<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে বিদেশি ফলের বাড়তি দরের কারণে ভোক্তা এসব ফল ভোগ করছেন কম। ফলে আমদানিও কমেছে। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম পাঁচ মাসে গত অর্থবছরের তুলনায় আপেল, মাল্টা, কমলা, আঙুর, নাশপাতি ও খেজুরের আমদানি হয়েছে ৮৭ হাজার ৩৯ টন। শতকরা হিসাবে গত অর্থবছরের তুলনায় কম আমদানি হয়েছে ৭৯.৪৯ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদেশি ফলের দামের চেয়ে শুল্ক বেশি হওয়ায় আর ভোক্তারা কম কেনার কারণে এসব ফলের চাহিদা কমেছে। তাই আমদানিও কম হচ্ছে। তবে রোজার আগে বিদেশি ফল আমদানি বাড়বে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের তথ্যে দেখা যায়, চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে আপেল, কমলা, মাল্টা, আঙুর, নাশপাতি ও খেজুর আমদানি হয়েছে ৮৭ হাজার ৩৯ টন। অথচ একই সময় গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) আমদানি হয়েছিল চার লাখ ২৪ হাজার ৪০১ টন। এবার আমদানি কমেছে তিন লাখ ৩৭ হাজার ৩৬২ টন। শতকরা হিসাবে আমদানি কমেছে ৭৯.৪৯ শতাংশ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর মধ্যে আপেল আমদানি হয়েছিল এক লাখ ৪৪ হাজার ৯৫১ টন। সেখানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে একই সময় এসেছে মাত্র ৬২৫ টন। ওই হিসাবে এবার মাত্র ০.৪৩ শতাংশ আপেল আমদানি হয়েছে। মাল্টা ও কমলা আমদানি হয়েছে ৩৮.০৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এসেছে ৫৮ হাজার ৮৮৩ টন। আগের অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল এক লাখ ৫৪ হাজার ৫৬৪ টন। এবার কম আমদানি হয়েছে ৯৫ হাজার ৬৮১ টন। আঙুর আমদানি হয়েছে ২২ হাজার ৪৫৭ টন। অথচ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ২৯ হাজার ৮৮৮ টন। এবার আমদানি হয়েছে ৭৫.১৩ শতাংশ। নাশপাতি এসেছিল গত অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ৯ হাজার ৬৫৩ টন। এবার আমদানি হয়েছে ২০.৬৪ শতাংশ। অর্থাৎ এবার মাত্র এক হাজার ৯৬৫ টন আমদানি হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রোজায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে খেজুরের। এবার আমদানি হয়েছে তিন হাজার ১০৯ টন। গত অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ৮৫ হাজার ৩৪৫ টন। এবার আমদানি কমেছে ৮২ হাজার ২৩৬ টন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ফলের আড়ত ফলমুণ্ডিতে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে মানভেদে আপেল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, মাল্টা ও কমলা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা, আঙুর বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা, নাশপাতি ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। আর খেজুরের মধ্যে আজওয়া প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে মানভেদে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা, মরিয়ম এক হাজার ২৫০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা, জিহাদি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, খুরমা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে এসব ফলের দাম প্রতিকেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেশি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, চার বছর আগেও ৩৫টি দেশ থেকে ফল আমদানি করা হতো। এখন আমদানি করা হয় ২২টি দেশ থেকে। গত কয়েক বছরে জাহাজভাড়া বেড়ে যাওয়ায় আমদানিকারকরা কাছাকাছি উৎস থেকেই ফল আমদানিতে ঝুঁকেছেন। এতে ফল আমদানির উৎস দেশের সংখ্যা কমে গেছে। এবার দেশে সবচেয়ে বেশি ফল আমদানি হয়েছে ভারত, পাকিস্তান, চীন ও অস্ট্রেলিয়া থেকে। এর বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকেও ফলের চালান চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফলের আমদানিকারকদের দাবি, দুই বছর ধরে ফল আমদানিতে শুল্ক প্রায় দ্বিগুণ। কিছু ফলের দামের চেয়েও শুল্ক বেশি। এ ছাড়া লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খোলা, ডলার সংকট ও ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতার কারণে বিদেশি ফল আমদানি কমেছে। এই পরিস্থিতিতে রোজায় চাহিদা বাড়লে সরবরাহে ঘাটতি হবে। তখন দাম আরো বাড়বে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম ফলমুণ্ডি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, কয়েকটি কারণে দেশে বিদেশি ফল আমদানি কমে গেছে। এর মধ্যে ডলার সংকট, অতিরিক্ত শুল্ক ও আন্তর্জাতিক বাজারে ফলের দাম বেশি হওয়ায় আমদানিকারকরা ফল আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগে এক কনটেইনার আপেল-মাল্টায় ডিউটি দিতে হতো ১২ লাখ টাকা। এখন সেটা দিতে হচ্ছে ২৩ লাখ টাকা। নগদে বেড়ে গেছে ১১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ডলার সংকটের কারণে আমরা এলসি করতে পারছি না। সব মিলিয়ে আমদানি কমেছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব মো. তাহেরুল ইসলাম মুন্না কালের কণ্ঠকে বলেন, ফল আমদানি কমে যাওয়ার বড় কারণ হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ডলার সংকট। ব্যাংকগুলোতে গিয়ে এলসি করতে পারেননি ফল আমদানিকারকরা। এ ছাড়া আগে যেখানে এক শ কনটেইনার ফল আমদানি করার সুযোগ ছিল, সেখানে আওয়ামী লীগ সরকার আমদানি করার সুযোগ দিয়েছে মাত্র এক-দুই কনটেইনার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, রোজা আসতে আরো মাসে তিনেক বাকি। এর মধ্যে অনেক আমদানিকারক ফল আমদানির জন্য আমদানি অনুমতিপত্র নিচ্ছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে আমদানি পর্যায়ে আরোপিত অগ্রিম কর পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে এই সুবিধা আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। অর্থাৎ আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত খেজুর আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ও অগ্রিম কর ছাড়ের এই সুবিধা পাবেন আমদানিকারকরা। সুতরাং মনে হয় না, রোজায় বিদেশি ফলের সংকট হবে। কারণ দেশেও এখন পর্যাপ্ত বিদেশি ফলের আবাদ হচ্ছে। আর এখন সারা বছর দেশি ফলও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।</span></span></span></span></p>