<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর আন্দোলনে হতাহতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক মন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের পদধারী ৫৫৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ২১৭টি হত্যা মামলায় শেখ হাসিনার নাম রয়েছে। মামলার অভিযোগে তাঁকে নির্দেশদাতা উল্লেখ করা হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সরকার পতনের পর বিভিন্ন সময় সাবেক মন্ত্রী, এমপি, সরকারের সচিব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতনসহ রাজনৈতিক পদধারী ৩৪৩ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বক্তিরা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, সাবেক মুখ্য সচিব ও উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, সাবেক যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ, জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি শাহরিয়ার কবির, একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু, সাবেক প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রূপা ও প্রধান বার্তা সম্পাদক শাকিল আহমেদ, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত রয়েছেন। সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, আব্দুস সোবহান গোলাপ, হাজি সেলিম, সেলিম আলতাফ জর্জ, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, শহিদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক ডিসি মশিউর রহমান, সাবেক পুলিশ পরিদর্শক আবুল হাসান, মাজহারুল ইসলাম, বহিষ্কৃত সেনা অফিসার মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহাইল, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার সাবেক পরিচালক কমডোর মনিরুল গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা আসামিদের বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সাবেক মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত মামলা : শেখ হাসিনার পর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১২টি হত্যা মামলা হয়েছে। সাবেক সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে ১৭০টি, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বিরুদ্ধে ৬২টি, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের বিরুদ্ধে ৫৮টি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে ৬৫টি, সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতের বিরুদ্ধে ৬২টি, সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে ৩৭টি, জুনায়েদ আহমেদ পলকের বিরুদ্ধে ৫৫টি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩৫টি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে ৪৯টি, হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে ৩৫টি, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বিরুদ্ধে ২৮টি, রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে ২৭টি, দীপু মনির বিরুদ্ধে ২৫টি, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ২২টি, বোন শেখ রেহেনার বিরুদ্ধে ২০টি, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ১৬টি, সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বিরুদ্ধে ১৫টি, সাবেক যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যত মামলা : পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ১২৩টি হত্যা মামলা হয়েছে। সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে ১১৮টি, পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ১০৮টি, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ৯৫টি, সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৩০টি, সাবেক ডিসি মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইনের বিরুদ্ধে ২২টি, সাবেক আইজিপি শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ১১টি এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্যান্য মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা : আমির হোসেন আমুর বিরুদ্ধে ১০টি, শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে ১৬টি, সাদেক খানের বিরুদ্ধে ১৫টি, খসরু চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২১টি, সাবেক সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদের বিরুদ্ধে ১৪টি, ওয়াকিল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১৯টি, ইলিয়াস মোল্লার বিরুদ্ধে ১৬টি, মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সনের বিরুদ্ধে ১৩টি, মশিউর রহমান সজল মোল্লার বিরুদ্ধে ১৬টি, হাবিব হাসানের বিরুদ্ধে ২১টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক হানিফের বিরুদ্ধে ২১টি, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে ৪২টি, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের বিরুদ্ধে ৩৭টি হত্যা মামলা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জামিন পেয়েছেন ২২ জন : গ্রেপ্তারের পর সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীসহ ২২ জন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন মেজর (অব.) আব্দুল হাফিজ, নাট্যনির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু, কানাডাপ্রবাসী তানভীর, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি সৈয়দ সাদাত আলমাস কবীর, ফায়ার ফাইটার আব্দুল হান্নান, স্বপন, জালাল উদ্দীন রানা, মাহবুব হোসেন, নওসের হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন, ব্যবসায়ী আসলাম সেরনিয়াবাত, আনোয়ার, অমিত হাসান রনি, নজরুল, হাসনা বানু, শওকত ইসলাম, আজিজুর রহমান, আবু ওয়ায়েজ ও শাহাবুদ্দিন হাওলাদার। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রতিটি মামলা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তৎপর। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দেখতে চায় সাধারণ মানুষ। এ জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে সরকার প্রয়োজনে বিশেষ টিম গঠন করতে পারে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p>