রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি!

হায়দার আলী ও জয়নাল আবেদীন
হায়দার আলী ও জয়নাল আবেদীন
শেয়ার
রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি!

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন বাংলাদেশের রাজবাড়ীর ছেলে আরমান মণ্ডল। ইউক্রেনের ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার মাইন বিস্ফোরণে আক্রান্ত হওয়ার দাবি করেন তিনি। ২১ বছর বয়সী এই তরুণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে কিভাবে জড়ালেন, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে কালের কণ্ঠ। এতে বেরিয়ে আসে একটি এজেন্সির ভয়াবহ প্রতারণার তথ্য।

বিভিন্ন কারখানা ও ক্যান্টনমেন্টে মালি বা বাবুর্চির কাজ দেওয়ার কথা বলে তরুণদের পাঠানো হয় রাশিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে। সেখানে অকাতরে প্রাণ হারাচ্ছে অনেকে। শুধু এক এজেন্সির মধ্যস্থতায় পাঠানো ১০ তরুণের মধ্যে আটজন যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এঁদের মধ্যে অনেকের কোনো খোঁজ মিলছে না।

রাশিয়ায় যুদ্ধে আট বাংলাদেশি!গতকাল সোমবার আহত আরমানের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন কালের কণ্ঠ প্রতিবেদক। আরমান এ সময় চিকিৎসাধীন ছিলেন রাশিয়ার একটি সামরিক হাসপাতালে। ভিডিও কলে তিনি বলেন, ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবে নেওয়া হয় তাঁদের। এরপর তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হয় রাশিয়ান একটি চক্রের কাছে।

সেখানে এক মাস সশস্ত্র প্রশিক্ষণের পর গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে গোলাবারুদ নিয়ে রওনা দেন কিয়েভের দিকে। এ সময় ইউক্রেনের ছোড়া ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে অন্য সৈনিকদের সঙ্গে ছিলেন তিনিও। সেখানে স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলে তিনি আহত হন। এ সময় তিনি দুই পায়ের ব্যান্ডেজ দেখান।

আরমানের বাড়ি রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মাজবাড়ী ইউনিয়নের কুষ্টিয়াডাঙ্গি গ্রামে।

তাঁর বাবা আকরাম মণ্ডল কৃষিকাজ করে সংসার চালান। আরমান কালিয়াকান্দি মীর মোশারফ কলেজে পড়াশোনা করতেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে স্থানীয় দালাল মনজুরুল হোসেনের প্রলোভনে পড়ে রাশিয়ায় যাওয়ার আগ্রহ দেখান। মনজুরুল তাঁকে নিয়ে যায় ড্রিম হোম ট্রাভেল নামে একটি এজেন্সির অফিসে। এজেন্সিকে আট লাখ টাকা পরিশোধ করে উন্নত জীবনের খোঁজে দেশ ছাড়েন আরমান। সংসারের হাল ধরতে গিয়ে প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিজের জীবন এখন বিপন্নপ্রায়।

ড্রিম হোম ট্রাভেল এজেন্সির ফেসবুক পেজ ঘেঁটে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী ক্যারিয়ারের নতুন দিগন্ত খোলার মতো চটকদার বিজ্ঞাপনে সয়লাব প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজ। বিশেষ করে রাশিয়া, কানাডা, সাইপ্রাস, চীনসহ বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী ও শ্রমিক পাঠানো হয় বলে উল্লেখ করা হয়। কোনো নিবন্ধিত রিক্রুটিং এজেন্সি না হয়েও এভাবে প্রকাশ্যে বিদেশে শিক্ষার্থী ও কর্মী পাঠানোর বিষয়টিকে প্রতারণা বলছেন প্রবাসীকল্যাণ খাতের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রেফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার ড. তাসনিম সিদ্দিকী কালের কণ্ঠকে বলেন, ওমরা ভিসা দিয়ে নিয়ে সেখান থেকে ইউক্রেনে পাঠানো খুবই অন্যায় একটা কাজ। এ কাজের জন্য এটাকে এক ধরনের যুদ্ধ পাচার বলা যায়। এই ঘটনাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা উচিত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অতি দ্রুত এই ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম প্রয়োজন। এর সঙ্গে দোষী ব্যাক্তিকে অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। এই ট্রাভেল এজেন্সিকে পাচারের আইনে বিচার করতে হবে।

 

ট্রাভেল এজেন্সির ভয়াবহ প্রতারণায় সংকটে অনেকে

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আরমানসহ নিখোঁজ তরুণদের রাশিয়ায় চক্রের হাতে তুলে দেওয়ার এই লোমহর্ষক ঘটনায় নাটের গুরু ড্রিম হোম ট্রাভেল। এটি জননী গ্রুপের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর বনানীর এফ ব্লকে ৪ নম্বর সড়কের ৪ নম্বর বাড়িতে এর কার্যালয়। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান নড়াইলের বাসিন্দা এম এম আবুল হাসান। তিনি নড়াগাতী থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি।

আরমান মণ্ডলের সঙ্গে তিনি গত বছরের ১২ অক্টোবর ৩০০ টাকার দলিলে একটি চুক্তিতে সই করেন। চুক্তিপত্রে উল্লেখ রয়েছে, রাশিয়ার ক্যান্টনমেন্টে মালি অথবা বাবুর্চির কাজ দেওয়া হবে আরমানকে। বেতন হবে প্রায় দুই লাখ টাকা। ভিসার মেয়াদ হবে ১০ বছর। চুক্তিপত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকা নেওয়ার তথ্য থাকলেও বাস্তবে আরমানের কাছ থেকে দুই ধাপে আট লাখ ৬৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাঁর বাবা আকরাম মণ্ডলের।

আরমানের রাশিয়ার ভিসার একটি কপি কালের কণ্ঠের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, ভিসাটি ইস্যু হয়েছে গত ৫ ডিসেম্বর। ভিসার মেয়াদ ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে ৬ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ৩০ দিন। ১০ বছরের কর্মী ভিসা দেওয়ার কথা বলে মাত্র এক মাসের পর্যটক ভিসা দেয় ট্রাভেল এজেন্সি। এভাবে এজেন্সির সূক্ষ্ম কারসাজিতে ফেঁসে গেছেন নিরীহ তরুণ আরমান মণ্ডলসহ কয়েকজন। আরমান ছাড়া বাকিরা হলেননরসিংদীর তুহিন, সোহান ও মোবারক; ঢাকার আমিনুল; গাইবান্ধার হুমায়ুন কবির ও রহমত আলী ও আকরাম।

জানা গেছে, ড্রিম হোম ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান আবুল হাসান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামান্না ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসার আড়ালে বিদেশে কর্মী পাঠাচ্ছে। কার্যত তাদের কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির নিবন্ধনও নেই। স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে নিরীহ ছেলেদের মস্তিষ্কে উন্নত জীবনের আশা জাগিয়ে বিপদে ফেলছেন।

 

যেভাবে যুদ্ধের মাঠে তাঁরা

গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বব ফেসবুকে একটি বিজ্ঞাপন দেয় ড্রিম হোম ট্রাভেলস। এতে বলা হয়, রাশিয়ায় ক্যান্টনমেন্টে মালি ও বাবুর্চির কাজের সুযোগ রয়েছে। বেতন শুরু দেড় হাজার ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার তথ্যও তুলে ধরা হয় এতে।

ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে স্থানীয় দালালদেরও কাজে লাগিয়ে দেয় ড্রিম হোম ট্রাভেলস। দালালরা উন্নত জীবনের আশ্বাস দিয়ে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করে তরুণদের। সরল মনে তা বিশ্বাস করেন কলেজপড়ুয়া আরমানসহ অন্যরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে স্থানীয় দালালরা এই তরুণদের ঢাকায় ট্রাভেল এজেন্সির অফিসে নিয়ে আসে। একেকজন থেকে নেওয়া হয় আট লাখ টাকা করে।

আরমান কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা চুক্তি করে ড্রিম হোম ট্রাভেলস। তিনিসহ ১০ জন তরুণকে প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবে পাঠায় ড্রিম হোম ট্রাভেল। সেখান থেকে তাঁদের বিক্রি করে দেওয়া হয় রাশিয়ান একটি চক্রের কাছে। রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর তাঁদের এক মাসব্যাপী কমান্ডো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কৌশলে দুজন দেশে ফিরে আসতে সমর্থ হলেও ফেঁসে যান বাকি আটজন। তাঁদের জোরপূর্বক মারধর করে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়।

আরমান বলেন, আমরা বারবার তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে আমাদের কর্মী ভিসায় পাঠানো হয়েছে। আমরা কোনো যুদ্ধে অংশ নিতে চাই না। এর পরও আমাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়। রাশিয়ান কমান্ডোরা মারধর করে আমাদের যুদ্ধে নিয়ে যায়। আমাদের সামরিক পোশাক পরিয়ে হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দেওয়া হয়। কিয়েভে ড্রোন হামলা ও স্থলমাইন বিস্ফোরণ হলে আমার সামনে থাকা জিপে আটজনই প্রাণ হারান। আমি পেছনে মোটরসাইকেলে থাকায় প্রাণে বেঁচে যাই। আমি এখন দেশে ফিরতে চাই।

পাসপোর্টে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরমানের জন্ম ২০০২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। রাশিয়ায় প্রশিক্ষণ শেষে তাঁকে যে সৈনিক নম্বর দেওয়া হয়েছে, তার একটি ছবিও পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত ছবিতে দেখা গেছে, তাঁর আইডি নম্বর এ৫-১৯৭০৫৯।

 

আমার কলিজার টুকরা ছেলেকে ফেরত চাই

দুই মেয়েকে জড়িয়ে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করেন আরমানের মা ফাহিমা বেগম। একমাত্র ছেলের এমন জীবনসংকটে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা আকরামও পাথর হয়ে গেছেন। আরমানের দুই ছোট বোনও ভাইয়ের অপেক্ষায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।

গতকাল কথা বলতে গিয়ে বারবার আহাজারি করছিলেন ফাহিমা। বারবার ছেলেকে নিরাপদে দেশে ফেরত আনতে সাহায্য প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, আমার কলিজার টুকরা, আমার একমাত্র ছেলে। আমি ছেলের জীবন ভিক্ষা চাই। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে আনুন।

আরমানের বাবা আকরাম মণ্ডল বলেন, আমার ছেলেটারে কাজের কথা বলে রাশিয়ায় নিয়ে দালালরা বিক্রি করে দিয়েছে। স্যার, একটাই ছেলে আমার। ওরা চকোলেট কারখানায় চাকরি দেবে বলেছিল। যদি জানতাম রাশিয়ায় যুদ্ধে ঠেলে দেবে, কখনোই ছেলেটারে পাঠাতাম না। আমার কলিজার টুকরা ছেলেকে যেকোনো মূল্যে ফেরত চাই। সরকারের কাছে আবেদন করি, যেন এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।

তিনি জানান, স্থানীয় দালাল মনজুরুল হোসেন প্রথমে আরমানকে রোমানিয়ায় পাঠানোর প্রসস্তাব দেয়। দালাল বারবার ফুসলাতে থাকে। বিশেষ করে রাশিয়ায় ভালো কাজের সুযোগ রয়েছে বলে জানালে তাঁরা রাজি হন। বেতনও ধরার কথা দুই লাখ টাকা। প্রায় সাড়ে তিন মাস কেটে গেছে। এখন গোটা পরিবারে নেমে এসেছে দুশ্চিন্তার মেঘ।

 

ড্রিম হোম ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষের ভাষ্য

অভিযোগ প্রসঙ্গে কথা হয় ড্রিম হোম ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান এম এম আবুল হাসানের সঙ্গে। অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেন, মালি বা বাবুর্চির ভিসাতেই ১০ জনকে রাশিয়া পাঠিয়েছিলেন তিনি। তবে তাদের যুদ্ধের মাঠে ঠেলে দেওয়া হবেএ বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না।

যুদ্ধের প্রশিক্ষণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু সেনা ক্যাম্পে চাকরি, তাই আত্মরক্ষার কৌশল হিসেবে তাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এখানে আমাদের কোনো দায় নেই। এখন আমরা তাদের ফেরত আনতে চেষ্টা করছি। দোহারের নবাবগঞ্জের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের মাধ্যমে এই তরুণদের রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছিল বলে জানান তিনি।

স্থানীয় দালাল মনজুরুল হোসেনও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, আরমান তাঁর নিকটাত্মীয়। তিনি নিয়মিত ওই এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে কর্মী পাঠান। ভালো সুযোগ থাকায় আরমানকে রাশিয়ায় পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হবে, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। তিনি নিজেও এজেন্সি কর্তৃক মারাত্মক প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেন।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

রাজবাড়ীতে কৃষককে চেয়ারে বেঁধে পেটালেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রাজবাড়ীতে কৃষককে চেয়ারে বেঁধে পেটালেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

কৃষক আবজাল খানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আদালত ভবনে চেয়ারের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ী আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার আবজাল খান (৩০) রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাড়াইজুড়ি গ্রামের মৃত আনছের খানের ছেলে। তাঁকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের এজলাসে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতিত কৃষক আবজাল খান বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের শ্বশুরবাড়ি আমার এলাকায়। গত ৩০ জানুয়ারি পরিবার নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি এলাকায় হাঁটাহাঁটি করার সময় একটি বেওয়ারিশ কুকুর তাঁকে ধাওয়া করে। কুকুরটি আমার বাড়ি এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। ম্যাজিস্ট্রেট সুমন রাজবাড়ী সদর থানার এসআই আসাদকে কুকুরের মালিককে ধরে আনতে নির্দেশ দেন।

এরপরই থানার এসআই আসাদ আমাকে দেখা করতে বলেন। আমি ভয়ে দেখা না করে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। পরে স্থানীয় মেম্বারকে দিয়ে এসআই আসাদের সঙ্গে কথা বলি। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মেজো ভাই সাহেব আলী খানকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যাই।
পরে আমাদের রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে কুকুরটি আমার নয় বলে জানানো ছাড়াও ক্ষমা প্রার্থনা করি। তার পরও কোনো কথা না শুনে আমাকে চেয়ারের সঙ্গে পিঠমোড়া করে বেঁধে কাঠের রুলার দিয়ে পশ্চােদশ ও পিঠে অন্তত ৩০টি আঘাত করে। এতে আমার পশ্চােদশ ও পিঠে রক্ত জমাট বেঁধে নিল হয়ে যায়। আমাকে পেটানোর সময় তিনি হুমকি দিয়ে বলতে থাকেন, ওই কুকুরটি যদি আর এলাকায় দেখা যায় এবং এ বিষয়ে আমি যদি কাউকে কিছু বলি তবে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবেন।
পরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে রাত ৮টার দিকে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুঠোফোনে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে গতকাল রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

মন্তব্য
তদন্ত কমিটি গঠন

যৌথ বাহিনীর অভিযানে যুবদল নেতার মৃত্যুতে কমান্ডার প্রত্যাহার

► দ্রুত তদন্তের নির্দেশ : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ► নির্যাতন-নিপীড়নে হত্যার অভিযোগ মির্জা ফখরুলের
নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে যুবদল নেতার মৃত্যুতে কমান্ডার প্রত্যাহার

কুমিল্লায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতা মো. তৌহিদুল ইসলামের (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের কমান্ডারকে প্রত্যাহার করেছে সেনাবাহিনী। এ ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনে একটি উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এদিকে এ ঘটনার দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সরকারও।

গতকাল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে সরকারের এই নির্দেশনার কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে যেকোনো ধরনের নির্যাতন ও হত্যার কঠোর নিন্দা জানায়। জাতীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবাধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করাই এই সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য, যেখানে দেশের শীর্ষ মানবাধিকারকর্মীরা সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দেশে এ ধরনের অপরাধের বিচারিক প্রক্রিয়া সংস্কারের লক্ষ্যে সরকার এরই মধ্যে একাধিক কমিশন গঠন করেছে।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ, অপরাধ ব্যবস্থাপনা এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব সুযোগ নির্মূলে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপ করবে। অন্তর্বর্তী সরকার এই সংস্কার কর্মসূচি কার্যকর করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

অন্যদিকে তৌহিদুলকে সাদা পোশাকধারী লোকেরা নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে সরকার ও প্রশাসনে ঘাপটি মারা আওয়ামী দোসররা এ ঘটনা ঘটিয়েছে কি না তার অনসুন্ধান জরুরি বলেও দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, কোনো সরকারি বাহিনীই আইন হাতে তুলে নিতে পারে না। কখনোই বিচারবহির্ভূতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করার কোনো অধিকার সরকারি বাহিনীগুলোর নেই। আমি তৌহিদুল ইসলামকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।

শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কুমিল্লার যুব নেতার এই নির্মমতা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলকেই মনে করিয়ে দেয়।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার হলোগুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়া, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের ভয়ভীতি থেকে দেশবাসীকে নিরাপদ রাখা।

এদিকে আইএসপিআর জানায়, গত ৩১ জানুয়ারি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা থেকে মো. তৌহিদুল ইসলামকে আটক করা হয়। পরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনাটির তদন্তে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের পাঁচথুবী গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে ও ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক। সংসারে তাঁর স্ত্রী ও চার কন্যাসন্তান রয়েছে।

তৌহিদুলের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে একটি শিপিং কম্পানিতে চাকরি করতেন। গত রবিবার তাঁর বাবার মৃত্যুর খবরে তিনি বাড়ি যান। শুক্রবার তাঁর বাবার কুলখানি হওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি ও একটি লাল রঙের গাড়ি তাঁর বাড়িতে যায়। পরে তৌহিদুল ইসলামের কাছে অস্ত্র আছে এমন অভিযোগে তাঁকে ধরে নিয়ে যায়।

 

বিচারবহির্ভূত হত্যা অনুমোদনযোগ্য নয়

কোনো অবস্থায়ই বিচারবহির্ভূত হত্যা অনুমোদনযোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। গতকাল শনিবার কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে যুবদল নেতার প্রাণ হারানোর পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা জানান।

সাইফুল হক বলেন, কুমিল্লায় অমানবিক নির্যাতনের কারণে মো. তৌহিদুল ইসলাম নামের এক যুবদল নেতা প্রাণ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা। নিহত যুবদল নেতার শরীরে নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন থাকার কথা জানিয়েছেন তাঁর স্বজন ও চিকিৎসকরা।

সাইফুল হক আরো বলেন, ছাত্র শ্রমিক জনতার গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এ ধরনের নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেশবাসী কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না। এই ধরনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা শুধু আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের স্মৃতিকেই মনে করিয়ে দেয়।

মন্তব্য
গবেষণার তথ্য

দেশে মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশই ক্যান্সারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেশে মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশই ক্যান্সারে

দেশে মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশ ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপির সংমিশ্রণ চিকিৎসা পেয়েছিলেন। ৭.৪ শতাংশ রোগী ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পরও কোনো চিকিৎসা না নিয়েই মারা গেছেন। মৃত রোগীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ১১.৪ শতাংশ ফুসফুস, ৮.০ শতাংশ শ্বাসনালি ও ৫.৭ শতাংশের পাকস্থলীর ক্যান্সার।

পুরুষদের মৃত্যুর প্রধান দুটি ক্যান্সার হলো ফুসফুস (১৯.০%) এবং শ্বাসনালির (১৪.৩%)। নারীদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সার (১৪.৩%) এবং পাকস্থলীর ক্যান্সার (১৪.৩%)।

বাংলাদেশে জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের করা এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল শনিবার বিএসএমএমইউয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

গবেষকদলের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান জানান, দেশে প্রতি লাখে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০৬। প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত হয় লাখে ৫৩ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ফুসফুস, লিভার ও শ্বাসনালির ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা বেশি।

কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার ৪৬ হাজার ৬৩১টি পরিবারের দুই লাখ এক হাজার ৬৬৮ জন মানুষ এই গবেষণার আওতায় ছিলেন।

তাঁদের মধ্যে ২১৪ জন ক্যান্সার আক্রান্ত। প্রতি লাখে পুরুষ ১১৮ জন ও নারী ৯৬ জন। ৯৩ শতাংশ রোগীর বয়স ১৮ থেকে ৭৫ বছর। ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ২.৪ শতাংশ শিশুরা রয়েছে। ৫.১ শতাংশ রোগীর বয়স ৭৫ বছরের বেশি।

গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয় ২০২৩ সালের জুলাই মাসে, যা এখনো চলমান। এতে অর্থায়ন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) ও বিএসএমএমইউ।

ডা. মো. খালেকুজ্জামান জানান, গবেষণায় দেশে ৩৮ ধরনের ক্যান্সারের রোগী পাওয়া গেছে। তাঁরা পাঁচ ধরনের ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এগুলো স্তন (১৬.৮%), মুখ (৮.৪%), পাকস্থলী (৭.০%), শ্বাসনালি (৭.০%) এবং জরায়ু মুখের ক্যান্সার (৫.১%)। পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শ্বাসনালি, পাকস্থলী, ফুসফুস, মুখ ও খাদ্যনালির ক্যান্সারে। নারীরা স্তন, জরায়ুমুখ, মুখ, থাইরয়েড ও ডিম্বাশয়ে।

পুরুষ ক্যান্সার রোগীদের ৭৫.৮ শতাংশ ধূমপায়ী এবং পান, জর্দা ও তামাক সেবনকারী ৪০.৫ শতাংশ। নারী ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ৬০.৬ শতাংশ পান, জর্দা ও তামাক সেবনকারী। ৪৬ শতাংশ রোগীর ক্যান্সারের সঙ্গেই তামাক সেবনের সম্পর্ক রয়েছে।

প্রধান গবেষক পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. খালেকুজ্জামান জানান, এই গবেষণায় প্রতিটি বাড়িতে বিশেষভাবে তৈরি করা ইন্টারনেটভিত্তিক ক্যান্সার নিবন্ধন সফটওয়্যার করে সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৪১১টি পরিবারের ৫৮ হাজার ৫৩৯ জন অংশগ্রহণকারীর ফলোআপ পরিদর্শন করা হয়েছিল। এতে দেখা গেছে, বছরে নতুন ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা যুক্ত হয়েছে প্রতি লাখে ৫২.৯ জন। নতুন সংযোজিত তিনটি প্রধান ক্যান্সার ছিল : ফুসফুস (১৬.১%), যকৃত (১২.৯%), এবং গলা (১২.৯%)।

পুরুষদের জন্য নতুন সংযোজিত ক্যান্সারের মধ্যে তিনটি প্রধান ক্যান্সার হলোফুসফুস (১৬.১%), যকৃত (১২.৯%) এবং স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার (১২.৯%)। নারীদের নতুন সংযোজিত ক্যান্সার হলোলিভার (যকৃত) (২৩.১%), জরায়ুর ক্যান্সার (১৫.৪%) এবং খাদ্যনালির ক্যান্সার (১৫.৪%)।

বাংলাদেশে ক্যান্সারের বোঝা : জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি শীর্ষক এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ জাকির হোসেন।

অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, নিত্যনতুন জ্ঞান তৈরিতে গবেষণার বিকল্প নেই। বিএসএমএমইউ থেকে সেই গবেষণা পরিচালনা করা উচিত, যা রোগীদের কল্যাণে কাজে আসে। যেসব গবেষণা দেশের মানুষের, দেশের রোগীদের উপকার হবে, সে ক্ষেত্রে সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, গণ-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে এমন গবেষণার জন্য ফান্ডের কোনো সমস্যা হবে না। একই সঙ্গে এই পরিসংখ্যান বাংলাদেশে ক্যান্সার নিয়ে গবেষণার বহুমুখী দ্বার উন্মোচন করেছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

লিবিয়ায় সাগরে ২০ মরদেহ সবাই বাংলাদেশি হওয়ার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
লিবিয়ায় সাগরে ২০ মরদেহ সবাই বাংলাদেশি হওয়ার শঙ্কা

লিবিয়ার ব্রেগা উপকূলে উদ্ধার হওয়া ২০ জনের মরদেহের সবাই বাংলাদেশি বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় রেড ক্রিসেন্ট। লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের বরাত দিয়ে গতকাল শনিবার রাত পৌনে ১০টায় ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

দূতাবাস আরো জানিয়েছে, মরদেহগুলো পচন ধরায় নাগরিকত্ব শনাক্ত করা যায়নি।

বেশ কয়েকটি সূত্র জানায়, গত ২৪ জানুয়ারি লিবিয়া উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে একটি নৌকা ইতালির উদ্দেশে রওনা দেয়।

ওই নৌকায় অনেক বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। নৌকাটি ডুবে গিয়ে লাশ ভেসে আসছে লিবিয়া উপকূলে। তবে ওই নৌকায় ঠিক কতজন বাংলাদেশি ছিলেন, তা এখনো জানা যায়নি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত রাতে জানায়, ব্রেগার ৪০ কিলোমিটার দূরে মরদেহগুলো সাগরে ভেসে উঠেছে।
লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্ট মরদেহগুলো বাংলাদেশিদের বলে আশঙ্কা করলেও কোনো তথ্য-প্রমাণ পায়নি। ঘটনাস্থল লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের অধীন। সেখানে যাওয়ার জন্য অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ দূতাবাস।

এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে যে লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ভূমধ্যসাগরের উপকূলবর্তী ব্রেগা তীরে বেশ কয়েকজন অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ দূতাবাস বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছে।

উদ্ধারকৃত মরদেহগুলোর মধ্যে বাংলাদেশি নাগরিক থাকার আশঙ্কার কথা বিভিন্ন সূত্রে জানা গেলেও এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। তবে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের জন্য দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রক্ষা করছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ