<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া, রাজনীতি ও আমলানির্ভরতা কমিয়ে একে আরো কার্যকর ও শক্তিশালী করতে ৪৭ দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশন। দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন জমা দেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরে গতকাল বুধবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুপারিশগুলো তুলে ধরেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান ও টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুদক বর্তমানে একটি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। তবে এটিকে একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন। আমরা চাই দুদক স্বাধীন ও কার্যকর হোক। তবে এই স্বাধীনতারও সীমা থাকতে হবে। কমিশনের সদস্য সংখ্যা তিন থেকে পাঁচে বৃদ্ধি করার সুপারিশ করা হয়েছে। যার মধ্যে কমপক্ষে একজন নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। অতিরিক্তভাবে দুদকের কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত বিচারিক ও আর্থিক দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুদককে আরো গতিশীল করার জন্য আমরা স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা হিসেবে ৪৭টি সুপারিশ প্রস্তাব করেছি। স্বল্পমেয়াদি সুপারিশ বাস্তবায়নে ছয় মাস সময় লাগবে, মধ্যমেয়াদি সুপারিশ বাস্তবায়নে ১৮ মাস সময় লাগবে এবং দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার বাস্তবায়নে ৪৮ মাস সময় লাগবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুদকের মতো প্রতিষ্ঠান কোনো দেশেই এবং বাংলাদেশেও এককভাবে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তার ওপরে কেন্দ্রীয় দায়িত্ব নীতিনির্ধারণের জন্য উপযুক্ত রাষ্ট্র এবং সামাজিক পরিবেশ লাগে। পুরো রাষ্ট্র এবং সমাজকে সম্পৃক্ত করতে হয় এর অবকাঠামোতে। সেই বিবেচনায় আমরা আমাদের সংবিধানের ২০-এর ২ অনুচ্ছেদে যেটা আছে সেটার সংশোধন করতে চাই। সেটা হচ্ছে, সেখানে সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সংবিধানের একটা অঙ্গীকার। রাষ্ট্র এবং আইনি ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ব্যক্তিগত স্বার্থ ও সুবিধা অর্জনে যে ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশে সেটা প্রতিরোধ করতে তার বিরুদ্ধে সাংবিধানিক অঙ্গীকার লাগবে। যদিও এর সুযোগ আমাদের সংবিধানে আছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশে কোনো জাতীয় দুর্নীতিবিরোধী কৌশল নেই। কোনো নীতিমালা নেই। আমরা সুনির্দিষ্টভাবে সুপারিশ করেছি, কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে হবে। যার মধ্যে রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক কাঠামোতে দুর্নীতিবিরোধী শুধু প্রত্যয়ই না, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যে অঙ্গীকারগুলে দরকার, দায়িত্ব এবং কর্তব্য সেটি নির্ধারণ করা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্নীতিবিরোধী কৌশল প্রতিপালিত হচ্ছে কি না সেটি পর্যবেক্ষণ এবং মূল্যায়নের জন্য সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ন্যায়পালের গুরুত্ব তুলে ধরেন সংস্কার কমিশনের প্রধান। তিনি বলেন, ন্যায়পালের একটা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা, যাদের দায়িত্ব হবে ধারাবাহিকভাবে, নিয়মিতভাবে এই কৌশলের বাস্তবায়ন বা প্রতিফলনের মূল্যায়ন করা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালো টাকা সাদা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালো টাকার বৈধতা দেওয়ার বার্ষিক রীতি আমাদের রাষ্ট্রীয় বা সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। সেটি চিরতরে বন্ধ করতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের সাধ্যমতো যাতে মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটে এমন একটি প্রতিবেদন তৈরির চেষ্টা করেছি। সে লক্ষ্যেই অন্যান্য কমিশনের মতো যথাযত গবেষণা এবং জনসম্পৃক্ততা কার্যক্রম শেষ করেই আমাদের প্রতিবেদন সম্পন্ন করেছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে দুদক সংস্কারে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ লেনদেনকে অবৈধ ঘোষণা করা, দুর্নীতিবিরোধী কৌশলপত্র প্রণয়ন করা, ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠা ও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ করা, দুর্নীতি দমনে সব সেবামূলক খাত স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেশনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুদককে শক্তিশালী, কার্যকর ও ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে কমিশনারদের পদ বাড়ানো, নিয়োগ, সার্চ কমিটি, আইনের সংস্কার, বেতন বৃদ্ধি ও প্রণোদনার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। দুদককে সম্পূর্ণ আমলাতন্ত্র মুক্ত করার পাশাপাশি কমিশনের কর্মকর্তাদের নজরদারির জন্য শৃঙ্খলা অনুবিভাগ রাখারও সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের নির্বাচনসংক্রান্ত অর্থায়নে স্বচ্ছতার জন্য আয়-ব্যয় নিয়মিত প্রকাশের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুদককে আরো কার্যকর করতে কয়েকটি আইন সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>