ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
৬ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫
৬ চৈত্র ১৪৩১, ১৯ রমজান ১৪৪৬
বিএনপির বর্ধিত সভা

প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি তৃণমূল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি তৃণমূল

দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে তৃণমূলের নেতাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত মূল্যায়ন ও মতামত পায়নি বিএনপি। এতে বড় আয়োজনে রাজনৈতিক মহলে নজর কাড়লেও দলের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে অসন্তুষ্টি রয়েছে। 

বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা মনে করেন, একসময় তৃণমূলের নেতারা তাঁদের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে মতামত দিয়ে নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখতেন। কিন্তু এবার গুটিকয়েকজন নেতা ছাড়া বেশির ভাগের মতামত ও সুপারিশ ছিল খুব সাধারণ মানের।

তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিকভাবে সচেতন কিংবা রাজনৈতিক চর্চা করেনএমনটি তাঁদের বক্তব্যে মনে হয়নি।

সভার শেষের দিকে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশে বলেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে বর্তমান বাস্তবতায় যে ধরনের বক্তব্য আপনাদের কাছ থেকে আশা করেছিলাম, তা দিতে পারেননি। তাই আপনাদের ধন্যবাদ দিতে পারলাম না।

বর্ধিত সভার আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতারা বলেন, ১২ ঘণ্টা অনুষ্ঠান চলেছিল।

১০৫ জন নেতা বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান এবং সেই আন্দোলনের মূল্যায়ন উঠে আসেনি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দলের করণীয় কী হওয়া উচিত, সে বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ মতামত আসেনি বললেই চলে। শুধু শীর্ষ নেতৃত্বকে তুষ্ট করেছেন।
  

এবারের সভায় কেন্দ্রের প্রত্যাশা ছিল, নেতাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় আসনের একটি সুস্পষ্ট চিত্র উঠে আসবে, কিন্তু সেটাও হয়নি। ফলে সংসদীয় এলাকার প্রকৃত চিত্র কেন্দ্রের কাছে সেভাবে স্পষ্ট হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, এই ধরনের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক মঞ্চে এসেও তৃণমূলের নেতাদের বেশির ভাগ গঠনমূলক বক্তব্য দিতে পারেনি। এতেই প্রমাণ হয়, দলের তৃণমূলে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে নেতা বানাতে গিয়ে যে ত্যাগী ও যোগ্যদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়েছে বর্ধিত সভায়।

 

কেন্দ্রীয় একজন সহসম্পাদক কালের কণ্ঠকে বলেন, গত ৫ আগস্টের পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এত বৃহৎ পরিসরে নেতার উপস্থিতিতে উৎসবের আমেজে বড় মিলনমেলায় পরিণত হয় এই সভা। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য এই বর্ধিত সভা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

অবশ্য লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। অসুস্থতার মধ্যে দীর্ঘদিন পর খালেদা জিয়াকে পেয়ে নেতারা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাঁরা বলছেন, দলীয় চেয়ারপারসনের এই উপস্থিতিই ছিল সভার প্রধান আকর্ষণ।

বর্ধিত সভার গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় কর্ম-অধিবেশন বিষয়ে মূল্যায়ন করতে গিয়ে নেতারা বলেন, অতীতে দেখা গেছে, এমন সভায় জেলা, উপজেলা ও থানার নেতারা গঠনমূলক সমালোচনা করতেন, অভিজ্ঞতার আলোকে বলতেন। কিন্তু এবার সেটা দেখা যায়নি। অর্থাৎ তৃণমূল নেতাদের নানা গঠনমূলক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বর্ধিত সভার যে আমেজ তৈরি হয়, সেটা হয়নি। নেতাদের উপস্থিতি এবং আয়োজনের দিক থেকে সবার প্রশংসা কেড়েছে এই বর্ধিত সভা।

অবশ্য বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী কালের কণ্ঠকে বলেন, সভা অত্যন্ত সফল হয়েছে। তৃণমূলের নেতারা গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। সেই আলোকে ১০ প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। 

১০ প্রস্তাব গ্রহণ : গতকাল শুক্রবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দলের বর্ধিত সভার প্রস্তাব ও সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়, বিএনপিকে জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণের দায়িত্ব গ্রহণে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বর্ধিত সভায়। দল এবং সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের জনবান্ধব কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মাঝে সক্রিয় হওয়ার এবং কথা ও কাজে জনগণের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দলীয় নীতি, আদর্শ, কর্মসূচি বাস্তবায়নে অবহেলা এবং দুর্নীতি-অনাচারসহ গণবিরোধী সব কর্মকাণ্ড ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে বিরত থাকার জন্যও সবাইকে কঠোর নির্দেশ প্রদান করছে।

বিএনপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বাধীনতার ঘোষক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর-উত্তমের ঘোষিত ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়’—এই আদর্শকে ধারণ করে এই সভা ঐক্যেই শক্তি-ঐক্যেই মুক্তি এই আপ্তবাক্যকে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দলের সৎ ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের যথাযথ মূল্যায়ন করে বিজয়ের পথে এগিয়ে চলার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেছে।

২০১৫ সালে খালেদা জিয়ার ঘোষিত ভিশন ২০৩০ এবং যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনে গৃহীত ২০২৩ সালে তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখার আলোকে রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দল/সংগঠনের সঙ্গে মিলে অব্যাহতভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলা হয়, ঐকমত্যে গৃহীত যেসব সংস্কার প্রস্তাব নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন সম্ভব, তা অবিলম্বে বাস্তবায়ন এবং যেসব সংস্কারের জন্য আইন কিংবা সংবিধান পরিবর্তন প্রয়োজন, তা নির্বাচিত জাতীয় সংসদে অনুমোদনের লক্ষ্যে পেশ করার জন্য বিএনপির বর্ধিত প্রস্তাব করছে।

সর্বাগ্রে সংসদ নির্বাচনের দাবি : বর্ধিত সভা মনে করে, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমেই শুধু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে থাকে।

সভা থেকে দাবি করে বলা হয়, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে যথাশীঘ্র সম্ভব সর্বাগ্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি : সভা থেকে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যের অযৌক্তিক ঊর্ধ্বগতি এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমবর্ধমান অবনতিতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখা এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য অর্ন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি : গণবিরোধী ও মানবতাবিরোধী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ তাঁর সহযোগীরা কিভাবে নির্বিঘ্নে দেশ থেকে পালিয়ে গেল এবং এখনো অসংখ্য অপরাধী অবাধে বিচরণ করছে তার একটি সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা বিএনপির বর্ধিত সভা সরকারের কাছে দাবি করছে। এসব অপরাধীর বিচার ও শাস্তি প্রদানে বিলম্বে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, বিদেশে অবস্থান করে যারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও শান্তি-শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে এবং অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের এবং তাদের দেশীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে কার্যকর কূটনৈতিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের আরো উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।

বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখার অঙ্গীকার : বর্ধিত সভায় ঐক্যবদ্ধ বিএনপি ও অঙ্গ দল, সহযোগী সংগঠনগুলোকে আরো ঐক্যবদ্ধ, শক্তিশালী, কার্যকর ও জনপ্রিয় করার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করা হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অধিকারহীন, অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত ও মানবিকভাবে অবহেলিত জনগণকে তাদের কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক মর্যাদায় ফিরিয়ে দেওয়ার প্রধান দায়িত্ব দেশের সবচেয়ে বড়, নির্ভরযোগ্য এবং অতীতে বারবার গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি প্রদানকারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের।

তারেকের নেতৃত্বের প্রশংসা : বর্ধিত সভায় ফ্যাসিবাদবিরোধী এই গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তি স্থাপন ও শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে বিজয়ী করার লড়াইয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কৌশলী, সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রশংসা অর্জন করেছে। দলের দুঃসময়ে দায়িত্ব গ্রহণ করে দলের কার্যক্রমকে শক্তিশালী, দলকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত করা, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা এবং সর্বোপরি ফ্যাসিবাদ পতনে নিয়ামক ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। একই সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলনে শহীদ, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের সহায়তার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনি মানবিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন।

বর্ধিত সভায় দীর্ঘ ১৬ বছরের অবিরাম আন্দোলন এবং তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং আহত, পঙ্গু, দৃষ্টিহীন ও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে সব প্রকৃত শহীদের তালিকা প্রণয়ন, তাঁদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান, তাঁদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে।

লন্ডনে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্যে দেশবাসীসহ দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের কাছে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করার আহ্বান জানানো হয়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

দুই দশক আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে পৃথক আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এসব আবেদন গতকাল বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ছিল বলে সাংবাদিকদের জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী ছিলেন তিনি। 

গত বছর ১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে বলা হয়, আইনের ভিত্তিতে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়নি। ফলে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ। তাই বিচারিক আদালতের ডেথ রেফারেন্স নাকচ এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করা হলো। এ রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ বিচারিক আদালত যাঁদের সাজা দিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে খালাস দেওয়া হয়।

খালাসের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা উচিত বলে সেদিন মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগের দাবি, এ হামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলার রায় হয়। রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত।
সেই সঙ্গে ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল-জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির পর সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন উচ্চ আদালত।

 

মন্তব্য
সংস্কারে এখনো লিখিত মতামত দেয়নি বিএনপিসহ বড় দলগুলো

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। লিখিত মতামত পাওয়ার পর অন্য দলগুলোকে সংলাপে ডাকবে কমিশন। তবে এখনো বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকে লিখিত মতামত জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হচ্ছে। সংসদ ভবনের এলডি হলে এই সংলাপে প্রথম দিনে অংশ নেবে এলডিপি। আগামী শনিবার দুটি এবং রবিবার একটি দল সংলাপে অংশ নেবে। পর্যায়ক্রমে সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সংলাপে থাকছেন না। সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত ১৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে। আজ সকাল ১০টায় লিখিত মতামত জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্য দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। দ্রুতই তারা মতামত জমা দেবে বলে জানিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লিখিত মতামত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোর ওপর আমাদের দলীয় মতামত প্রস্তুত করা হচ্ছে। যুগপত্ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যেকোনো দিন সেগুলো কমিশনে জমা দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, মতামতের জন্য যে ছক করা কাগজ (স্প্রেডশিট) দেওয়া হয়েছে, তাতে মতামত দিলে স্পষ্ট হওয়া যাবে না। বরং বিভ্রান্তি ছড়াবে। সে কারণে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। বিভ্রান্তি এড়াতে বিস্তারিত আকারে মতামত জানানো হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংস্কার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আমাদের পার্টি ফোরামে আলোচনা হয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে মতামত দেওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে কমিশনকে জানিয়েছি। জোটগতভাবে সংলাপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সুপারিশগুলোর বিষয়ে লিখিতভাবে মতামত জানানো হবে।

সূত্র মতে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। তারা সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদনগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ চিহ্নিত করে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন-সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ রয়েছে। ওই সুপারিশগুলো ছক আকারে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ওই ছকগুলো গত ৬ মার্চ ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১২টি দল নিবন্ধিত নয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯। কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলোকে তাদের মতামত জানানোর জন্য বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে সাতটি দল মতামত দিলেও পরবর্তী সময়ে আরো আটটি দল মতামত জমা দিয়েছে। অন্যরা অতিরিক্ত সময় নিয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। এ পর্যন্ত মতামত জমা দেওয়া ১৫টি দল হলো এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), আমজনতার দল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, জাতীয় গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ জাসদ।

মতামত দেওয়ার জন্য সময় নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ১২ দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

 

মন্তব্য
অর্থ উপেদষ্টা

দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে
সালেহউদ্দিন আহমেদ

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় নজর দেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বাড়ানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আগামী বাজেটে ব্যক্তি খাতের করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকার করার প্রস্তাব দিয়েছেন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশনের শীর্ষ নির্বাহীরা। একই সঙ্গে বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বক্তব্যের কলেবর কমানো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং নির্ভুল ডাটা-পরিসংখ্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

গণকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তাঁরা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। সভা পরিচালনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্যের সময় অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে আগামী জুনে। আমাদের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা এমন একটি বাজেট দিয়ে যেতে চাই যেটি পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সরকার যে-ই আসুক, যেন ছুড়ে ফেলে দিতে না পারে, আমরা সেভাবেই একটি বাজেট দিতে চাই। আগামী বাজেটে আমরা প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছি না, বরং আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছি। আমরা দেশীয় শিল্প সুরক্ষার একটি বাজেট দিতে চাই। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উৎপাদনমুুখিতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, সামনেই তো নির্বাচন। আর জুনে নতুন বাজেট। ফলে আপনারা যে বাজেট দিতে যাচ্ছেন সেটা পরবর্তী সরকারের জন্য কতটা সহায়ক হবে? যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার বলেন, বিপর্যস্ত অর্থনীতি সামলাতে আপনি সফল হয়েছেন। এ জন্য ধন্যবাদ আপনি পেতেই পারেন। আগামী বাজেট সত্যিই আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ।

কেননা অনেক দিন ধরেই মূল্যস্ফীতি। এটা আপনি কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। এবারের রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে যে ধরনের ভয় বা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা হয়নি। অনেকাংশে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আসছে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো, টিসিবি কার্যক্রমের আওতা ও বাজেট বাড়ানো, আবার রেশনিং সিস্টেম ফিরিয়ে আনা যায় কি না সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি।

সিনিয়র সাংবাদিক শওকত হোসেন মাসুম বলেন, একটি অর্থবছরে প্রকৃতপক্ষে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয় সে হিসাবটা কখনো আমরা পাইনি। এবার আপনারা সে হিসাব দেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। ১৫ বছরে গণমানুষের প্রকৃত আয় বাড়েনি। আপনারা একটা মেকানিজম করে এই হিসাবটা বের করুন যে এক অর্থবছরে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয়। সবখানে সংস্কার হচ্ছে, আপনারা বাজেট বত্তৃদ্ধতার আকারে সংস্কার আনুন। ঢাউস আকৃতির বাজেট বত্তৃদ্ধতার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা কমিয়ে আনুন। বাস্তবমুখী বাজেট দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে যে বাজেট দেওয়া হতো সেটা ছিল অহেতুক। বাজেট উপস্থাপনের নামে দেখানো হতো এক রকমের প্রামাণ্যচিত্র।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অ্যাসোসিয়েট এডিটর শামীম জাহেদী বলেন, কালো টাকা বৈধ করার ক্ষেত্রে কর সমান হবে কি না সেটায় আপনারা নজর দেবেন। দেশে এতগুলো টেলিভিশন আছে, দেড় হাজার কেবল অপারেটর আছে, সারা দেশে সাড়ে তিন কোটি বাড়ি আছে। এর ৫৪ শতাংশ বাড়িতে টেলিভিশন দেখা যায়। প্রত্যেকে ৩০০/৫০০ টাকা দিয়ে সংযোগ নেন। এখানকার টাকাটা আমরা এক টাকাও পাই না। সরকার পায় কি না আমি জানি না। এখানে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে আমরা কিছু টাকা পাব। সরকারও রাজস্ব পাবে।

সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহনেওয়াজ করিম বলেন, সবার জন্য সুখবর ও স্বস্তিদায়ক বাজেট দিন। করদাতাদের জন্য ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তন করা যায় কি না ভেবে দেখুন। এটা করতে পারলে তাঁরা সম্মানিত বোধ করবেন।

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিফলন বাজেটে থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা। করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ করা হোক। বেকারত্ব কমনোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। এ জন্য এসএমই উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন। নয়তো বন্ধ করে দিন। এটা মিনিমাম পাঁচ হাজার টাকা হওয়া উচিত। টেলিভিশনে কোনো ওয়েজ বোর্ড নেই। একটি ওয়েজ বোর্ড এখানেও থাকা প্রয়োজন। ভারতীয় চ্যানেলগুলো এখানে দেদার চলছে, আমাদের কোনো চ্যানেল ভারতে চলে না। এখানেও কাজ করা প্রয়োজন।

এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মনিউর রহমান বলেন, করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ করা হোক। বাজেট বাস্তবায়ন কতটুকু হলো সেটা দেখা দরকার।

মন্তব্য
নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না
মো. নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ চান না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক। প্রথমত, দলের ভেতরে যারা অন্যায়ের জন্য দায়ী, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গত ১৭ মার্চ দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, নতুন দলের চ্যালেঞ্জ নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ নিয়ে।

আন্দোলন থেকে সরকারে, তারপর আবার রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাটকে নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি সরকারকে বাইরে থেকে দেখা আর ভেতর থেকে দেখা সম্পূর্ণ আলাদা অভিজ্ঞতা। অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ সময় ছিল। এটি আমার জন্যও চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি সময়ের দাবিতেই পদত্যাগ করে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরেছি।

এখন আমি এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যত্ রাজনৈতিক পথচলা গঠন করতে চাই। নতুন রাজনৈতিক দল চালানো অবশ্যই কঠিন, তবে আমি প্রস্তুত।

নিজের দল এনসিপি সম্পর্কে নাহিদ বলেন, এনসিপি একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য হলো নতুন কণ্ঠস্বর, বিশেষ করে তরুণ এবং সব সামাজিক শ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য জায়গা তৈরি করা, যারা বছরের পর বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী রাজনীতি থেকে বাদ পড়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং আমাদের এজেন্ডাও সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাদের মধ্যে কোনো সংযোগ নেই। কিছু দাবিতে মিল থাকতে পারে, যেমন আমরা সাংবিধানিক সংস্কার ও গণপরিষদ গঠনের পক্ষে। কিন্তু আমাদের আদর্শিক অবস্থান ভিন্ন এবং উগ্রবাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো আগের শাসনামলের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। দেশে একটি স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। তাই নির্বাচন এনসিপির তাত্ক্ষণিক অগ্রধিকার নয়। বর্তমানে আমরা নির্বাচনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।

সূত্র : বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ