স্কুলে গেলেই খাবার পাবে ৩১ লাখ শিক্ষার্থী

এম আর মাসফি
এম আর মাসফি
শেয়ার
স্কুলে গেলেই খাবার পাবে ৩১ লাখ শিক্ষার্থী

দেশের দারিদ্র্যপীড়িত ১৫০ উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতে আবার খাবার দেওয়ার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য আগামী ২৩ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উঠতে যাচ্ছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। এই কর্মসূচির আওতায় ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিশুকে প্রতিদিন স্কুলে খাবার দেওয়া হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতে স্কুলে খাবার দেওয়ার আগের প্রকল্পটি ২০২২ সালে শেষ হয়েছে। এরপর আরেকটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হলেও সেটি বিতর্কিত হয় মূলত খিচুড়ি রান্না শিখতে বিদেশ যাওয়ার কর্মসূচির কারণে। বিতর্কের জন্য একনেক সভায় উত্থাপনের পরও তা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

১৭ হাজার কোটির বিতর্কিত প্রকল্পটি এখন প্রস্তাব করা হয়েছে পাঁচ হাজার ৪৫২ কোটি টাকায়।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি নামের নতুন প্রকল্পটি দেশের সব অঞ্চলে বাস্তবায়িত হবে না। অতি দারিদ্র্যপীড়িত ১৫০টি উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসচি বাস্তবায়িত হবে।

এসব বিদ্যালয়ের ফিডিং কর্মসূচি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ১৯২টি ব্যাচে প্রায় ১৯ হাজার ৭১৯ জন প্রধান শিক্ষককে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।

সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, আগামী একনেক সভায় স্কুল মিল প্রকল্প উঠবে। ঝরে পড়া রোধ, এনরোলমেন্ট ও শিশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণে এ প্রকল্প অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

প্রকল্প সূত্র বলছে, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা স্কুলে গেলেই ফর্টিফায়েড বিস্কুট, কলা বা মৌসুমি ফল, বান, ডিম ও ইউএইচটি দুধ দেওয়া হবে। এ প্রকল্পের অধীনে শুধু খাবারের প্যাকেজেই ব্যয় হবে পাঁচ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা।

২০২৫ সাল থেকে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।

এ প্রকল্পের অধীনে ৫৮ কোটি টাকার বেশি হ্যান্ডওয়াশ কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। স্কুল ফিডিংয়ের জন্য আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ৩০০ জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব জনবলের জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ২২ কোটি টাকা।

শিক্ষায় বিনিয়োগ ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্বের প্রায় ৮০ শতাংশ দেশে স্কুল মিল কর্মসূচি চালু রয়েছে। স্কুল মিল কর্মসূচিকে সর্বজনীন করার মাধ্যমে শিক্ষায় সব ধরনের বৈষম্য নিরসন, শিক্ষার্থীদের জন্য খাদ্য নিরাপত্তাবলয় সৃষ্টি করা এবং শিক্ষণফল ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নকে গতিশীল করার লক্ষ্যে জাতীয় স্কুল মিল নীতি ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ স্কুল মিল নীতিতে ৩০ লাখের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অন্তত ৩০ শতাংশ ক্যালরি ও ৫০ শতাংশ মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্টের চাহিদা পূরণে সক্ষম দুপুরের খাবার সরবরাহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে বলে মনে করে প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।

এ প্রকল্পে স্থানীয় ক্ষুদ্র কৃষকের কাছ থেকে ফলমূল (মৌসুমি) ও ডিম কেনা হবে বলে স্থানীয় উৎপাদন বাড়বে। যেসব এলাকায় পুষ্টিসমৃদ্ধ ফর্টিফায়েড বিস্কুট এবং ইউএইচটি মিল্ক উৎপাদিত হবে, সেসব এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। 

স্কুল ফিডিং কার্যক্রম ব্যবস্থাপনা, প্রদেয় খাবারের পুষ্টিমান, ব্যয় ইত্যাদি বিবেচনায় স্বল্পমেয়াদে সপ্তাহের পাঁচ দিন উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন ফর্টিফায়েড বিস্কুট, বান, পাস্তুরিত দুধ, ফল ও ডিমের সমন্বয়ে গঠিত প্যাকেটজাতকৃত খাবার সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মিরাজুল ইসলাম উকিল কালের কণ্ঠকে বলেন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে ও ঝরে পড়া রোধে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র এলাকার প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা এখন এ সুবিধা পাবে।

স্কুল মিল কর্মসূচির গুরুত্ব ও ফলাফল বিবেচনায় বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় সর্বপ্রথম ২০০১ সালে বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি শুরু করা হয়। ২০১০ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি (তৃতীয় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে। পরে পর্যায়ক্রমে দেশের ৪৯২টি উপজেলা এবং সিটি করপোরেশন/পৌর এলাকার ২১টি শিক্ষা থানার প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ সরকারি (জিওবি) অর্থায়নে ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রাইমারি স্কুল মিল শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়।

ওই সময় এ প্রকল্পের অধীনে খিচুড়ি রান্না শিখতে বিদেশ যাওয়ার কর্মসূচি নেন কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ পেলে সারা দেশে বিতর্ক তৈরি হয়। পরে একনেক সভায় প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হলে এটি অনুমোদন না করে শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবসম্মত ও কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

 

 

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

দুই দশক আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে পৃথক আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এসব আবেদন গতকাল বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ছিল বলে সাংবাদিকদের জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী ছিলেন তিনি। 

গত বছর ১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে বলা হয়, আইনের ভিত্তিতে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়নি। ফলে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ। তাই বিচারিক আদালতের ডেথ রেফারেন্স নাকচ এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করা হলো। এ রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ বিচারিক আদালত যাঁদের সাজা দিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে খালাস দেওয়া হয়।

খালাসের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা উচিত বলে সেদিন মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগের দাবি, এ হামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলার রায় হয়। রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত।
সেই সঙ্গে ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল-জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির পর সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন উচ্চ আদালত।

 

মন্তব্য
সংস্কারে এখনো লিখিত মতামত দেয়নি বিএনপিসহ বড় দলগুলো

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। লিখিত মতামত পাওয়ার পর অন্য দলগুলোকে সংলাপে ডাকবে কমিশন। তবে এখনো বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকে লিখিত মতামত জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হচ্ছে। সংসদ ভবনের এলডি হলে এই সংলাপে প্রথম দিনে অংশ নেবে এলডিপি। আগামী শনিবার দুটি এবং রবিবার একটি দল সংলাপে অংশ নেবে। পর্যায়ক্রমে সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সংলাপে থাকছেন না। সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত ১৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে। আজ সকাল ১০টায় লিখিত মতামত জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্য দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। দ্রুতই তারা মতামত জমা দেবে বলে জানিয়েছে।

দ্রুততম সময়ের মধ্যে লিখিত মতামত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোর ওপর আমাদের দলীয় মতামত প্রস্তুত করা হচ্ছে। যুগপত্ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যেকোনো দিন সেগুলো কমিশনে জমা দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, মতামতের জন্য যে ছক করা কাগজ (স্প্রেডশিট) দেওয়া হয়েছে, তাতে মতামত দিলে স্পষ্ট হওয়া যাবে না। বরং বিভ্রান্তি ছড়াবে। সে কারণে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। বিভ্রান্তি এড়াতে বিস্তারিত আকারে মতামত জানানো হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংস্কার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আমাদের পার্টি ফোরামে আলোচনা হয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে মতামত দেওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে কমিশনকে জানিয়েছি।

জোটগতভাবে সংলাপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সুপারিশগুলোর বিষয়ে লিখিতভাবে মতামত জানানো হবে। তবে ছক পূরণ বা টিকচিহ্ন দেওয়ার মধ্যে আমরা নেই। জোটের বৈঠকে আলোচনা করে দ্রুতই কমিশনকে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

সূত্র মতে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। তারা সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদনগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ চিহ্নিত করে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন-সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ রয়েছে। ওই সুপারিশগুলো ছক আকারে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ওই ছকগুলো গত ৬ মার্চ ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১২টি দল নিবন্ধিত নয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯। কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলোকে তাদের মতামত জানানোর জন্য বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে সাতটি দল মতামত দিলেও পরবর্তী সময়ে আরো আটটি দল মতামত জমা দিয়েছে। অন্যরা অতিরিক্ত সময় নিয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। এ পর্যন্ত মতামত জমা দেওয়া ১৫টি দল হলো এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), আমজনতার দল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, জাতীয় গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ জাসদ।

মতামত দেওয়ার জন্য সময় নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ১২ দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং পুলিশ সংস্কার কমিশন গত ৮ ফেব্রুয়ারি তাদের সুপারিশ সংবলিত পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। এই ছয়টি কমিশনের সুপারিশ বিবেচনা ও গ্রহণের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা এবং পদক্ষেপ সুপারিশের উদ্দেশ্যে ১২ ফেব্রুয়ারি সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই কমিশনের সভাপতি। এই কমিশনের সহসভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এই কমিশনের সদস্য আছেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সফররাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ইফতেখারুজ্জামান। এই কমিশনের মেয়াদ ছয় মাস।

মন্তব্য
অর্থ উপেদষ্টা

দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে
সালেহউদ্দিন আহমেদ

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় নজর দেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বাড়ানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আগামী বাজেটে ব্যক্তি খাতের করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকার করার প্রস্তাব দিয়েছেন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশনের শীর্ষ নির্বাহীরা। একই সঙ্গে বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বক্তব্যের কলেবর কমানো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং নির্ভুল ডাটা-পরিসংখ্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

গণকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তাঁরা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। সভা পরিচালনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্যের সময় অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে আগামী জুনে। আমাদের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা এমন একটি বাজেট দিয়ে যেতে চাই যেটি পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সরকার যে-ই আসুক, যেন ছুড়ে ফেলে দিতে না পারে, আমরা সেভাবেই একটি বাজেট দিতে চাই। একই সঙ্গে বৈষম্যহীন, সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য একটি বাজেট দিয়ে যেতে চাই। আগামী বাজেটে আমরা প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছি না, বরং আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছি। আমরা দেশীয় শিল্প সুরক্ষার একটি বাজেট দিতে চাই।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উৎপাদনমুুখিতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। যতটা সম্ভব সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, সামনেই তো নির্বাচন। আর জুনে নতুন বাজেট। ফলে আপনারা যে বাজেট দিতে যাচ্ছেন সেটা পরবর্তী সরকারের জন্য কতটা সহায়ক হবে? এ ছাড়া বর্তমানে দেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ভালো নয়।

তাই বাজেটে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করেন তিনি।

আরটিভির সিইও আশিকুর রহমান বলেন, বাজেটে করহার না বাড়িয়ে করজাল বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। একক ভ্যাট হার ১৫ হলেও এখনো কোথাও কোথাও ৫/৭/১০ শতাংশ ভ্যাট আছে। এতে করকাঠামোতে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। এখানে একটা শৃঙ্খলা আনা দরকার। একই সঙ্গে করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ করা যেতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রসারে জোর দিতে হবে। ক্যাশলেস লেনদেনের আওতা বাড়লে কালো টাকার ছড়াছড়িও কমে আসবে।

যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার বলেন, বিপর্যস্ত অর্থনীতি সামলাতে আপনি সফল হয়েছেন। এ জন্য ধন্যবাদ আপনি পেতেই পারেন। আগামী বাজেট সত্যিই আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ। কেননা অনেক দিন ধরেই মূল্যস্ফীতি। এটা আপনি কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। এবারের রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে যে ধরনের ভয় বা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা হয়নি। অনেকাংশে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আসছে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো, টিসিবি কার্যক্রমের আওতা ও বাজেট বাড়ানো, আবার রেশনিং সিস্টেম ফিরিয়ে আনা যায় কি না সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি।

সিনিয়র সাংবাদিক শওকত হোসেন মাসুম বলেন, একটি অর্থবছরে প্রকৃতপক্ষে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয় সে হিসাবটা কখনো আমরা পাইনি। এবার আপনারা সে হিসাব দেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। ১৫ বছরে গণমানুষের প্রকৃত আয় বাড়েনি। আপনারা একটা মেকানিজম করে এই হিসাবটা বের করুন যে এক অর্থবছরে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয়। সবখানে সংস্কার হচ্ছে, আপনারা বাজেট বত্তৃদ্ধতার আকারে সংস্কার আনুন। ঢাউস আকৃতির বাজেট বত্তৃদ্ধতার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা কমিয়ে আনুন। বাস্তবমুখী বাজেট দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে যে বাজেট দেওয়া হতো সেটা ছিল অহেতুক। বাজেট উপস্থাপনের নামে দেখানো হতো এক রকমের প্রামাণ্যচিত্র।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অ্যাসোসিয়েট এডিটর শামীম জাহেদী বলেন, কালো টাকা বৈধ করার ক্ষেত্রে কর সমান হবে কি না সেটায় আপনারা নজর দেবেন। দেশে এতগুলো টেলিভিশন আছে, দেড় হাজার কেবল অপারেটর আছে, সারা দেশে সাড়ে তিন কোটি বাড়ি আছে। এর ৫৪ শতাংশ বাড়িতে টেলিভিশন দেখা যায়। প্রত্যেকে ৩০০/৫০০ টাকা দিয়ে সংযোগ নেন। এখানকার টাকাটা আমরা এক টাকাও পাই না। সরকার পায় কি না আমি জানি না। এখানে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে আমরা কিছু টাকা পাব। সরকারও রাজস্ব পাবে।

সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহনেওয়াজ করিম বলেন, সবার জন্য সুখবর ও স্বস্তিদায়ক বাজেট দিন। করদাতাদের জন্য ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তন করা যায় কি না ভেবে দেখুন। এটা করতে পারলে তাঁরা সম্মানিত বোধ করবেন।

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিফলন বাজেটে থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা। করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ করা হোক। বেকারত্ব কমনোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। এ জন্য এসএমই উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন। নয়তো বন্ধ করে দিন। এটা মিনিমাম পাঁচ হাজার টাকা হওয়া উচিত। টেলিভিশনে কোনো ওয়েজ বোর্ড নেই। একটি ওয়েজ বোর্ড এখানেও থাকা প্রয়োজন। ভারতীয় চ্যানেলগুলো এখানে দেদার চলছে, আমাদের কোনো চ্যানেল ভারতে চলে না। এখানেও কাজ করা প্রয়োজন।

এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মনিউর রহমান বলেন, করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ করা হোক। বাজেট বাস্তবায়ন কতটুকু হলো সেটা দেখা দরকার।

এ ছাড়া বক্তারা আরো বলেন, বাজেটে মানুষের স্বস্তি আসে এ রকম উদ্যোগ নোবেন বলে আমরা আশা করি। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান স্থবির হয়ে গেছে। সেটা গতিশীল করতে হবে। সরকারের কাজ হবে বেসরকারি খাতকে সম্প্রসারিত করা। জটিল করকাঠামো সহজ করা দরকার। করব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটাইজেশন করা দরকার। ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলা জরুরি। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে, মানুষ যেন বিদেশে না যায় চিকিৎসার জন্য। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি আমরা দেখছি না। এর জন্য দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বৃদ্ধি করুন। সংবাদপত্রশিল্পের নিউজপ্রিন্টের আমদানি শুল্ক কমিয়ে আনতে হবে। করপোরেট কর কমানো যায় কি না বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। দুঃখজনক বিষয় হলো, কৃষি খাতে ভর্তুকি কমানো হয়েছে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা। এটা আগামী বাজেটে যেন করা না হয়। তাতে করে কৃষক ও কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে আমাদের কর অব্যাহতি থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। জিডিপির হিসাবে গোলমাল আছে, সেটা সংশোধন করা জরুরি। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতিটা কী, ব্যবসায়ীরা কেন ভয় পাচ্ছেন, সেটা দেখা দরকার। জুলাই আন্দোলনে যাঁরা আহত, নিহত তাঁদের জন্য পৃথক বরাদ্দ রাখা যায় কি না ভেবে দেখা দরকার। এ ছাড়া শিশুদের মানসিক বিকাশে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। ক্যান্সার, কিডনিসহ কঠিন রোগে আক্রান্তদের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা থাকা দরকার। সরকারি হাসপাতালগুলোতে অনেক মেশিন রয়েছে। সেগুলো নষ্ট। আবার মেরামতের জন্য বাজেট বরাদ্দও দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু পরবর্তী সময়ে তা মেরামত করা হচ্ছে কি না সেটার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন।

সবার বক্তব্যের পর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা তো আগামী বছর থাকব না। আমরা একটা বাজেট দিয়ে যেতে চাই। সেটা যেন কোনো রাজনৈতিক সরকার এসে ছুড়ে ফেলে দিতে না পারে। সমতাভিত্তিক দেশ গঠন করতে চাই। দীর্ঘমেয়াদি বাজেট দেওয়া আমাদের ম্যান্ডেট নয়। আমরা ইমিডিয়েট কিছু করব। একটা পদচিহ্ন রেখে যাব। আমাদের তো সীমাহীন সংকট। আমরা চেষ্টা করছি সবগুলো সমন্বয় করতে। আপনাদের পরামর্শগুলো আমরা নিলাম। এলডিসি উত্তরণের ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেননা আমাদের দিকে আরো পাঁচটি দেশ তাকিয়ে আছে। তবে প্রস্তুতিতে আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। এখন আর বসে থাকা যাবে না। সবাই বলছে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করলে গার্মেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু আমরা বলছি এতে গার্মেন্টস খাতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। আমরা আয়কর হয়রানি কমাতে চাই। এমন একটা ব্যবস্থা হবে যেখানে আয়কর কর্মকর্তা আয়করদাতাকে চিনবেনই না। তাঁর কাছে যাওয়ার দরকার হবে না। স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় এটা করতে পারবে।

 

 

মন্তব্য
নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না
মো. নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ চান না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক। প্রথমত, দলের ভেতরে যারা অন্যায়ের জন্য দায়ী, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গত ১৭ মার্চ দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, নতুন দলের চ্যালেঞ্জ নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ নিয়ে।

আন্দোলন থেকে সরকারে, তারপর আবার রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাটকে নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি সরকারকে বাইরে থেকে দেখা আর ভেতর থেকে দেখা সম্পূর্ণ আলাদা অভিজ্ঞতা। অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ সময় ছিল। এটি আমার জন্যও চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি সময়ের দাবিতেই পদত্যাগ করে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরেছি।

এখন আমি এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যত্ রাজনৈতিক পথচলা গঠন করতে চাই। নতুন রাজনৈতিক দল চালানো অবশ্যই কঠিন, তবে আমি প্রস্তুত।

নিজের দল এনসিপি সম্পর্কে নাহিদ বলেন, এনসিপি একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য হলো নতুন কণ্ঠস্বর, বিশেষ করে তরুণ এবং সব সামাজিক শ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য জায়গা তৈরি করা, যারা বছরের পর বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী রাজনীতি থেকে বাদ পড়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং আমাদের এজেন্ডাও সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাদের মধ্যে কোনো সংযোগ নেই। কিছু দাবিতে মিল থাকতে পারে, যেমন আমরা সাংবিধানিক সংস্কার ও গণপরিষদ গঠনের পক্ষে। কিন্তু আমাদের আদর্শিক অবস্থান ভিন্ন এবং উগ্রবাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো আগের শাসনামলের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। দেশে একটি স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। তাই নির্বাচন এনসিপির তাত্ক্ষণিক অগ্রধিকার নয়। বর্তমানে আমরা নির্বাচনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।

সূত্র : বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ