<p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, শোডাউন ও হুমকির কারণে আসন্ন ইজতেমা নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। এবারের (২০২৫) বিশ্ব ইজতেমাও আগের ধারাবাহিকতায় হবে। প্রথম পর্বের ইজতেমা হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি, যার আয়োজক থাকবেন জুবায়েরপন্থী আলেম-ওলামারা। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা হবে ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি। এ পর্বের আয়োজক থাকবেন তাবলিগের সাদপন্থী আলেমরা। টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ এবং কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণের স্থায়ী সমাধানে আগামী এপ্রিল-মেতে উভয় পক্ষের মুরব্বিদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। ইজতেমা নিয়ে কোনো ধরনের বিবাদ সহ্য করবে না সরকার। এ লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। খবর বিশ্বস্ত সূত্রের। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র আরো জানায়, আগামী শুক্রবার কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে হবে তাবলিগ জামাতের জুবায়েরপন্থীদের। এরপর যথাক্রমে দুই সপ্তাহ সাদপন্থী এবং চার সপ্তাহ জুবায়েরপন্থীরা মসজিদ নিয়ন্ত্রণ করবেন। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার উভয় পক্ষের সঙ্গে সমাধান করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এ বিষয় ও ইজতেমার বিষয়ে তাবলিগ জামাতের কোনো পক্ষ বাড়াবাড়ি করলে তা কঠোর হস্তে দমন করবে সরকার। তবে বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও ধর্ম উপদেষ্টার কেউই মন্তব্য করতে রাজি হননি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিবদমান তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষকে নিয়ে গত ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমার মাঠ হস্তান্তর ও প্রস্তুতি, নিরাপত্তা, বিদেশি অতিথিদের ভিসা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, ভাসমান ব্রিজ নির্মাণ, জরুরি দুর্যোগে ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ব্যবস্থা, আখেরি মোনাজাতের দিন যানজট নিরসন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তবে কোন পক্ষ কোন পর্বে ইজতেমা করবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। গত মঙ্গলবার বিষয়টির ফায়সালা হয়েছে। সেখানে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, নাহিদ ইসলামসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ঢাকার অদূরে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ১৯৬৭ সাল থেকে হয়ে আসছে বিশ্ব ইজতেমা। মুসল্লিদের যাওয়া-আসায় সুবিধার জন্যে ২০১১ সাল থেকে সমাবেশটি দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়। এর পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই ভাগ হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত। ২০১৯ সাল থেকে আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রথম পর্বে জুবায়েরপন্থী এবং দ্বিতীয় পর্বে সাদপন্থীরা আয়োজক হিসেবে ভূমিকা রাখছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠেন জুবায়েরপন্থীরা। তাঁরা কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাবলিগ জামাতের সাদপন্থীদের তাদের সঙ্গে মিশে যাওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা গত ৫ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী মহাসম্মেলন করেন। সেখানে তাবলিগ জামাতের স্বঘোষিত আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে বাংলাদেশে আসার সুযোগ দেওয়া হলে অন্তর্বর্তী সরকারকেই দেশ ছেড়ে পালাতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এর এক দিন পর গত ৬ নভেম্বর ইজতেমায় মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিতের দাবির পাশাপাশি জুবায়েরপন্থীদের অসত্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে সাতটি শর্তে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন সাদপন্থীরা। এ নিয়ে উত্তেজনার পারদ বাড়তেই থাকে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বশেষ গতকাল বুধবার তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে পতিত ফ্যাসিস্টদের প্ররোচনায় ধর্মীয় দাঙ্গা লাগানোর কোনো ষড়যন্ত্র চলছে কি না, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন সাদপন্থী আলেমরা। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই আহ্বান জানান কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের ইমাম মুফতি আজীমুদ্দীন। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাবলিগ জামাতের বিবদমান দ্বন্দ্বের পর থেকে সাত বছর ধরে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে জুবায়েরপন্থীরা চার সপ্তাহ এবং সাদপন্থীরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। যদিও বিগত সরকারের এমন বৈষম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে আসছিলেন সাদপন্থীরা। এখন পুরো কাকরাইল মসজিদ দখল করে ১৫ নভেম্বর থেকে অবস্থান নিতে চান জুবায়েরপন্থীরা। কাকরাইল মসজিদের একটি অংশ এমনিতেই জুবায়েরপন্থীরা সারা বছর মাদরাসার নামে আলাদা করে রেখেছেন। কিন্তু হেফাজতপন্থী আলেমদের সাম্প্রতিক ঘোষণার প্রেক্ষাপটে জুবায়েরপন্থীরা সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাকরাইল মসজিদ স্থায়ীভাবে দখল নেওয়ার ঘোষণা দেওয়াকে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা করছি আমরা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সাদপন্থীরা বলেন, আগামী শুক্রবার থেকে সাদপন্থীদের কাকরাইল বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও গতকাল তাবলিগের নামে একটি রাজনৈতিক দলের চিহ্নিত নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে শক্তি প্রদর্শন করে দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন জুবায়েরপন্থীরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবে হেফাজতে ইসলাম ও কওমি মাদরাসার ছাত্ররা। তারা জুবায়েরপন্থীদের হাসিনা সরকারের দোসর বলেও মন্তব্য করে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"> </p> <p style="text-align:justify"> </p>