<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের অবসানের আজ তিন মাস পূর্ণ হচ্ছে। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ও দেশ ছাড়ার পর শুরু হয় গণতন্ত্রের পথে রাষ্ট্র সংস্কারের মাধ্যমে উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের যাত্রার প্রত্যাশা নিয়ে নতুন এক অধ্যায়। ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বয়সও তিন মাস পূর্ণ হওয়ার পথে। এই তিন মাস মূল্যায়নে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ভঙ্গুর সামষ্টিক অর্থনীতিতে খানিকটা শৃঙ্খলা ফিরেছে। আর রাজনীতিবিদরা সংস্কার এবং এখনো দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্পষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ায় এক ধরনের অস্বস্তির কথা জানিয়েছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারের অর্থ বিভাগের তথ্য মতে, নবগঠিত এবং ব্যতিক্রমী এ সরকারকে কাজ শুরু করতে হয় আগের সরকারের রেখে যাওয়া ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে। এর মধ্যে পুঞ্জীভূত বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছয় হাজার ৭৯০ কোটি ডলার। এই বিপুল ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধের চাপ এখন বর্তমান সরকারের ঘাড়ে। এ ছাড়া শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের অবসানের পর দেশবাসীর কাছে উন্মোচিত হতে থাকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের তথ্য। সম্প্রতি ফিন্যানশিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে ১৭ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ সরিয়েছেন। গত শনিবার টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে একই তথ্য জানান। এ ছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য উল্লেখ করে গণমাধ্যমে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে যে শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরে উন্নয়নের নামে ১৭ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে, যার ৪০ শতাংশই লুটপাট হয়েছে। পর্যবেক্ষকমহলের মতে, আর্থিক খাতের এই বিশৃঙ্খলা ছাড়াও একের পর এক বিভিন্ন সংগঠনের দাবি-আন্দোলন, পুলিশ প্রশাসনকে কাজে ফেরানোসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয় এই সরকারকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা অনুসারে রাষ্ট্র সংস্কারই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ বলে বিবেচিত হলেও তৃতীয় মাসে এসে তা কিছুটা প্রশ্নের মুখে পড়ে। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ১১টি বিষয়ে দুই দফায় ১১টি সংস্কার কমিশনের ঘোষণা দেওয়া হলেও পাঁচটি কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন এখনো জারি করা হয়নি। নির্বাচন হতে যত দেরি হবে ততই পরাজিত শক্তি মাথাচাড়া দিতে পারে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই আশঙ্কায় বিএনপিসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের শরিক দলগুলো দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে তৎপরতা বাড়িয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মন্তব্য এবং সে কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাঁর পদত্যাগ দাবি করলেও বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত প্রকাশের ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনের অবস্থানও বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর সমর্থন পায়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তারা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের পক্ষে নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থনের পাশাপাশি সমালোচনাও সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে। শিক্ষাঙ্গন এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক নয় বলে অনেকে মনে করছে। এ ছাড়া গত মাসে উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে ছিল, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করার অভিযোগে ১২ বিচারপতিকে কোনো বেঞ্চ না দেওয়া এবং সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী চূড়ান্তভাবে বাতিল হওয়া। এর ফলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সম্পর্কিত একটি বিতর্কিত বিষয়ের নিষ্পত্তি ঘটে।   </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে দ্রুত নির্বাচন দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দাবির মধ্যে গত ৩১ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন পুুনর্গঠনে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। তার আগে এই কমিটি গঠনের আগাম খবর জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের সরকারের নির্বাচনমুখী প্রক্রিয়া গ্রহণ করার যে কাজ, সেটা শুরু হয়ে গেছে। আপনারা বলতে পারেন নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়ে গেছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তৃতীয় মাসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর তৎপরতা জনমনে অনেকটা স্বস্তি এনেছে বলেও অনেকের ধারণা। তবে অস্বস্তি রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উচ্চমূল্য নিয়ে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর্থিক খাতে পদক্ষেপ, বিশ্লেষকরা যা বলছেন : ব্যাংক খাতের বিশ্লেষকরা জানান, নতুন গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ব্যাংকে আস্থা ফিরতে শুরু করে। এর প্রতিফলন দেখা যায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে। আগস্ট মাসেই ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায় রেমিট্যান্সপ্রবাহ। রিজার্ভ সুসংহত হওয়া শুরু করে। আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের কাছে ঋণ সহায়তা চাওয়া হয়। আগের সরকারের সময়ে নেওয়া বিপুল অঙ্কের ঋণ থাকার পরও সংস্থাগুলো সরকারের ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে সাড়া দিয়ে সংস্কারে পাশে থাকার আশ্বাস দেয়। গভর্নর রিজার্ভ থেকে অবাধে ডলার বিক্রি করা বন্ধ করে দেন। আগের সরকারের সময় ক্রমেই পতনে থাকা রিজার্ভ বেড়ে এখন প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে এসে থেমেছে। রিজার্ভ সামনে আরো বাড়বে বলে আশা করা যায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ১১ সেপ্টেম্বর ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের লক্ষ্যে ছয় সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই টাস্কফোর্স প্রধানত আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষার্থে ব্যাংকিং খাতের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি, মন্দ সম্পদ এবং প্রধান প্রধান ঝুঁকি নিরূপণ, দুর্বল ব্যাংকগুলোর আর্থিক সূচক পর্যালোচনা, ঋণের প্রকৃত অবস্থা নিরূপণ, প্রভিশন ঘাটতি নিরূপণ, তারল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা, নিট মূলধন নির্ণয়, সম্পদের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মন্দ সম্পদকে পৃথক্করণসংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মোস্তফা কে মুজেরী কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে তা অর্থনীতিকে সচল করার জন্য ইতিবাচক, তবে পর্যাপ্ত নয়। শিল্প-কারখানায় কিছুটা শৃঙ্খলা এসেছে, রেমিট্যান্স বেড়েছে, এটা ভালো দিক। তবে মূল্যস্ফীতি কমাতে শুধু নীতি সুদহার বাড়ালেই হবে না, বাজার ব্যবস্থাপনায় আরো গভীর নজর দিতে হবে। অর্থনীতিকে আরো সচল করতে হলে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ যাতে বাড়ে সে ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলোকে সচলের ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষি উৎপাদন ত্বরান্বিত করতে হবে। তাহলে কর্মসংস্থান বাড়বে, অর্থনীতি গতিশীল হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক নেতাদের মূল্যায়ন : স্বৈরাচার পতনের পর তিন মাসের পরিস্থিতি মূল্যায়নে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ছাত্র-জনতার দেশ-কাঁপানো আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। ফলে ১৫ বছরের দুঃশাসন থেকে জনগণ মুক্ত হয়েছে। কিন্তু যে কারণে এই পরিবর্তন সেই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে সংশয় এখনো কাটেনি। নির্বাচন কবে তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ১৫ বছরে জনগণের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। জনগণ তার প্রত্যাশা থেকে সরে আসেনি। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে এলে জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণ হতে পারে। সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের কার্যক্রম শুরু করেছে। কিন্তু একটি অনির্বাচিত সরকার ব্যাপকভাবে সংস্কার কতটুকু করতে পারে, সে দিকটিও তাদের ভাবতে হবে। অগাধ কল্পনা বাস্তবতাবহির্ভূত হয়। সরকারকে এ বিষয়টি মনে রাখা উচিত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র দলের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট বিদায় নিয়েছে। বিপ্লবের এই স্পিরিট ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে বলে আশা করি। তবে সরকার দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার প্রস্তুতি এখনো সম্পন্ন করতে পারেনি। আশা করি, দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দেবে সরকার।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মতিউর রহমান বলেন, সরকার একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ দেশের সর্বস্তরে দুর্নীতি ও দলীয়করণ থেকে রাহুমুক্ত করতে সরকার কাজ করছে। দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার। ব্যাংক খাতে সংস্কার আনা হচ্ছে। এই দিকগুলো ইতিবাচক।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক সাইফুল হক বলেন, জনগণের বিশাল প্রত্যাশার চাপ নিয়ে সরকার পরিচালনায় নানা ঘাটতি ও দুর্বলতা থাকলেও গত তিন মাসে দেশের ভঙ্গুর সামষ্টিক অর্থনীতিতে খানিকটা শৃঙ্খলা ফিরেছে। অর্থনীতি কিছুটা সচল হতে শুরু করেছে। গণহত্যা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিচারে গঠিত ট্রাইব্যুনাল এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। ধীরগতিতে হলেও অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। সরকার বহির্বিশ্বের সমর্থন আদায়ে অনেকটা সক্ষম হয়েছে। রেমিট্যান্স আসার গতি ও রিজার্ভ বেড়েছে। সংস্কার কমিশনগুলো কাজ করছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছার ঘাটতি না থাকলেও তাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, শ্লথগতি, নানামুখী চাপ, সরকার পরিচালনায় অনভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার অভাব বলে মনে করেন সাইফুল হক। তিনি বলেন, সরকারের কিছু কাজে জনমনে বিভ্রান্তির সুযোগ তৈরি হয়েছে। তাদের কিছু পদক্ষেপ ও ঘোষণাও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি মানুষকে নাজেহাল করে তুলছে। জন-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী নির্বাচন ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের দুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার ছিল জনজীবনে স্বস্তি ও নিরাপত্তা বিধান করা। এ জন্য সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে। কিন্তু বাজার পরিস্থিতি এখনো বেসামাল। জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতা উদ্বেগজনক অবস্থায় রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ প্রশাসনকে এখনো পুরোপুরি কার্যকর করা যায়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাইফুল হক আরো বলেন, সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে জাতীয় মতৈক্যের ভিত্তিতে জরুরি সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে সম্ভব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা এবং নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে মর্যাদার সঙ্গে বিদায় নেওয়া। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনো দৃষ্টিগোচর তেমন কোনো তৎপরতা নেই। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি হয়েছে আগের আইনে। এটি নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার শুরুতে তো তার কাজের কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি। এখনো তাদের রোডম্যাপ পরিষ্কার নয়। তার পরও আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল, তারা দ্রুত জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাবে। বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের প্রধান দাবি ছিল, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের আলোচনা শুরু করে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার। এসব কাজে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় নিয়ে পরামর্শ করবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তারা এখনো সফল হয়নি। বরং সরকার মন খুলে সমালোচনার কথা বললেও কোনো কোনো মহল নানাভাবে মানুষের কণ্ঠ রোধ করার অপচেষ্টা চলাচ্ছে। এরই মধ্যে আন্দোলন করতে গিয়ে শ্রমিকের রক্ত ঝরেছে। সরকার এসবের দায় এড়াতে পারে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংস্কারসহ অন্যান্য কাজও দৃশ্যমান নয় উল্লেখ করে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপদেষ্টাদের মধ্যে নানা কথা শুনে মনে হয় সমন্বয়হীনতাও আছে। আন্দোলনের দাবিদার কোনো কোনো অংশ এমন আচরণ করছে যে তাতে মানুষের স্বস্তি আসছে না, বরং বিরক্তি বাড়ছে। কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর কোথাও কোথাও নির্যাতনের তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে স্বস্তি নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্তরের কথা দেশবাসী বুঝতে পারছে না। এসবের দ্রুত সমাধান না হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজের সংকট তৈরি হতে পারে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p>