<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন অন্তত ১২টি প্রতিষ্ঠানের কাছে শুল্ককর বাবদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পাওনা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআরের মোট রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১০ শতাংশ। অথচ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্তের পাশাপাশি বর্তমান সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এমন বাস্তবতায় এই বকেয়া কর আদায়ে বিশেষ উদ্যোগের অংশ হিসেবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বুক অ্যাডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানা গেছে, অর্থসংকটে থাকায় এনবিআরের বিপুল পরিমাণ পাওনা পরিশোধ করতে পারেনি পেট্রোবাংলা। পাওনা পরিশোধ নিয়ে দুই সংস্থার মধ্যে বেশ কয়েকবার সভাও হয়েছে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ঋণ নিয়ে এই টাকা পরিশোধ করবে পেট্রোবাংলা। গত জুন মাসে এনবিআরের পাওনা থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সংস্থাটি। ব্যাংক চালানের মাধ্যমে এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) ভ্যাটকে এই টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অর্থসংকটে শুধু এনবিআরের বকেয়া নয়, আমদানি করা জ্বালানির বিশেষ করে এলএনজি আমদানির দায়ও মেটাতে পারছে না পেট্রোবাংলা। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ঋণ চাওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ইসলামিক ট্রেড ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) কাছ থেকে ঋণ নিতে সংস্থাটির উদ্যোগের বিষয় জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, পেট্রোবাংলার বকেয়ার পরিমাণ ৩২ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলা ছাড়াও জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) এবং এর বিপণনকারী কম্পানির কাছে এনবিআরের মোট বকেয়া আরো ১৭ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিপিসির কাছে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বাবদ বকেয়া ছয় হাজার ৮৯৯ কোটি, তিতাস গ্যাসের কাছে দুই হাজার ২৮৪ কোটি, পদ্মা অয়েলের কাছে দুই হাজার ১৪৫ কোটি, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের কাছে এক হাজার ৭৩৫ কোটি এবং মেঘনা পেট্রোলিয়ামের কাছে বকেয়া এক হাজার ২৮ কোটি টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলা, বিপিসিসহ এসব প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের কাছ থেকে ২৪ হাজার ২২১ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করলেও তা এনবিআরে জমা দেয়নি। এ ছাড়া আয়কর বাবদ ১৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা এবং আমদানি শুল্ক বাবদ ১৭ হাজার কোটি টাকা নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও এনবিআরকে দেয়নি। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট বকেয়া শুল্ককর ৪৯ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিপুল এই পাওনা পরিশোধের বিষয়ে গত ২০ মে এনবিআরের সঙ্গে এক বৈঠকে পেট্রোবাংলার প্রতিনিধি জানিয়েছিলেন, বিদ্যুৎ ও সার খাতে গ্যাস বিক্রির পাওনা অর্থ পেলে এনবিআরের সব পাওনা তাঁরা পরিশোধ করে দিতে পারবেন। এমন প্রেক্ষাপটে শুল্ক, কর ও ভ্যাটের বকেয়া এই অর্থ নগদের পাশাপাশি সরকারের দুই সংস্থার মধ্যে বুক অ্যাডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে সমন্বয় করার কথা ওই বৈঠকে তুলে ধরে পেট্রোবাংলা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০ মে এনবিআরে অনুষ্ঠিত অর্থ বিভাগ, জ্বালানি বিভাগ, পেট্রোবাংলা ও বিপিসির যৌথ সভার কার্যবিবরণীর তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে বকেয়া পাওনার ১৩ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা (সুদ ছাড়া) পর্যায়ক্রমে বুক অ্যাডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বকেয়া বাকি রাজস্বও চলতি অর্থবছরে বুক অ্যাডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে পরিশোধে অর্থ বিভাগ ব্যবস্থা নেবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বকেয়া ইস্যুতে আইএমএফের উদ্বেগ</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঋণের শর্ত হিসেবে এনবিআরকে রাজস্ব আদায়ে নানা কৌশল অবলম্বন এবং বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিল আইএমএফ মিশন। সেখানে কাস্টমস বিভাগের পক্ষ থেকে রাজস্ব আদায়ের কৌশলপত্রে পেট্রোবাংলা ও বিপিসির কাছে বিপুল পরিমাণ বকেয়া টাকা আদায়ের মাধ্যমে লক্ষ্যপূরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করে আইএমএফ। পরে ঋণদাতা সংস্থাটির উদ্যোগে অর্থ মন্ত্রণালয়, এনবিআর এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি সামনে আসে।</span></span></span></span></span></p>