<blockquote> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><em><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিঙ্গুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের সিনিয়র অনাবাসিক ফেলো ও আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের (এআইবিএস) প্রেসিডেন্ট। গণতন্ত্র, উগ্রবাদ, ধর্ম, দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের রাজনীতি তাঁর গবেষণার বিষয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যুক্ত আছেন আলী রীয়াজ। গতকাল সংসদ ভবনে একান্ত আলাপচারিতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ, সংবিধান, সংস্কার, রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন কালের কণ্ঠের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ</span></span></em></span></span></p> </blockquote> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : এখনকার আলোচিত বিষয় সংস্কার। সারা দেশ উন্মুখ হয়ে আছে জানার জন্য কতটুকু সংস্কার, কোথায় সংস্কার, কতটুকু প্রয়োজন, কতখানি করা গেল। এখানে সবচেয়ে বড় বিষয় আমাদের সংবিধান সংস্কার। সেটা নিয়ে অনেক প্রত্যাশা, অনেক চাপ, সময়ের স্বল্পতাও আছে। নির্বাচনের চাপটাও ঘনীভূত হচ্ছে ক্রমাগত। আপনার অভিজ্ঞতা কেমন এখন পর্যন্ত? প্রায় গুছিয়ে এনেছেন যত দূর জানি। আগামী মাসের ৭ তারিখে সম্ভবত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আপনারা প্রতিবেদন পেশ করতে যাচ্ছেন। আপনাদের অভিজ্ঞতাটা সামগ্রিকভাবে কেমন?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : আমাদের অভিজ্ঞতার সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে সবার সহযোগিতা। সবার কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা পেয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে, অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে তাদের প্রস্তাবগুলো দিয়েছে। আমরা সিভিল সোসাইটির সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। তাঁরা এসেছেন, কথা বলেছেন। এবং বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে যাঁদের আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি, তাঁদের অধিকাংশই এসেছেন, কথা বলেছেন। সবচেয়ে বড় জিনিস, এই সহযোগিতার প্রধান দিক হচ্ছে প্রত্যেকেই আন্তরিকভাবে চাচ্ছেন যে পরিবর্তন আসুক, সংস্কার হোক। এবং এ ক্ষেত্রে একটা বড় ঐকমত্য আছে। এই ঐকমত্যটা আমরা বড়মাপের ক্ষতি, বড় মূল্য দিয়ে অর্জন করলাম তো। অনেকগুলো প্রাণ। তার পরও মানুষের মধ্যে আশা দেখতে পাচ্ছি। এটা হচ্ছে আমার সবচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা। আরেকটা দ্বিতীয় অভিজ্ঞতা, আমরা যত বেশি মতপার্থক্যের কথা বলি, তার চেয়ে অনেক বেশি মতৈক্য আছে আমাদের।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : এটা একটা বড় অর্জন নিশ্চয়ই, যেটা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে পাওয়া পরিবর্তিত বাংলাদেশে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : বড় অর্জন। বড় অর্জন মানুষ এখন ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেগুলোকে গুছিয়ে তুলে সবাইকে উপস্থাপন করা, সবাইকে এক জায়গায় আনা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সে কাজটা অন্তর্বর্তী সরকার করবে। কিন্তু আমি যেটা দেখি সেটা হচ্ছে, জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় অর্জন যে মানুষ এখন একটা সম্ভাবনাময় দেশ দেখতে পায়। এর সঙ্গে অংশীদার হতে চায়। এবং তারা মনে করে যে সবাই মিলে এটা করা যাবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : আপনারা তো ১২০টি দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করেছেন, মূল্যায়ন করেছেন। সেটার তুলনায় বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধান কতটা জনমুখী বা গণবিরোধী?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : এটা শুধু ১২০টি সংবিধান বিবেচনার বিষয় নয়। আমরা যদি শুধু আমাদের সংবিধানে হাত দিই, গত ৫২ বছরে এই সংবিধানের একটা বড় দিক বা ক্ষতি হয়েছে যেটা, ক্রমাগতভাবে এটা ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ করেছে। ক্রমাগতভাবে মানুষের অধিকার নিয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় দিকটা যেটা, সংবিধান মানুষকে যে অধিকার দিয়ে অধিকার সুরক্ষার ব্যবস্থা করবে, তা করেনি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : আমাদের নতুন সংবিধান বা সংবিধান সংস্কার যা আপনারা মানুষের সঙ্গে কথা বলে করছেন, সেটার ব্যাপারে আমরা কতটা আশাবাদী হতে পারি?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : আমাদের প্রথম বিবেচনা হচ্ছে, এই সংবিধানের একটা গণতান্ত্রিক রূপ দিতে হবে। ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণ বন্ধ করতে হবে। নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন নির্বাহী বিভাগের ওপর এক ধরনের জবাবদিহি তৈরি হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : সময়সীমাটাও দরকার। অনন্তকাল ধরে তো আর চলতে পারে না বিচারপ্রক্রিয়া।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : অবশ্যই নয়। এই সংবিধানের দায়িত্ব ছিল সেটাকে (অধিকার) সুরক্ষা দেওয়া। এটা হবে নাগরিকের হাতিয়ার, তার অধিকার সুরক্ষার হাতিয়ার। সেটা কি হয়েছে? সেটা হয়েছে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা প্রয়োগের হাতিয়ার।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : আমরা জানি, পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ বলত যে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৭২ সালের সংবিধানে ফিরে যাবে। কিন্তু তারা নিজেরাই কাটাছেঁড়া করেছে সংবিধানকে। এটা কি একটা প্রতারণা ছিল না?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : নিশ্চয়ই। দেখুন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৭২-এর সংবিধানের মর্মবস্তুর দিক থেকে সেটা পরিবর্তন হয়ে গেছে ১৯৭৫ সালে। আওয়ামী লীগের হাতেই হয়েছে, বাকশাল যখন করা হয়। চতুর্থ সংশোধনী কি করেছে? বাহাত্তরের সংবিধান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের যে মূল জায়গাটা ছিল, জনগণ হবে এটার মালিক। কিন্তু যখন </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৭৫ সালে বাকশাল ও চতুর্থ সংশোধনীর মধ্য দিয়ে ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিচার বিভাগকে এক ব্যক্তির অধীন করা হয়েছিল। শুধু মর্মবস্তুই নয়, কাঠামোগত দিক থেকেও বাহাত্তরের সংবিধানের মৃত্যু ঘটেছে ১৯৭৫ সালে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : আপনারা এর মধ্যে ২৫টি রাজনৈতিক দল ও তিনটি রাজনৈতিক জোটের সঙ্গে কথা বলেছেন। নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল কি এর মধ্যে আছে?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : না, তা নেই। আমরা কথা বলেছি মানে তাদের প্রস্তাবগুলো নিয়েছি। এর বাইরেও কিছু কিছু দল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তাদের প্রস্তাবগুলো দিয়েছে। সেগুলোও আমরা বিবেচনা করেছি। একটা ক্রাইটেরিয়া আমরা ব্যবহার করেছি, যেটা ৩ নভেম্বর আমরা সুস্পষ্টভাবে বলেছি। যারা প্রত্যক্ষভাবে জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় ফ্যাসিবাদী সরকার এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল, আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলব না। এই অধিকারটা তারা নিজেরাই হারিয়েছে। ওইসব দল বাদ দিয়ে আমরা সবার কথাই বিবেচনা করেছি। নির্বাচন কমিশনে এমন নিবন্ধিত দলও আছে, যাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে ২০২৪ সালে। অনিয়ম আছে এখানে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : আপনি সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র ছিলেন। দীর্ঘকাল শিক্ষক ছিলেন, এখনো অধ্যাপনা করছেন। আপনি নিজে ছাত্ররাজনীতির একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ফলে আপনার অভিজ্ঞতা একটু অন্য রকম। আমি জানতে চাইব, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর কতটুকু প্রজ্ঞা আছে দেশের সুশাসনের জন্য?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : আমি মনে করি আছে। তাদের কিছু ব্যত্যয় আছে অবশ্যই। ব্যক্তি হিসেবে তো আমাদেরও ব্যত্যয় আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সীমাবদ্ধতা আছে। আদর্শের ভিত্তিতে তাদের মতপার্থক্য আছে। কিন্তু তাদের দেশপ্রেম ও আন্তরিকতা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। প্রত্যেকেই ভালো জানেন। সবাই ভালো জানেন কি না, করেন কি না সেটা সবার ক্ষেত্রে একই বিষয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : চারদিকে যে সংস্কারের ঢেউ, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও তো সংস্কারের প্রয়োজন আছে। তরুণদের আকাঙ্ক্ষা দলগুলো কতটা পাঠ বা ধারণ করতে পারছে বলে আপনার মনে হয়?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : আমি এখন পর্যন্ত মনে করি, তাদের কিছু ঘাটতি আছে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই একটা সুপারিশ আমরা করব ভেবেছি। একটা হচ্ছে, সংসদ সদস্য হওয়ার যে বয়স তা আমরা কমিয়ে দেওয়ার পক্ষে। এখন ২৫ বছর আছে, আমরা ২১ বছরে নিয়ে আসতে চাই। আমরা মনে করি, তরুণদের অংশগ্রহণের জায়গা তৈরি করতে হবে, যাতে তারা সংসদে আসতে পারে, রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : নারীদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের একটা নিয়ম আছে যে, ৩৩ শতাংশ মনোনয়ন দিতে হবে। কিন্তু এটা কেউ কোনো দিন দেয়নি। তো এটা নিশ্চিত করার জন্য কী করা যেতে পারে?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর: এর মধ্যে একটা জিনিস আমরা বিবেচনায় নিয়েছি। আমাদের সুপারিশমালাতেও থাকবে। আমরা সংসদে নারী আসনসংখ্যা ১০০ করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা বিবেচনা করছি। এবং এটা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে। কারণ যে পদ্ধতিতে নারী সদস্যরা নির্বাচিত হতেন, সেটা সঠিক প্রতিনিধিত্ব হতো না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : স্বজনপ্রীতিরও সুযোগ থাকত। ভোটে সরাসরি আসাটাই ভালো।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : আমরা তা-ই মনে করি। তাতে নারী প্রতিনিধিত্ব তৈরি হবে। আমরা সংরক্ষিত আসনের পক্ষে নই। এটা শুধু আমাদের অবস্থান না। আমরা যে অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের বিশাল অংশ আমাদের বলেছে যে, এই সুপারিশটা আপনারা করুন। কারণ ১৯৯১ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যে গণতন্ত্রের চেষ্টা, সেখানে নারীসমাজের অংশগ্রহণ গণতন্ত্রের সংগ্রামে যতটা আমরা দেখতে পেয়েছি, এবারের আন্দোলনেও নারীদের অংশগ্রহণ অভাবনীয়। তো তাদের প্রতিনিধিত্ব কোথায়?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : মোটা দাগে আপনাদের প্রস্তাবগুলোর মূল প্রবণতা ও বৈশিষ্ট্য একটু বলবেন আমাদের?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : প্রথম কথা, নাগরিকের অধিকার সুরক্ষা করা। দ্বিতীয় যে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করতে চাই, ক্ষমতার এককেন্দ্রীকরণের কোনো পথ যেন না থাকে, যাতে জবাবদিহির ব্যবস্থা থাকে। তৃতীয় বিষয়, ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করতে হবে। এটা তো কেবল রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর ভারসাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার অন্যত্রও ভারসাম্য তৈরি করতে হবে, যেটা আমাদের আইনসভার মধ্যে থাকতে হবে। এই কারণে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট তৈরির বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় আছে, যাতে পরস্পরের মধ্যে এক ধরনের জবাবদিহি ও ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : বর্তমান সংবিধানের আয়তন ছোট করা যায় কি না, সাধারণ মানুষের বোধগম্য করা যায় কি না?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : আমরা এ সুপারিশ করব। সহজ ভাষায় সংবিধান করা, যেন সাধারণ মানুষ তাদের অধিকারের বিষয়ে বুঝতে পারে। মানুষ যেন বুঝতে পারে এটি তার সুরক্ষা কবজ। আমরাও মনে করি সংবিধানটা ছোট করে আনা প্রয়োজন। অনেকগুলো তফসিল আছে, যেগুলো হয়তো নিঃসন্দেহে বাতিল হবে বলে আশা করছি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : অন্য দশটা সংস্কার কমিশন থেকে আপনার অবস্থান ভিন্ন, আমরা জানি একটা ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে, যেখানে প্রধান হিসেবে আছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। আপনি সহসভাপতি। সব সুপারিশ পেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আপনার বৈঠক হবে। তাদের কাছ থেকে এই গ্যারান্টি আদায় করবেন, যেন ক্ষমতায় গেলে তারা এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে। সে বিষয়ে আপনি কেমন আশাবাদী?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : এখন পর্যন্ত কমিশনের কাজ শুরু হয়নি। মাত্র কমিটি গঠন হয়েছে। আমি সম্মানিত বোধ করছি, আমাকে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। অতিরিক্ত কাজের দায়িত্ব নিতে হবে বলেই উনি (ড. ইউনূস) ইঙ্গিত করছেন। জাতীয় ঐকমত্যের বড় দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের, এটা কমিশনের কাজ না। কারণ তারাই দেশ চালাবে। ফলে ঐকমত্যের জায়গা তাদের তৈরি করতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : একটা কথা হয় যে, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিভিন্ন সংকটে তাদের সম্পৃক্ত করছে না। নাগরিক হিসেবে আপনার কাছে জানতে চাই, সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব কতটুকু বা তাদের (রাজনৈতিক দল) আস্থায় নেওয়া হচ্ছে না, যতটুকু প্রত্যাশা ছিল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : প্রত্যাশা যা ছিল, তার দুদিক থেকে ব্যত্যয় আছে। তবে সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলো যে অবস্থান নিয়েছে, তারা তো সমর্থন জোগাচ্ছে। সমালোচনা থাকতেই পারে। না থাকলে, জবাবদিহি চাইব, কিন্তু বিশেষ মুহূর্তে তা চাইব না, এটা তো হয় না। ফলে এক ধরনের দূরত্ব যেটা আছে, তা বাস্তব কিছু কারণে আছে, কিছুটা দুই পক্ষের ব্যত্যয় আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগটা থাকলে আরো ভালো হতো।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : কালের কণ্ঠের স্লোগান হচ্ছে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আংশিক নয় পুরো সত্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। ১৫তম বর্ষপূর্তি হয়ে ১৬তম বর্ষে পদার্পণ করছে কালের কণ্ঠ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : কালের কণ্ঠের পথযাত্রা তো এক অর্থে বন্ধুর, এবং বিভিন্নভাবে অগ্রসর হয়েছে। আগামীর জন্য এই প্রত্যাশা করতে চাই, যে বক্তব্য কালের কণ্ঠ সবচেয়ে বড় করে বলে আসছে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুরো সত্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, এই পুরো সত্য প্রকাশে পুরোটাই যেন তারা অগ্রগামী হয়, হবে, সেই আশা করি। শুভ জন্মদিন কালের কণ্ঠ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : সাংবাদিকতার ছাত্র-শিক্ষক হিসেবে আপনার প্রত্যাশা ভিন্ন ধরনের। সেই প্রত্যাশা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে কতখানি অর্জন করা সম্ভব বলে আপনি মনে করেন?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : পুরোটা অর্জন করা সম্ভব হবে না। যে সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যাচ্ছে, আগামীতে পরিবর্তন হবে আশা করি। তবে সেই পরিবর্তনের প্রাথমিক পর্যায়ে গণমাধ্যমকে আরো সাহসী ভূমিকা নিতে হবে। আরো দায়িত্ববান হতে হবে, একই সঙ্গে সত্যের প্রতি নিষ্ঠ হতে হবে। সে ক্ষেত্রে আমি মনে করি চ্যালেঞ্জ অনেক বড়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশ্ন : গণ-অভ্যুত্থানের ফলে যে মুক্তচিন্তার একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, সেখানে গণমাধ্যমের দায়িত্ব কী হতে পারে?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তর : সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হচ্ছে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা। কারণ আমরা এমন একটা সময়ে বাস করি, যে সময়টাতে বিভিন্নভাবে মিথ্যা ও আংশিক প্রচার হচ্ছে। তেমন পরিস্থিতিতে মানুষের প্রত্যাশা কিন্তু গণমাধ্যমের কাছে অনেক বেশি। গণমাধ্যমের কাছে মানুষ সবচেয়ে বেশি আশা করে নির্ভরশীলতা। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও নেতিবাচক ভূমিকাও আছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সহায়তা করেছেন কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক খায়রুল কবির চৌধুরী ও শরীফ শাওন)</span></span></span></span></p>