রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি!

হায়দার আলী ও জয়নাল আবেদীন
হায়দার আলী ও জয়নাল আবেদীন
শেয়ার
রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি!

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন বাংলাদেশের রাজবাড়ীর ছেলে আরমান মণ্ডল। ইউক্রেনের ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার মাইন বিস্ফোরণে আক্রান্ত হওয়ার দাবি করেন তিনি। ২১ বছর বয়সী এই তরুণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কিভাবে জড়ালেন, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে কালের কণ্ঠ। এতে বেরিয়ে আসে একটি এজেন্সির ভয়াবহ প্রতারণার তথ্য।

বিভিন্ন কারখানা ও ক্যান্টনমেন্টে মালি বা বাবুর্চির কাজ দেওয়ার কথা বলে তরুণদের পাঠানো হয় রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে। সেখানে অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে অনেকে। শুধু এক এজেন্সির মধ্যস্থতায় পাঠানো ১০ তরুণের মধ্যে আটজন যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এঁদের মধ্যে অনেকের কোনো খোঁজ মিলছে না।

রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি!গতকাল সোমবার আহত আরমানের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন কালের কণ্ঠ প্রতিবেদক। আরমান এ সময় চিকিৎসাধীন ছিলেন রাশিয়ার একটি সামরিক হাসপাতালে। ভিডিও কলে তিনি বলেন, ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবে নেওয়া হয় তাঁদের। এরপর তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হয় রাশিয়ান একটি চক্রের কাছে।

সেখানে এক মাস সশস্ত্র প্রশিক্ষণের পর গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে গোলাবারুদ নিয়ে রওনা দেন কিয়েভের দিকে। এ সময় ইউক্রেনের ছোড়া ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে অন্য সৈনিকদের সঙ্গে ছিলেন তিনিও। সেখানে স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে তিনি আহত হন। এ সময় তিনি দুই পায়ের ব্যান্ডেজ দেখান।

আরমানের বাড়ি রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মাজবাড়ী ইউনিয়নের কুষ্টিয়াডাঙ্গি গ্রামে।

তাঁর বাবা আকরাম মণ্ডল কৃষিকাজ করে সংসার চালান। আরমান কালিয়াকান্দি মীর মোশারফ কলেজে পড়াশোনা করতেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে স্থানীয় দালাল মনজুরুল হোসেনের প্রলোভনে পড়ে রাশিয়ায় যাওয়ার আগ্রহ দেখান। মনজুরুল তাঁকে নিয়ে যায় ড্রিম হোম ট্রাভেল নামে একটি এজেন্সির অফিসে। এজেন্সিকে আট লাখ টাকা পরিশোধ করে উন্নত জীবনের খোঁজে দেশ ছাড়েন আরমান। সংসারের হাল ধরতে গিয়ে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিজের জীবন এখন বিপন্নপ্রায়।

ড্রিম হোম ট্রাভেল এজেন্সির ফেসবুক পেজ ঘেঁটে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী ক্যারিয়ারের নতুন দিগন্ত খোলার মতো চটকদার বিজ্ঞাপনে সয়লাব প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজ। বিশেষ করে রাশিয়া, কানাডা, সাইপ্রাস, চীনসহ বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী ও শ্রমিক পাঠানো হয় বলে উল্লেখ করা হয়। কোনো নিবন্ধিত রিক্রুটিং এজেন্সি না হয়েও এভাবে প্রকাশ্যে বিদেশে শিক্ষার্থী ও কর্মী পাঠানোর বিষয়টিকে প্রতারণা বলছেন প্রবাসীকল্যাণ খাতের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রেফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ওমরা ভিসা দিয়ে নিয়ে সেখান থেকে ইউক্রেনে পাঠানো খুবই অন্যায় একটা কাজ। এ কাজের জন্য এটাকে এক ধরনের যুদ্ধ পাচার বলা যায়। এই ঘটনাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা উচিত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অতি দ্রুত এই ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম প্রয়োজন। এর সঙ্গে দোষী ব্যাক্তিকে অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। এই ট্রাভেল এজেন্সিকে পাচারের আইনে বিচার করতে হবে।

 

ট্রাভেল এজেন্সির ভয়াবহ প্রতারণায় সংকটে অনেকে

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আরমানসহ নিখোঁজ তরুণদের রাশিয়ায় চক্রের হাতে তুলে দেওয়ার এই লোমহর্ষক ঘটনায় নাটের গুরু ড্রিম হোম ট্রাভেল। এটি জননী গ্রুপের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর বনানীর এফ ব্লকে ৪ নম্বর সড়কের ৪ নম্বর বাড়িতে এর কার্যালয়। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নড়াইলের বাসিন্দা এম এম আবুল হাসান। তিনি নড়াগাতী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

আরমান মণ্ডলের সঙ্গে তিনি গত বছরের ১২ অক্টোবর ৩০০ টাকার দলিলে একটি চুক্তিতে সই করেন। চুক্তিপত্রে উল্লেখ রয়েছে, রাশিয়ার ক্যান্টনমেন্টে মালি অথবা বাবুর্চির কাজ দেওয়া হবে আরমানকে। বেতন হবে প্রায় দুই লাখ টাকা। ভিসার মেয়াদ হবে ১০ বছর। চুক্তিপত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকা নেওয়ার তথ্য থাকলেও বাস্তবে আরমানের কাছ থেকে দুই ধাপে আট লাখ ৬৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাঁর বাবা আকরাম মণ্ডলের।

আরমানের রাশিয়ার ভিসার একটি কপি কালের কণ্ঠের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, ভিসাটি ইস্যু হয়েছে গত ৫ ডিসেম্বর। ভিসার মেয়াদ ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে ৬ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ৩০ দিন। ১০ বছরের কর্মী ভিসা দেওয়ার কথা বলে মাত্র এক মাসের পর্যটক ভিসা দেয় ট্রাভেল এজেন্সি। এভাবে এজেন্সির সূক্ষ্ম কারসাজিতে ফেঁসে গেছেন নিরীহ তরুণ আরমান মণ্ডলসহ কয়েকজন। আরমান ছাড়া বাকিরা হলেননরসিংদীর তুহিন, সোহান ও মোবারক; ঢাকার আমিনুল; গাইবান্ধার হুমায়ুন কবির ও রহমত আলী ও আকরাম।

জানা গেছে, ড্রিম হোম ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান আবুল হাসান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামান্না ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসার আড়ালে বিদেশে কর্মী পাঠাচ্ছে। কার্যত তাদের কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির নিবন্ধনও নেই। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে নিরীহ ছেলেদের মস্তিষ্কে উন্নত জীবনের আশা জাগিয়ে বিপদে ফেলছেন।

 

যেভাবে যুদ্ধের মাঠে তাঁরা

গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বব ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দেয় ড্রিম হোম ট্রাভেলস। এতে বলা হয়, রাশিয়ায় ক্যান্টনমেন্টে মালি ও বাবুর্চির কাজের সুযোগ রয়েছে। বেতন শুরু দেড় হাজার ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার তথ্যও তুলে ধরা হয় এতে।

ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে স্থানীয় দালালদেরও কাজে লাগিয়ে দেয় ড্রিম হোম ট্রাভেলস। দালালরা উন্নত জীবনের আশ্বাস দিয়ে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করে তরুণদের। সরল মনে তা বিশ্বাস করেন কলেজপড়ুয়া আরমানসহ অন্যরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে স্থানীয় দালালরা এই তরুণদের ঢাকায় ট্রাভেল এজেন্সির অফিসে নিয়ে আসে। একেকজন থেকে নেওয়া হয় আট লাখ টাকা করে।

আরমান কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা চুক্তি করে ড্রিম হোম ট্রাভেলস। তিনিসহ ১০ জন তরুণকে প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবে পাঠায় ড্রিম হোম ট্রাভেল। সেখান থেকে তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হয় রাশিয়ান একটি চক্রের কাছে। রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর তাঁদের এক মাসব্যাপী কমান্ডো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কৌশলে দুজন দেশে ফিরে আসতে সমর্থ হলেও ফেঁসে যান বাকি আটজন। তাঁদের জোরপূর্বক মারধর করে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়।

আরমান বলেন, আমরা বারবার তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে আমাদের কর্মী ভিসায় পাঠানো হয়েছে। আমরা কোনো যুদ্ধে অংশ নিতে চাই না। এর পরও আমাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়। রাশিয়ান কমান্ডোরা মারধর করে আমাদের যুদ্ধে নিয়ে যায়। আমাদের সামরিক পোশাক পরিয়ে হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দেওয়া হয়। কিয়েভে ড্রোন হামলা ও স্থলমাইন বিস্ফোরণ হলে আমার সামনে থাকা জিপে আটজনই প্রাণ হারান। আমি পেছনে মোটরসাইকেলে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। আমি এখন দেশে ফিরতে চাই।

পাসপোর্টে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরমানের জন্ম ২০০২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ শেষে তাঁকে যে সৈনিক নম্বর দেওয়া হয়েছে, তার একটি ছবিও পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত ছবিতে দেখা গেছে, তাঁর আইডি নম্বর এ৫-১৯৭০৫৯।

 

আমার কলিজার টুকরা ছেলেকে ফেরত চাই

দুই মেয়েকে জড়িয়ে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করেন আরমানের মা ফাহিমা বেগম। একমাত্র ছেলের এমন জীবনসংকটে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা আকরামও পাথর হয়ে গেছেন। আরমানের দুই ছোট বোনও ভাইয়ের অপেক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

গতকাল কথা বলতে গিয়ে বারবার আহাজারি করছিলেন ফাহিমা। বারবার ছেলেকে নিরাপদে দেশে ফেরত আনতে সাহায্য প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, আমার কলিজার টুকরা, আমার একমাত্র ছেলে। আমি ছেলের জীবন ভিক্ষা চাই। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনুন।

আরমানের বাবা আকরাম মণ্ডল বলেন, আমার ছেলেটারে কাজের কথা বলে রাশিয়ায় নিয়ে দালালরা বিক্রি করে দিয়েছে। স্যার, একটাই ছেলে আমার। ওরা চকোলেট কারখানায় চাকরি দেবে বলেছিল। যদি জানতাম রাশিয়ায় যুদ্ধে ঠেলে দেবে, কখনোই ছেলেটারে পাঠাতাম না। আমার কলিজার টুকরা ছেলেকে যেকোনো মূল্যে ফেরত চাই। সরকারের কাছে আবেদন করি, যেন এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।

তিনি জানান, স্থানীয় দালাল মনজুরুল হোসেন প্রথমে আরমানকে রোমানিয়ায় পাঠানোর প্রসস্তাব দেয়। দালাল বারবার ফুসলাতে থাকে। বিশেষ করে রাশিয়ায় ভালো কাজের সুযোগ রয়েছে বলে জানালে তাঁরা রাজি হন। বেতনও ধরার কথা দুই লাখ টাকা। প্রায় সাড়ে তিন মাস কেটে গেছে। এখন গোটা পরিবারে নেমে এসেছে দুশ্চিন্তার মেঘ।

 

ড্রিম হোম ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষের ভাষ্য

অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা হয় ড্রিম হোম ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান এম এম আবুল হাসানের সঙ্গে। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, মালি বা বাবুর্চির ভিসাতেই ১০ জনকে রাশিয়া পাঠিয়েছিলেন তিনি। তবে তাদের যুদ্ধের মাঠে ঠেলে দেওয়া হবেএ বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না।

যুদ্ধের প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু সেনা ক্যাম্পে চাকরি, তাই আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবে তাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এখানে আমাদের কোনো দায় নেই। এখন আমরা তাদের ফেরত আনতে চেষ্টা করছি। দোহারের নবাবগঞ্জের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে এই তরুণদের রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছিল বলে জানান তিনি।

স্থানীয় দালাল মনজুরুল হোসেনও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, আরমান তাঁর নিকটাত্মীয়। তিনি নিয়মিত ওই এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কর্মী পাঠান। ভালো সুযোগ থাকায় আরমানকে রাশিয়ায় পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হবে, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। তিনি নিজেও এজেন্সি কর্তৃক মারাত্মক প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন ব্যবসায়ী জেন্ট্রি বিচের সাক্ষাৎ

বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিকল্পনা মার্কিন ব্যবসায়ী গ্রুপের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিকল্পনা মার্কিন ব্যবসায়ী গ্রুপের
জেন্ট্রি বিচ

শীর্ষস্থানীয় মার্কিন ব্যবসায়ী জেন্ট্রি বিচ বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর এ আগ্রহের কথা জানান।

হাইগ্রাউন্ড হোল্ডিংসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিচ জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠান এর মধ্যেই বাংলাদেশে অনেক সম্পদ অর্জন করেছে। জ্বালানি, অর্থনীতি ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি খাতে আরো বিনিয়োগ করতে চান তাঁরা।

বিচ প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, আপনি অসাধারণ কাজ করেছেন। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। প্যারামাউন্ট ইউএসএর চেয়ারম্যান বিচ আরো বলেন, এখনই এই দেশে আরো বিনিয়োগ আনার সময়। তাঁর প্রতিষ্ঠান স্বল্পমূল্যের সামাজিক আবাসন প্রকল্প, বিমান ও প্রতিরক্ষা খাতসহ রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।

ড. ইউনূস দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিনিয়োগের জন্য বিচকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ এখন ব্যবসার জন্য প্রস্তুত। বিনিয়োগের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

আমরা আমাদের ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায় শুরু করছি।

ড. ইউনূস আরো বলেন, উপকূলীয় ও উপকূলীয় ক্ষেত্রগুলোতে গ্যাস অনুসন্ধানসহ অনেক খাতে বাংলাদেশের আরো বেশি মার্কিন বিনিয়োগ প্রয়োজন। বাংলাদেশে আরো মার্কিন বিনিয়োগ এলে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পাবে।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুেফ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী এবং এসডিজিবিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য
জামায়াতের আমির

অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাট প্রতিনিধি
শেয়ার
অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে
শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগ নরকে পরিণত করেছিল। ক্ষমতার শেষ দিন পর্যন্ত তারা মানুষ খুন করেছে। সরকারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে। গণহত্যার বিচার হলে শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।

আহতরা একটু শান্তি খুঁজে পাবে। ১৮ কোটি মজলুম মানুষ খুশি হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জয়পুরহাট সার্কিট হাউস মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াত জয়পুরহাট জেলা শাখা আয়োজিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতের জয়পুরহাট জেলা শাখার আমির ডা. ফজলুর রহমান সাঈদ।

ডা. শফিক আরো বলেন, তারা এক মাসের মধ্যে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষ খুন করেছে। যেনতেনভাবে আমাদের ক্ষমতায় বসানোর জন্য জনগণ জীবন দেয়নি। তারা জীবন দিয়েছে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে। বাংলাদেশে আবার দুঃশাসন ফিরে আসুক, তা তারা দেখতে চায় না।

তিনি বলেন, তাই যদি করতে হয়, তাহলে অবশ্যই একটা অর্থবহ নির্বাচনের দিকে যেতে হবে জাতিকে। অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার সাধন করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী এই সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনে। তাড়াহুড়া করে আমরা নিজেরাও ক্ষমতায় যেতে চাই না, কেউ তাড়াহুড়া করে ক্ষমতায় যাক, সেটাও আমরা চাই না।

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও বগুড়া অঞ্চল পরিচালক মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় মজলিশে সুরা সদস্য মাওলানা আব্দুর রহিম, বগুড়া জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক, সিরাজগঞ্জ জেলা আমির শাহিনুর আলম, দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এনামুল হক, জয়পুরহাটের জামায়াত নেতা হাসিবুল আলম লিটন, অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, প্রকৌশলী আব্দুল বাতেনসহ স্থানীয় নেতারা।

মন্তব্য
নিঃসন্তান ৪ নারীর উদ্যোগ

আশ্রয়হীন ২৯ মায়ের ‘আপন ভুবন’

মোবারক আজাদ
মোবারক আজাদ
শেয়ার
আশ্রয়হীন ২৯ মায়ের ‘আপন ভুবন’
রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডের ৩৬ নম্ব্বর বাসায় নারীদের এই বৃদ্ধাশ্রম। ছবি : কালের কণ্ঠ

একসময় হয়তো তাঁর ছিল অন্য দশজনের মতো প্রাণোচ্ছল জীবন। হয়তো ছিলেন পরিবারের গৃহকোণটির মধ্যমণি। তাঁকে ঘিরেই হয়তো সচল ছিল সংসারের চাকা। ছেলেমেয়ে সবার কাছে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে প্রিয়।

সময় গড়িয়ে দিন ফুরিয়ে এসেছে, এখন প্রয়োজন ফুরিয়েছে তাঁর। তাই ঠাঁই নেই সংসারে। অনাদর-অবহেলায় দিন কাটে পথের ধারে।

আশ্রয়হীন এমন বর্ষীয়সী ২৯ নারীকে নিয়ে চলছে আপন ভুবন

তাঁদের কেউ একেবারেই নিঃসন্তান, কেউ বা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডের ৩৬ নম্ব্বর বাসায় রয়েছে নারীদের এই বৃদ্ধাশ্রম। এটির মূল উদ্যোক্তা রুমি রহমান নামের এক নিঃসন্তান নারী। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার।
তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরো তিনজন। তাঁরা হলেন প্রধান কো-অর্ডিনেটর জারা জামান, কো-অর্ডিনেটর আর্জিনা মহুয়া ও রোজি হাসান। এই তিনজনেরও সন্তান নেই। সবাই মিলে বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিতদের মাতৃস্নেহে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি ওই বৃদ্ধাশ্রমে গেলে কথা হয় রুমি রহমানের সঙ্গ।

রুমি বলেন, পরিবারহীন, অসহায় যাঁরা রাস্তায় পড়ে ছিলেন, তাঁদের এখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। আমরা চারজন নিঃসন্তান নারী এই বৃদ্ধাশ্রম ২০২২ সাল থেকে পরিচালনা করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, অনেক সচ্ছল পরিবারের ছেলেমেয়ে ফোন দেয় তাদের মা-বাবাকে এখানে রাখা যাবে কি না। তখন বিনয়ের সঙ্গে বলি, এটি ওই ধরনের বৃদ্ধাশ্রম না যে টাকা দিয়ে রাখা যায়। এটি নিতান্তই ছিন্নমূল মায়েদের জন্য।

রুমি বলেন, কারো পরিবারের খোঁজ পেলে তাদের ডেকে বুঝিয়ে পরিবারের কাছে ফেরত দিতে চেষ্টা করি।

তাঁর সহযোগী তিনজন জানান, রাস্তায় পড়ে থাকা ভারসাম্যহীনেরও সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু ২৯ জনের বেশি রাখার মতো সংকুলান নেই তাঁদের।

এই চারজন কিভাবে এক হলেনএমন প্রশ্নে প্রধান কো-অর্ডিনেটর জারা জামান বলেন, সৃষ্টিকর্তা আমাদের মিলিয়ে দিয়েছেন। মায়েদের সেবার জন্য আরো ছয়জনকে নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তিনজন রেজিস্টার্ড নার্স রয়েছেন। এ ছাড়া একজন ডাক্তার আছেন, যিনি সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মায়েদের দেখেন। আর গুরুতর অবস্থা হলে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ পর্যন্ত তিনজন মারা গেছেন। পরে তাঁদের পুলিশ এবং ডাক্তারের মাধ্যমে ভেরিফাই করে আঞ্জুমান মুফিদুলের মাধ্যমে দাফন করা হয়।

এখানে দায়িত্বরত ইনহাউস মেডিক্যাল অফিসার ডা. ফাতেমাতুজ জোহরা বলেন, এখানে ২৯ জন মায়ের বেশির ভাগ মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁদের ৮০ শতাংশের প্রেসার, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতা রয়েছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মা-ও আছেন। কয়েকজন মা অ্যাজমা রোগী। তাঁদের দেখভালের জন্য আমরা আছি।

এই প্রতিষ্ঠানের শুরুর কথা জানতে চাইলে রুমি রহমান বলেন, ২০২২ সালের একদিন রাজধানীর মৌচাকে একজন মাকে দেখি ডাস্টবিন থেকে খাবার নিয়ে খাচ্ছেন। দেখে খুব খারাপ লাগে। সহ্য করতে পারছিলাম না। তখন তাঁকে বাসায় নিয়ে যাই। এরপর এমন মায়েদের পাশে কিভাবে দাঁড়ানো যায়, ভাবতে ভাবতে মাথায় আসে বৃদ্ধাশ্রম করার কথা। এর পর থেকে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এত দূর।

বৃদ্ধাশ্রম ঘিরে মাসে সব মিলিয়ে প্রায় ছয় লাখ টাকা খরচ হয় বলে জানান তিনি। এই খরচ নিঃসন্তান চার নারীসহ তাঁদের পরিবার ও পরিচিতজনরা দেন। কিছু অর্থ অনুদানের মাধ্যমে আসে। মাঝেমধ্যে কেউ কেউ এক বেলা খাবার কিংবা কিছু কাপড়চোপড়ও দিয়ে যান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানে আশ্রিত মায়েদের বেশির ভাগের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এমনকি শতবর্ষী কয়েকজন মা রয়েছেন। পরিপাটি ও সাজানো-গোছানোভাবে তাঁরা জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁরা অনেকে মহল্লার লোকজন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে এখানে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়েছে সড়ক থেকে।

জোহরা বেগম (৭৫) তাঁদেরই একজন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাত সন্তানের জন্ম দিলেও শৈশবে একে একে সবাই মারা যায়। স্বামীও মারা গেছেন। তাঁর আর কিছু মনে নেই। ঘরহারা অবস্থায় ১১ বছর রাস্তায় কাটিয়ে অবশেষে এখানে ঠাঁই মিলেছে।

জোবাইদা (৮০) নামের একজনের সঙ্গে কথা বলতে গেলে আবেগাপ্লুত হয়ে হাউমাউ করে কান্না করতে থাকেন।

রেনু বেগম নামের একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি পুরান ঢাকার ইসলামবাগ এলাকায় তিন ছেলে, এক মেয়ে আর স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। পারিবারিক শত্রুতার জেরে তিন সন্তান মারা যায়। এর কিছুদিন পরই হারিয়ে ফেলেন চতুর্থ সন্তানকেও। স্বামী মারা যাওয়ার পর কাজ করেছেন বাসাবাড়িতে। হঠাৎ অসুস্থ হলে হাসপাতালে একাকী প্রায় তিন মাস কাটিয়েছেন। যে বাসায় ভাড়া থাকতেন, সে বাসার লোকজন আপন ভুবন বৃদ্ধাশ্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে এখানে পাঠান। তিনি জানান, এখানে অনেক ভালো আছেন। এখানে এসে তাঁর একাকিত্ব দূর হওয়ার পাশাপাশি পাচ্ছেন তিনবেলা ভালো খাবার, চিকিৎসাসেবা ও যত্ন।

রুমি রহমান বলেন, দেশের সব মায়ের ছেলেমেয়ের উদ্দেশে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাইআপনাদের তো মা-বাবারা খাইয়ে-পরিয়ে বড় করেছেন, আপনাদের এখন দায়িত্ব তাঁদের লালন-পালন করা। একই সঙ্গে ধর্মীয়, পারিবারিক ও সামাজিক দায়িত্বও বটে। একটি কথা মনে রাখবেন, প্রবীণ কিংবা মুরব্বিরা কখনো বোঝা হতে পারেন না, তাঁরা পরিবারের বটবৃক্ষ।

 

মন্তব্য

সাত কলেজ নিয়ে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ করার প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সাত কলেজ নিয়ে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ করার প্রস্তাব

রাজধানীর সাত কলেজ নিয়ে জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয় নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রস্তাব দিয়েছে সাত কলেজের জন্য স্বতন্ত্র          রূপরেখা প্রণয়ন কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ এই রূপরেখা প্রণয়ন কমিটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিকল্পনা কমিশনে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে এক বৈঠকে এই নতুন নামকরণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি সদস্য ও রূপরেখা প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান ও ইউজিসির অন্য সদস্য অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমান।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে সাত কলেজ। এরপর গত মঙ্গলবার সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষা উপদেষ্টা, ইউজিসি চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ওই বৈঠকের সূত্র ধরেই রাজধানীর সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার প্রস্তাব দেওয়া হলো।

ইউজিসির চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের অবদান স্মরণ করে রাখতে আমরা সাত কলেজের জন্য জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয় নামটি প্রস্তাব করেছি। আমরা আরো কয়েকটি নাম নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে এই নামটি বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছে। শিক্ষা উপদেষ্টাও নামটির প্রশংসা করেছেন।

তবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর তারা যদি নামটি মেনে নেয় তাহলেই আমরা চূড়ান্ত করব।

কলেজগুলো হচ্ছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দেড় লাখ। শিক্ষক এক হাজারের বেশি। 

অধ্যাপক ফায়েজ আরো বলেন, আমরা খুব তাড়াতাড়ি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে চাই।

এ জন্য একাধিক মডেল নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে শুধু সাত কলেজের জন্য। সরকারও এ ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। আমি শিক্ষার্থীদের বলব, তাদের মধ্যে যেন কোনো ভাঙন সৃষ্টি না হয়।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার সাতটি বড় সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। তবে যেসব লক্ষ্য নিয়ে এটি করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় কয়েক বছর ধরে অধিভুক্তি বাতিল করে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ গত ২৬ জানুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এর পরদিন ২৭ জানুয়ারি সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠকের পর ঢাবি উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করার ঘোষণা দেন।

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ