত হয়েছিলেন। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য হয়েও তাঁরা প্রত্যেকেই দুই হাতে টাকা কামিয়ে রাতারাতি বনে যান কোটিপতি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কখনো সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাই-ভাতিজা, মামা, চাচা কখনো বা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লতায়-পাতায়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> আত্মীয় পরিচয় দেওয়া একেকজন স্বজন স্থানীয় মানুষের জমিজমা দখল, লুটপাট, দুর্নীতি আর সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নিতে অপ্রতিরোধ্য লাঠিয়ালে পরিণত হন। নিজের ভাই-ভাতিজারা যখন তাঁকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেচে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> দিয়ে হাওরাঞ্চলকে নিজস্ব তালুকে পরিণত করেছিলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তখনো ছিলেন নির্বিকার, ভূমিকাহীন। কাউকেই ডাকদোহাই দেননি। গণ-অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর বেরিয়ে আসছে সব তথ্য। সাহস করে কথা বলছে স্থানীয়রা। হাওরাঞ্চল ঘুরে তাদের সঙ্গে কথা বলে হামিদ পরিবারের স্বেচ্ছাচার আর নানা অনিয়মের এ রকম তথ্যই জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এখন অবসরে। তবে অবসরে যাওয়ার আগে আগে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের নিজবাড়িতে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মেহমানদারি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> করেছিলেন পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সাবেক প্রধানমন্ত্রী সেদিন সাবেক রাষ্ট্রপতির নামে একটি সেনানিবাসের উদ্বোধন করে দেন। প্রধানমন্ত্রী সেদিন বলেছিলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ইচ্ছায় তাঁর নামে সেনানিবাস করেছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এ সময় সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হাওরের মাঝখানে তৈরি ৩০ কিলোমিটার ইটনা-মিঠামইন সড়ককে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইউরোপের আধুনিক রাস্তা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বলে অভিহিত করেন। অথচ ওই সড়ক এখন হাওরাবাসীর মরণফাঁদ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিবারে একজন রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তাঁর নামে সেনানিবাসসহ কত কিছু হলো। এত সব সুনাম ও খ্যাতিতে মন ভরেনি ভাই-ভাতিজাদের। ক্ষমতা আর টাকার নেশা পেয়ে বসে সবাইকে। তাই তাঁরা  সাবেক রাষ্ট্রপতির সব সুনাম, ক্ষমতা আর প্রভাবকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাতারাতি বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন। হাওরের তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের জলমহাল, ঠিকাদারি ব্যবসা, সরকারের উন্নয়নসহ প্রতিটি অফিস থেকেই তাঁরা দুই হাতে টাকা কামান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয়রা জানায়, সাবেক রাষ্ট্রপতির ভাই, মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হক নূরু নিয়োগ, বদলি ও তদবির বাণিজ্য করে গড়েছেন টাকার পাহাড়। সাবেক রাষ্ট্রপতির সত্ভাইয়ের তিন ছেলে শরীফ কামাল, তারেক ও হানিফ, ভাগ্নে সোয়েব আহমেদ রুলেন, নাতি রিগান আহমেদসহ এ পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যই এখন </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোটিপতি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আব্দুল হক নূরু ও মো. শরীফ কামালের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নির্যাতন চালিয়ে জমিজমা বাগিয়ে নেওয়া, দখল ও খাসজমি আত্মসাতের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। নূরুর বিরুদ্ধে হাওরের জিরাতিদের (অস্থায়ী কৃষক) দুই শতাধিক একর বোরো জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার প্রভাবেই তাঁর পরিবার এলাকায় রামরাজত্ব কায়েম করেছিলেন বলে বলছে সবাই। পরিবারের সদস্যরা এত বছর এলাকায় দুঃশাসন জারি রাখলেও সাবেক রাষ্ট্রপতি এদের দমাননি। তাঁর ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিকও পরিবারের অপরাধীদের প্রশ্রয় দিয়েছেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নূরুর </span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাকরির কারবার</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ও দখলবাজি    </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আব্দুল হক নূরু নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে উজান এলাকার কিশোরগঞ্জ, কটিয়াদী, পাকুন্দিয়া, ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের কৃষক ও জিরাতিদের শত শত একর জমি দখল করে বছরের পর বছর চাষাবাদ করেছেন। ভুক্তভোগীরা জানায়, সরকারি নিয়োগের জন্য নূরুর এজেন্টরা চাকরিপ্রার্থীদের প্রলুব্ধ করে টাকা নিতেন। এঁরা ১০ থেকে ২০-৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত হাঁকিয়ে দরদাম ঠিক করতেন। একটি পদের জন্য একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো। তবে অনেকেই ঘুষের টাকা ফেরত পাননি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পনের-ষোলো বছরে মিঠামইন বেড়িবাঁধের ভেতরের কোনো জমি নূরু ও শরীফের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনুমতি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ছাড়া কেনাবেচা হয়নি। নূরু ও তাঁর পরিবার বেড়িবাঁধের দুই পাশের বেশির ভাগ জমির মালিকানা কবজা করেছেন। ভূমি ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসের কর্তাব্যক্তিরা ছিলেন ক্রীড়নকের ভূমিকায়। তবে আব্দুল হক নূরুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাঁর মোবাইল ফোনে কল করেও এসব বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।      </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শরীফ কামালের লুটপাট </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মিঠামইন সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফ কামাল উপজেলা পরিষদের রাস্তা দখল করে পাঁচতলা ভবন করেছেন। হ্যালিপেড এলাকায় মার্কেট, হাসপাতাল রোডে হোটেল ও বেড়িবাঁধে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাওর রিসোর্ট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নির্মাণ করেছেন। শরীফের ভাই হানিফ কামালেরও </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভাটিবাংলা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে রেস্টুরেন্ট রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাওরবাসী জানায়, তিন উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজের একক নিয়ন্ত্রণ ছিল শরীফের হাতেই। বেশির ভাগ কাজের ঠিকাদার তাঁর ভাইপো রিগান আহমেদ। তিন উপজেলার সব জলমহাল ও বালুমহাল নিয়ন্ত্রণকারী শরীফ টাকা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বিনা মূল্যের নাগরিকত্ব ও ওয়ারিশান সনদপত্র সরবরাহ করতেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাঁদের মাছের আড়ত ছাড়া জেলেরা অন্য কোথাও মাছ বেচতে পারতেন না। হাটবাজার থেকে শুরু করে হাওরের বেশির ভাগ সেচ প্রকল্প, হাটবাজারের ইজারা ও খেয়াঘাটের একক কর্তৃত্ব, বোরো মৌসুমে হাওরের ফসল পরিবহন ব্যবসার নিয়ন্ত্রণও ছিল শরীফের কাছেই।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পদক সবই তাঁদের</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা সদরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এই পরিবারের কবজায়। মিঠামইন উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম পাল্টে সাবেক রাষ্ট্রপতির বাবা হাজি তায়েব উদ্দিনের নামে এবং মিঠামইন মহাবিদ্যালয়ের নাম পাল্টে ভাই আব্দুল হক নূরুর নামে নামকরণ করা হয়। ১৯৬৮ সালে এলাকাবাসীর চাঁদার টাকায় গড়া মিঠামইন উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম পাল্টানোর ঘটনায় স্থানীয় জনমনে তীব্র অসন্তোষ রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির রেজুলেশন ছাড়াই ২০১২ সালে নাম পাল্টাতে এই পরিবার অনুদান দেয় ১০ লাখ টাকা। সরকারি অর্থায়নে বিদ্যালয়ে নূরুর প্রয়াত ভাইয়ের নামে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই একাডেমিক ভবন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নির্মাণ করা হয়। ২০০৮ সালের পর জনগণের চাঁদার টাকায় গড়া কলেজটির নাম রাখা হয় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হক কলেজ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। মিঠামইন মহাবিদ্যালয়ের খেলার মাঠে গড়া কলেজের অধ্যক্ষ পদেও নিয়োগ পান আব্দুল হক নূরু।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নূরুর নিজের লাঙল-জোয়াল না থাকলেও দখল করা জমির চাষাবাদ করে বাগিয়ে নেন </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রেষ্ঠ কৃষক</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> পুরস্কার। হন </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রেষ্ঠ শিক্ষানুরাগী</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকের পুরস্কার পান তাঁর স্ত্রী, তমিজা খাতুন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবেদা জাহান। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ও </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> পান তাঁর বোন আছিয়া আলম। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জলা-মাছ-ঠিকাদারির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শরীফ কামালের নেতৃত্বে আছিয়া আলমের ছেলে সোয়েব আহমেদ রুলেন ও আব্দুর রাজ্জাকের নাতি রিগান আহমেদ নিয়ন্ত্রণ করেছেন ঠিকাদারি ব্যবসা। অভিযোগ রয়েছে, হাওরের নদী খনন ও নদীভাঙন রোধে পাউবোর শত শত কোটি টাকার প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণ ছিল রুলেনের হাতে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অল ওয়েদার রোডের ঠিকাদারের বালুর কাজ বাগিয়ে নেন শরীফ কামাল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডিবি হারুনের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শেল্টারদাতা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><strong> এ পরিবার   </strong>  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এলাকাবাসী জানায়, সাবেক বিতর্কিত ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ সাবেক রাষ্ট্রপতির পরিবারের ছত্রচ্ছায়ায় মিঠামইনের হাওরে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নির্মাণ করেছেন। হারুন অবৈধ পথে অর্জিত শত শত কোটি টাকা রিসোর্ট ও অ্যাগ্রো ফার্মে বিনিয়োগ করেছেন। তিনি নিরীহ কৃষকদের শতাধিক একর জমিও দখল করেছেন বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। ভাই এ বি এম শাহরিয়ারের মাধ্যমে হারুন হাওরে এসব অনাচার করেছেন বলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন।   </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয়রা জানায়, ৫ আগস্টের পর বেপরোয়া লুটপাট ও দখলবাজিতে লিপ্ত সাবেক রাষ্ট্রপতির পরিবারের পুরুষ সদস্যরা গাঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের লাঠিয়াল ও দালালরাও এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। মুক্ত পরিবেশে সাধারণ মানুষ এখন প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। কালের কণ্ঠ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র এই প্রতিবেদক সরেজমিন এলাকায় গেলে তাঁদের দখলবাজি, সন্ত্রাস ও নির্যাতনের শিকার অগণিত ভুক্তভোগী মুখ খুলেছেন। সরবরাহ করেছেন জাল-জালিয়াতির নথিপত্রও।    </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শূন্য থেকে কোটিপতি</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুই যুগ আগেও সাবেক রাষ্ট্রপতি হামিদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিল শোচনীয়। স্থানীয়রা জানায়, শরীফ কামালের বাবা ও সাবেক রাষ্ট্রপতির সত্ভাই প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাকসহ অনেকেরই নির্দিষ্ট পেশা না থাকায় কায়ক্লেশে চলতেন। সে সময় সাবেক রাষ্ট্রপতির ভগ্নিপতি খুরশিদ আলম মিঠামইন সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকার সুবাদে রিলিফের কার্ডে খাদ্যসামগ্রী পাঠাতেন। মিঠামইনের এক ব্যবসায়ী বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যাদের ঋণকর্জ করে ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না, তারা শত শত কোটি টাকার মালিক!</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তিনি দুদকের কাছে এই পরিবারের অবৈধ সম্পদ ও টাকার হিসাব চাওয়ারও দাবি করেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নূরু বাহিনী</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></strong><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র সদস্যদের অপকর্ম</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আব্দুল হক নূরুর বাহিনীতে হাই স্কুলের শিক্ষক, লাঠিয়াল, ভূমি অফিসের কর্মচারী, জমির দালাল, দলিল লেখক, গ্রাম্য টাউট-বাটপার সবাই ছিলেন। জমি কেনাবেচা ও শ্রেণি পরিবর্তন, জোর করে দখল করা, অবাধ্যদের প্রহার থেকে শুরু করে সব রকম অপরাধ করেছে তারা। জানা যায়, নূরু বাহিনীর সদস্য কামালপুরের ইউনুস মিয়া কোটি টাকা ব্যয়ে বাড়ি করেছেন। অথচ তাঁর বাবা রাজমিস্ত্রির সহযোগীর পেশায় জড়িত ছিলেন। কামালপুরের প্রয়াত আব্দুল মন্নাফ, সাইদুর রহমান, খিদিরপুরের শামসু মিয়া, হোসেনপুরের ফয়সাল আহমেদরা নূরু বাহিনীর সদস্য। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বৈষ্ণব ছিলেন সহযোগী।   </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তমিজা খাতুন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক রাসেল আহমেদ ছিলেন বাহিনীর </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাস্টারমাইন্ড</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। সরকারহাটির অনীল চৌধুরী ও ইসলামপুরের নাদিম মিয়া ছিলেন দলিলের দায়িত্বে। উপজেলা ভূমি অফিসের পিয়ন ঢাকী গ্রামের রিপন চন্দ্র দাস তাঁদের প্রয়োজনে জমির কাগজপত্র সরবরাহ থেকে শুরু করে ফাইল পর্যন্ত গায়েব করতেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যা ভাবছে এলাকাবাসী </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাওর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মিঠামইনের সামাজিক-রাজনৈতিক পরিবেশ ও সংস্কৃতির সর্বনাশ করেছে এই পরিবার। সাবেক রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার প্রভাবে এরা এত বছর নির্বিচারে লুটপাট করেছে। কায়েম করেছে রামরাজত্ব। সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাটের তদন্ত ও বিচার না হলে পরবর্তী সময়ে অন্যরাও অপকর্ম করতে দ্বিধা করবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>