<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ২৮টি দলের আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত। এসব দল গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। আমন্ত্রণ না পাওয়া দলগুলোর মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলো ছাড়াও নতুন কিছু রাজনৈতিক দলও রয়েছে। রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী বিএনপি নেতৃত্বাধীন আন্দোলন থেকে বের হয়ে হঠাৎ নির্বাচনে অংশ নেওয়া নেতাদের দলও। নতুন ও ছোট রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে আমাদের দলের নিবন্ধন বাতিল করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া আমাদের দলের প্রতীকে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের অনেককেই আমরা চিনি না। চাপের মুখে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না গতকাল শনিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের দল আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করে না। দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে  আমরা বিরত ছিলাম। নির্বাচনী আইন অনুসারে পর পর তিনটি সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিল হতে পারে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই আইন দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের বলা হয়েছিল, নির্বাচনে অংশ না নিলে নিবন্ধন বাতিল করা হবে। এ ছাড়া আমাদের দলের প্রতীক ব্যবহার করে যাঁরা প্রার্থী হয়েছিলেন তাঁদের অনেককেই আমরা চিনি না। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে চিঠি দিয়ে আমাদের সংলাপে ডাকার অনুরোধ করেছি। আশা করছি পরবর্তী সংলাপে ডাক পাব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span>  </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন পাওয়া দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইব্রাহিম মিয়া বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমরা দুইবার চিঠি দিয়ে কোনো সাড়া পাইনি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংলাপের জন্য জাতীয় পার্টিকে (জাপা) এখনো আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দলটির ব্যাপারে আপত্তি এসেছে। এই আপত্তির পেছনে অভিযোগ হচ্ছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সহযোগী ছিল জাপা। এ ছাড়া যেসব দল ২০১৪ ও ২০২৪ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের  অধীন  একতরফা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে প্রার্থী দিয়েছিল তাদের আপাতত সংলাপে না-ও ডাকা হতে পারে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিপপের প্রধান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ এ বিষয়ে গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংলাপে যেসব  রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বার্তা পাওয়া যাচ্ছে। এই বার্তার মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে গ্রিন সিগন্যাল পাচ্ছে আওয়ামী লীগের  স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে যেসব দল আন্দোলন করেছিল সেসব দল। আর আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটের দলগুলোর জন্য রেড সিগন্যাল মিলছে। এসব দলের নেতারা এরই মধ্যে গণহত্যার মামলায় অভিযুক্ত। এ ছাড়া একপাক্ষিক দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব দল অংশ নিয়ে ওই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বলে চালানোর মদদ জুগিয়েছিল সেসব দলও গুরুত্ব হারিয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যেসব দল অংশ নেয়   </span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৮ রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। এসব দলের মধ্যে নামসর্বস্ব কিছু দল বিস্ময়করভাবে শতাধিক আসনে প্রার্থী দেয়। সে সময় দলগুলোর পক্ষ থেকে প্রথম দিকে প্রার্থীদের পরিচয় ও সংখ্যা গণমাধ্যমকে জানাতেও ব্যর্থ হয়।   </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নির্বাচনে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকটি দল ছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত। আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টিসহ শরিক অন্য দলগুলোকে ৩২ আসন ছেড়ে দেয়। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন, জাকের পার্টির ২১ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, জাসদের (ইনু) ৬৬ জন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ৭৯ জন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ৬৩ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের ৪৫ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএমের ৫৬ জন, বাংলাদেশ তরীকত  ফেডারেশনের ৩৮ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ৪২ জন,  ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ৩৯ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ৩৭ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ৩০ জন, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির ২৬ জন, গণফ্রন্টের ২১ জন, জাতীয় পার্টি-জেপির ১৩ জন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ১৬ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ১১ জন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের ১০ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির পাঁচজন, গণতন্ত্রী পার্টির ১০ জন,  গণফোরামের একাংশের ৯ জন, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের চারজন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপের পাঁচজন এবং  বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএলের চারজন প্রার্থী ছিলেন।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে ২০১৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রায় ৪০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র মাত্র ১২টি দল অংশ নেয়। এই নির্বাচনে ১৫৩টি আসনে আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিক দলগুলোর নেতারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ প্রায় বেশির ভাগ দল এই নির্বাচন বর্জন করে। </span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেসব দল, জোট ও সংগঠন সংলাপে আমন্ত্রণ পেয়েছে</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ৫ অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টির সংলাপ হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল শনিবার গণফোরাম, এলডিপি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দল, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) আলোচনায় অংশ নেয়। সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া দলগুলো আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিল। সংগঠন হিসেবে আমন্ত্রণ পাওয়া হেফাজতে ইসলামের সদস্যরাও আওয়ামী লীগ সরকার আমলে নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ রয়েছে।</span></span></span></span></p>