<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি। প্রতিবছরই ঘাটতি বাজেট। দেশি-বিদেশি উৎস থেকে ঋণ বাড়ছে। সমস্যা সমাধানে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর চাপ বাড়ছে সরকারের। এই চাপের মধ্যেই শুল্ককর পরিশোধে উদাসীন খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান। টানা ৪১ মাস ধরে আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) শুল্ককর বকেয়া রেখেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এ নিয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানকে ৩৭টি চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানায়, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত পেট্রোবাংলার ১৭ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা শুল্ককর বকেয়া রয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই বকেয়ার কারণে ফিসক্যাল ডিসিপ্লিন ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বকেয়া আদায়ে ব্যবস্থা নিতে এনবিআরকে চিঠি দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মো. জাকির হোসেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা গেছে, আমদানি করা এলএনজি বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হওয়ায় গ্যাস পরিবহনকারী কার্গো জাহাজ থেকে মহেশখালীতে অবস্থিত এলএনজি টার্মিনালে আনলোড করা হয়। এই ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরাসরি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাস্টমস আইন অনুযায়ী, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রেরিত বিল অব এন্ট্রিসহ আনুষঙ্গিক দলিলাদি সংশ্লিষ্ট কমিশনারেটে দাখিল করতে হয়। তাতে পণ্য শুল্কায়ন ও শুল্ককর পরিশোধ করে খালাসের বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু পণ্য চালান আমদানি হওয়ার এক মাস পরও বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা হয়নি, যা কাস্টমস আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম কাস্টমসের হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত শুল্ককর বকেয়া পড়েছে ১৭ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। এ সময় পর্যন্ত অপরিশোধিত বিল অব এন্ট্রির সংখ্যা ২৩৫টি। এ ছাড়া ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত বিল অব এন্ট্রির সংখ্যা ১০টি। এতে জড়িত শুল্ককরের পরিমাণ ৭৭৬ কোটি টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেট্রোবাংলায় ৩৭টি চিঠি দিয়ে তাগাদা</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বকেয়া আদায়ে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান বরাবর ৩৭টি চিঠি পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, প্রতি মাসে চট্টগ্রাম কাস্টম থেকে একাধিক চিঠি ও টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলেও চলতি বছরের আগস্টের পর কোনো বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারণ দর্শানোর নোটিশ</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বকেয়া পরিশোধ না করার জেরে ২০২২ সালে পেট্রোবাংলাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তবে এর কোনো উত্তর দেয়নি পেট্রোবাংলা। এরপর বকেয়া পরিশোধ না করা হলে কাস্টমস আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের বিন লক, পণ্য খালাস বন্ধ ও ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে বলে জানানো হয়। এই চিঠির উত্তরে পেট্রোবাংলা জানায়, অর্থ বিভাগ থেকে ভর্তুকি পেয়ে এলএনজি আমদানি পর্যায়ে বকেয়া শুল্ককর পরিশোধ করা হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অব্যাহতি চেয়ে চিঠি</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিঠির পর চিঠি পাঠানো হলেও কোনো জবাব দেয়নি পেট্রোবাংলা। তবে সর্বশেষ সংস্থাটি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং সরবরাহ কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে এলএনজি আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধের দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে এনবিআরের কাছে চিঠি দিয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেট্রোবাংলার বকেয়া ইস্যুতে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারি একটি দপ্তরের আইন পালনে আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। আইজিএমের বিপরীতে বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করেই পণ্যের হোম কনজাম্পশন কাস্টমস আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এতে নির্ধারিত সময়ে বিল অব এন্ট্রি দাখিল ও কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতার জন্য পেট্রোবাংলাকে বাধ্য করা প্রয়োজন। দীর্ঘদিন বকেয়া পড়ে থাকলে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম থেকে এলএনজির রিকন্সিলাশন ব্যাহত হচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><strong><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা চলছে</span></span></span></span></span></strong></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বকেয়া রাজস্ব প্রসঙ্গে জানতে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেজানুর রহমানের সঙ্গে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এরপর পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) মো. আব্দুল জলিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভ্যাটের টাকা আমরা নিয়মিত পরিশোধ করছি। আগের কিছু টাকা বকেয়া আছে। সেটা নিয়ে আমরা এনবিআরের সঙ্গে কাজ করছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংস্থাটির একজন পরিচালক কালের কণ্ঠকে বলেন, অনেক সময় ডাবল ট্যাক্সেশন হয়ে যায়। এলএনজি আমদানির সময় একবার ভ্যাট দিতে হয়। আবার যখন এই এলএনজি গ্যাস আকারে আসে তখন আবার ভ্যাট আরোপ করা হয়। একই জিনিসের ওপর দুবার ভ্যাট হয়ে গেল। এ ছাড়া আমদানির সময় অগ্রিম আয়কর দিতে হয়। বছর শেষে যে টাকা এআইটি দেওয়া হয়েছে সে টাকা থেকে কিছুটা ফেরত পাওয়ার কথা। কিন্তু এনবিআর সে টাকা ফেরত দেয় না। এ ধরনের অনেক ইস্যু আছে, যেগুলো নিয়ে এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা চলছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><strong><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভ্যাট পরিশোধে বুক অ্যাডজাস্টমেন্ট</span></span></span></span></span></strong></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমদানি শুল্কের পাশাপাশি ভ্যাট বাবদ ২২ হাজার কোটি টাকারও বেশি বকেয়া আছে পেট্রোবাংলার। তবে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৩ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বকেয়া আদায়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বুক অ্যাডজাস্টমেন্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই ধারাবাহিকতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তিন হাজার ২৭৮ কোটি টাকা এনবিআরকে পরিশোধ করতে পেট্রোবাংলাকে ঋণ দেবে অর্থ বিভাগ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>