<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আট মাসের রাইসার দুই দিন ধরে প্রচণ্ড জ্বর। কোনোভাবেই কমছে না, সঙ্গে সর্দিকাশিও আছে। গত বৃহস্পতিবার রাইসাকে নিয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালে যান শিশুটির মা লিলি আক্তার। হাসপাতালের বহির্বিভাগে এসে দেখেন, তাঁর মতো আরো অনেক অভিভাবক শিশুদের একই সমস্যা নিয়ে এসেছেন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"><img alt="শীতে তিন রোগে কাবু শিশুরা" height="161" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11. january/04-01-2025/8887.jpg" style="float:left" width="344" />সেখানেই রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাসিন্দা লিলি আক্তারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, জ্বরের মাত্রা কম হলেও মেয়ের বুকে বাঁশির মতো আওয়াজ হচ্ছিল, তাই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দেশজুড়ে ঠাণ্ডা বাতাসের সঙ্গে তীব্র শীতের কারণে মানুষ অস্বস্তিতে ভুগছে। এতে শিশুরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে (ঢাকা শিশু হাসপাতাল) গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা শিশু রোগীদের বেশির ভাগ জ্বর ও সর্দিকাশিতে আক্রান্ত। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ডা. এ বি এম মাহফুজ হাসান আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, এবার ব্রংকিওলাইটিস রোগী সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া চর্ম, চুলকানি, খোস-পাঁচড়া, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার রোগী বেশি আসছে। শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা বা নিউমোনিয়ার রোগীদের ভর্তির প্রায়োজন হলেও অন্যান্য রোগী সাধারণ ওষুধ খেয়েও সুস্থ হচ্ছে না।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুল হক চৌধুরী জানান, শীতে রোগীর সংখ্যা কমলেও ভর্তি রোগীর চাপ বছরের অন্যান্য সময়ের মতো। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে ৩৭৭ জন। এর মধ্যে ৯.৮১ শতাংশ শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। জ্বর ও সর্দিকাশিতে ৩৫.২৭ শতাংশ, চুলকানি বা পাঁচড়ায় ১৬.১৮ শতাংশ, ত্বকের সমস্যায় ২৪ শতাংশ, ডায়রিয়ায় ১০.৮৭ শতাংশ এবং অ্যাজমায় ৩.৭১ শতাংশ ভুগছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতালে নিউমোনিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, ১৯ শয্যার সব কটি পূর্ণ। এই ওয়ার্ডের পি-১৫ শয্যায় ভর্তি এক বছরের আনাস। তার নাকে অক্সিজেনের নল। শয্যার এক পাশে বেশ কিছু ওষুধ ও ইনজেকশন রাখা। অন্য পাশে গালে হাত দিয়ে বসে আছেন শিশুটির দাদি আবেদা বেগম। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর নরসিংদীর রায়পুরা থেকে শিশু আনাসকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবস্থার অবনতি হলে নেওয়া হয় আইসিইউতে। ১০ দিন আইসিইউতে থাকার পর পাঁচ দিন আগে তাকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নাতির দিকে তাকিয়ে আবেদা বেগম বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আইসিইউ থেকে ওয়ার্ডে আনার পর খুব ধীরে ওর অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু এত খরচ! গরিব মানুষ বাঁচব কেমনে? আমার এই নাতির পেছনে এ পর্যন্ত দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আরো কত লাগে কে জানে!</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতালটির নিউমোনিয়া বিভাগে কর্মরত ডা. জোহরা আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, শীতের এই সময়ে শিশুদের নিউমোনিয়ার চেয়ে ব্রংকিওলাইটিসই বেশি হয়। ব্রংকিওলাইটিস ও নিউমোনিয়ায় শ্বাসতন্ত্রের দুটি সম্পূর্ণ পৃথক স্থান আক্রান্ত হয়। ফুসফুসের ক্ষুদ্র নালি ব্রংকিউলে ভাইরাসের কারণে প্রদাহ হলে তাকে বলে ব্রংকিওলাইটিস এবং আরো গভীরে এলভিওলাইয়ে প্রদাহ হলে বলে নিউমোনিয়া।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, ব্রংকিওলাইটিস দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের বেশি আক্রমণ করে। এ রোগে নাক দিয়ে পানি পড়ার পাশাপাশি কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আক্রান্ত শিশুর জ্বরের মাত্রা কম থাকে। পক্ষান্তরে নিউমোনিয়ায় শিশুর খুব জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট হয়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ডা. জোহরা আক্তার বলেন, নবজাতকের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি যদি মিনিটে ৬০ বার থাকে, নবজাতক-পরবর্তী এক বছর বয়সী শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি যদি ৫০ বার বা তার বেশি হয় এবং এক বছর থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি মিনিটে যদি ৪০ বার বা তার বেশি হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে অবশ্যই ঝুঁকি আছে। তখন বাসায় বসে না থেকে অবশ্যই শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের জন্য বুকের দুধ খাওয়ানো খুব জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুধু বুকের দুধ পানে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। সময়মতো টিকাগুলো দিতে হবে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, দুর্বল শিশু, যাদের নিউমোনিয়া বারবার হয় বা হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাদের জন্য সরকারি টিকার পাশাপাশি প্রতিবছর ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নিতে পারলে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি কমে আসবে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>