<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গভীর সংকটে দেশের তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল ও নিট পোশাক খাত। শিল্প মালিকরা বলছেন, জ্বালানির সংকট, শ্রমিক অসন্তোষ ও ব্যাংক খাতের অস্থিতিশীলতা এই খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এতে গত এক বছরে তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার ও টেক্সটাইলশিল্পের ১৪০টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতে ৭৬টি, নিট খাতে ৫০টি এবং টেক্সটাইল খাতের ১৪টি কারখানা রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক বছরে ১৪০টি কারখানার মোট ৯৪ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন বলে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। সম্ক্রতি বেক্সিমকো গ্রুপ তাদের ১৫টি পোশাক কারখানার প্রায় ৪০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। সব মিলিয়ে বন্ধ ১৫৫ কারখায় এক লাখ ৩৪ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার, কাঁচামাল আমদানিতে এলসি সমস্যা, শিল্পে অব্যাহত গ্যাসসংকট, গ্যাস ট্যারিফ বৃদ্ধি করা, বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না পাওয়া, অব্যাহতভাবে শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বাড়ায় অনেকে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছেন না। আবার অনেকে কারখানায় শ্রমিকদের বেতন দিতে না পেরে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের রপ্তানি আয়ের সিংহ ভাগ অবদান রাখা শিল্পে অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি বাজারে ভাগ বসাচ্ছে প্রতিবেশী দেশগুলো। এতে কারখানার মালিক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি দীর্ঘ মেয়াদে দেশের রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভাটা পড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশটিতে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে ৩.৩৩ শতাংশ। এর বিপরীতে ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া থেকে পোশাক আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। গত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আগের বছরের তুলনায় ভারতের পোশাক রপ্তানি ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্রয়প্রবণতার এই পরিবর্তনকে ব্যবসায়ীরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রবণতা মোকাবেলায় বাংলাদেশের পোশাক খাতকে নতুন কৌশল নিতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) জানিয়েছে, এক বছরে সংগঠনটির সদস্যভুক্ত ৭৬টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানায় কাজ করা ৫১ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। শ্রমিকদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারছে না অন্তত ১৫৮টি কারখানা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) জানিয়েছে, এক বছরের মধ্যে এই খাতের ৫০টির বেশি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৩৫ হাজারের বেশি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সূত্র জানায়, বিটিএমএর ১৪টি বৃহৎ কারখানা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এসব কারখানায় কাজ করা প্রায় আট হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিটিএমএ বলেছে, বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার মূল্যমান কমায় বস্ত্র খাতসহ উৎপাদনমুখী শিল্প-কারখানা কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এতে চলতি মূলধনের ঘাটতিতে পড়েছেন তাঁরা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত পোশাকশিল্পের অস্থিরতার মধ্যেই নতুন করে বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠী তাদের ১৫টি পোশাক কারখানার প্রায় ৪০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। এ জন্য গাজীপুরে রপ্তানিমুখী পোশাক ও বস্ত্র কারখানাগুলো কার্যাদেশ পায়নি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন কারণ দেখিয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যদিও শ্রমিকদের দাবি, অর্ডার এলেও মালিকপক্ষ নিজেরাই তা ফেরত দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। গত ১৫ ডিসেম্বর জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে শিল্পগোষ্ঠীটির সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ছাঁটাই কার্যকরের কথা জানানো হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেক্সিমকোর একটি কারখানার চাকরি হারানো শ্রমিক তানজিনা বেগম (৩৬) বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বন্ধ হওয়ার পাঁচ বছর আগে যোগ দিয়েছিলাম। জীবনে জৌলুস না থাকলেও পরিবারের পাঁচ সদস্যের তিন বেলা খাবার জুটত বেতনের টাকায়। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন সেই পথ বন্ধ। রংপুরে গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা ও স্কুলপড়ুয়া মেয়ে আছে।  টাকা না পাঠাতে পারলে তারা না খেয়ে থাকবে। তাদের ওষুধ বন্ধ হয়ে যাবে। মেয়ের লেখাপড়া শেষ হয়ে যাবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারখানার সামনে এসেছি, যদি কারখানা খোলে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন খবরের আশায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে ঝুঁকিতে না ফেলে বেক্সিমকো গ্রুপের অংশীজনদের সম্কদ বাজেয়াপ্ত করে কারখানা চালু রাখতে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার পরও কারখানা চালু রাখা যাচ্ছে না। তাই কর্তৃপক্ষ মজুরি দিতে না পেরে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠীর রপ্তানি আয়ের প্রকৃত চিত্র না থাকায় মজুরি পরিশোধে সরকারকে গত চার মাসে দায় নিতে হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার। প্রতিষ্ঠানটি একটি সরকারি ব্যাংক থেকে প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা উধাও করে দিয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চট্টগ্রামের দেশ গার্মেন্টসের হাত ধরেই সারা দেশে গার্মেন্টস ব্যবসার প্রসার হলেও এখন চট্টগ্রামেই কমছে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। গত চার মাসে চট্টগ্রামে গার্মেন্টস বন্ধ হয়েছে চারটি। অর্থাৎ আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে প্রতি মাসে একটি করে গার্মেন্টস বন্ধ হয়েছে। ফলে বেকার হয়েছে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক। এই সংকট নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের আহবান জানিয়েছেন বিজিএমইএর নেতারা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের পোশাক খাতে প্রায় ৭৬টি কারখানা চলতি বছরই বন্ধ হয়েছে। ছয় মাসে ৫০টির বেশি কম্কানি বন্ধ হয়েছে। বন্ধ কারখানার ৫১ হাজারের বেশি শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষ ও উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মালিকরা টিকে থাকতে পারেনি। গ্যাসসংকট, উচ্চ সুদহার, এলসি জটিলতাসহ নানা কারণে ছোট ও মধ্যম কম্কানিগুলো বন্ধ হয়েছে। সম্ক্রতি বড় কিছু কম্কানিও বন্ধ হয়েছে রাজনৈতিক ইস্যুর কারণে। আবার অনেকে শ্রমিকদের বেতন দিয়ে টিকতে পারছে না। রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা পোশাক খাত যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও অস্থিতিশীল হবে। এতে আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকা দেশগুলো বেশি লাভবান হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক বছরের মধ্যে নিট পোশাক খাতে ৫০টির বেশি কারখানা বন্ধ হয়েছে। আগামী তিন থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে আরো কারখানা বন্ধ হবে। এর মধ্যে ৩৫ হাজারের বেশি শ্রমিক বেকার হয়েছে। কারখানা ভাঙচুর করায় অনেক শ্রমিক চাকরি হারাচ্ছে। অন্যায়ভাবে কারখানা বন্ধ করায় মামলা দিচ্ছে, গ্রেপ্তার হচ্ছে। আমাদের আশপাশে আরো কিছু কারখানা বন্ধ হয়েছে। যারা চাকরি হারাচ্ছে, তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাতের পরিস্থিতি এই পর্যায়ে আসার পেছনে শ্রম অসন্তোষ অন্যতম। এ কারণে অনেকের শিপমেন্ট বাতিল হয়েছে। ফলে ব্যাংক সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। কারখানা বন্ধ করে দিয়ে আর ব্যবসা করতে দিচ্ছে না। কিছু ক্রেতার অনৈতিক আচরণের কারণেও অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন, একজন শ্রমিক কাজ হারালে সমাজে এর নানামুখী প্রভাব পড়ে। শ্রমিকরা শুধু অর্থনীতির দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হন না, মানবিকভাবেও বিপন্ন হয়ে পড়েন।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:center"><img alt="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/24-12-2024/2/kalerkantho-ft-6a.jpg" height="631" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/12 December/24-12-2024/2/kalerkantho-ft-6a.jpg" width="1000" /></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) শীর্ষ নেতা এবং সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটা শ্রমিকের চাকরি চলে যাওয়ার পর যখন বাসাভাড়া, বাজার করা বন্ধ হয়ে যায়, তখন তার প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ে, ওই অঞ্চলে পড়ে। এতে শ্রমিকরা শুধু অর্থনীতির দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, মানবিকভাবেও বিপন্ন হয়ে পড়ে। বেক্সিমকো গ্রুপের কারখানার ক্ষেত্রে যাদের লে-অফ করা হয়েছে, তাদের প্রতি মাসে বেতন বাবদ সাত কোটি টাকা লাগে। এই টাকা কে দেবে? অন্য কারখানার ক্ষেত্রে দু-তিন মাস কাজ করার পর যদি বেতন না দিতে পারে, তাহলে বুঝতে হবে সেই মালিকের কারখানা চালানোর মতো সামর্থ্য নেই। আবার কারখানা চালু রাখা, অর্ডার নেওয়া, কাঁচামাল কেনা, বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার পর শ্রমিকের মজুরি দেবে না, বঞ্চিত করবে, তা সমর্থনযোগ্য নয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই শ্রমিক নেতা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পোশাক কারখানা থেকে শ্রমিকদের ছাঁটাই নিয়মিত ঘটনা হয়ে গেছে। এতে শ্রমিকরা কোনো কারখানায় বেশিদিন বা স্থায়ীভাবে কাজ করতে পারছে না। এ জন্য কারখানার মালিকরা সুবিধা পায়। একটি হলো বর্ধিত বেতন দিতে হয় না। গ্র্যাচুইটিসহ অন্যান্য যে সুবিধা আছে, সেগুলোর অধিকারী হয় না। দ্বিতীয়ত, ছাঁটাই করার ক্ষেত্রে যারা একটু সংগঠিত হওয়া বা সংগঠন করার দক্ষতা অর্জন করে, তাদের কারখানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তৃতীয়ত, মালিকরা ছাঁটাইকে একটা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে নেয়, যাতে শ্রমিকদের মধ্যে চাকরি চলে যাওয়ার আতঙ্ক থাকে। এতে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিজিএমইএর সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের পোশাক খাতে অস্থিরতার কারণে প্রায় ৩০ শতাংশ ক্রয়াদেশ কমে গেছে। অস্থিরতা থাকলে ক্রেতারা ক্রয়াদেশ দিতে চায় না। আগে ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাক মালিকদের পেছনে ঘুরত। এখন ক্রয়াদেশ অন্য দেশে চলে যাচ্ছে। আমাদের এখন ক্রেতাদের খুঁজে বের করে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। চট্টগ্রামে গত চার মাসে লোকসান সামাল দিতে না পেরে বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত চারটি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এই সংকট নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করে প্রথমে সমস্যা চিহ্নিত করতে হবে। তারপর সমাধানে হাত দিতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মিথিলা অ্যাপারেলসের চেয়ারম্যান আযহার খান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার যদি আমাদের নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, তবে এই সংকট অনেক কমে যাবে। আমরা টিকে থাকতে পারব। যদি এলপি গ্যাস দিয়ে আমাদের কারখানা চালাতে হয়, তবে অনেক খরচ পড়বে। এত খরচ বাড়িয়ে উৎপাদনে টিকে থাকা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেতন বকেয়া থাকলে শ্রমিকরা তো বারবার রাস্তায় নামবেই। কারণ রাস্তায় না নামলে তাদের কথা কেউ শোনে না। এখন আমাদের প্রথম কাজ হলো শ্রমিকদের বেতন যেন বকেয়া না হয়। সব কিছু মাথায় রেখে সম্মিলিত ও পরিকল্পিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শ্রম সংস্কার কমিশন সুপারিশ প্রণয়ন করা হচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দর-কষাকষির সুযোগ, গার্মেন্টস সেক্টরে ভয়ভীতিহীন পরিবেশ তৈরি, ইউনিয়নচর্চার পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ যদি না নেওয়া হয়, তাহলে আজকের সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>