<p>বৈদ্যুতিক গাড়ির কল্যাণে বিশ্বের শীর্ষ ধনী হয়ে ওঠা ইলন মাস্ককে এবার দ্বিতীয় স্থানে নামালেন ধনকুবের বার্নার্ড আর্নল্ট। শীর্ষ ধনী হওয়ার দৌড়ে গত রবিবার তিনি ইলন মাস্ককে ছাড়িয়ে যান। ফরাসি ধনকুবের বার্নার্ড আর্নল্ট বৈশ্বিক বিলাসবহুল ব্র্যান্ড এলভিএমএইচ বা লুই ভুটনের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)।</p> <p>ফোর্বস ম্যাগাজিনের রিয়াল টাইম তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সোমবার বার্নার্ড আর্নল্টের সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ২০৭.৫ বিলিয়ন বা ২০ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইলন মাস্কের সম্পদের মূল্য কমে হয় ২০৪.৭ বিলিয়ন বা ২০ হাজার ৪৭০ কোটি ডলার। তৃতীয় অবস্থানে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের সহপ্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজস। তাঁর সম্পদের মূল্য ছিল ১৮১.৩ বিলিয়ন বা ১৮ হাজার ১৩০ কোটি ডলার।</p> <p>বৈদ্যুতিক গাড়ি কম্পানি টেসলার সিইও ইলন মাস্ক। একই সঙ্গে তিনি মহাকাশবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের সিইও ও চেয়ারম্যান। আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। মূলত করোনা মহামারির সময় বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সচেতনতায় বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ে। এতে বিপুল অঙ্কের মুনাফা ঘরে তোলেন ইলন মাস্ক। ফলে জেফ বেজসকে ছাড়িয়ে তিনি হয়ে ওঠেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী। কিন্তু গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে টেসলার ব্যাপক দরপতন ঘটে। এতে টেসলার বাজারমূল্য কমে সাত হাজার ৩০০ কোটি ডলার আর এল মাস্কের সম্পদ কমে যায় এক হাজার ৮০০ কোটি ডলার। টেসলার ২১ শতাংশ শেয়ারের মালিক মাস্ক।</p> <p>একই সপ্তাহে আর্নল্ট পরিবারের মোট সম্পদের মূল্য বাড়ে ২৩.৬ বিলিয়ন বা দুই হাজার ৩৬০ কোটি ডলার। ফলে ইলন মাস্ককে ছাড়িয়ে তিনি হয়ে যান বিশ্বের শীর্ষ ধনী। তবে বিশ্লেষকদের মতে, বার্নার্ড আর্নল্টের উত্থান সাময়িক সময়ের জন্য। শেয়ার মার্কেটে টেসলা ঘুরে দাঁড়ালেই আবার শীর্ষস্থানে ফিরবেন ইলন মাস্ক।</p> <p>তালিকায় শীর্ষ দশে থাকা ৯ জনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ১১তম স্থানে আছেন ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানি। অর্থাৎ এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি তিনি। মুকেশ আম্বানির মোট সম্পদের পরিমাণ ১১০ বিলিয়ন বা ১১ হাজার কোটি ডলার।</p> <p>এদিকে ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্স অবশ্য ভিন্ন কথা বলছে। এই তালিকায় এখনো বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। তাঁর সম্পদের মূল্য ১৯৯ বিলিয়ন বা ১৯ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।</p> <p>বার্নার্ড আর্নল্ট বৈশ্বিক বিলাসবহুল ব্র্যান্ড এলভিএমএইচ বা লুই ভুটনের প্রধান নির্বাহী। সম্পদের দিক থেকে তিনি শীর্ষ সারির হলেও অন্যান্য ধনকুবেরের মতো তিনি অতটা পরিচিত নন। অঢেল সম্পদের মালিক হলেও অনেকটা আড়ালেই থাকতে পছন্দ করেন আর্নল্ট। তাই জেফ বেজস, বিল গেটস, গৌতম আদানি কিংবা ইলন মাস্ককে একনামে সবাই যেভাবে চেনে, বার্নার্ড আর্নল্টকে সেভাবে হয়তো চেনে না অনেকেই। তা সত্ত্বেও ধনীদের তালিকায় বেশ কয়েকবার তিনি শীর্ষস্থানে উঠে এসেছেন। এর আগে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্সে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর স্বীকৃতি পান।</p> <p>১৯৮৭ সালে লুই ভুটন ও মোয়েট হেনেসি নিয়ে এলভিএমএইচ গ্রুপ গঠিত হওয়ার বছর দুয়েক পর ১৯৮৯ সালে আর্নল্ট এই কম্পানির শেয়ারের উল্লেখযোগ্য অংশ কিনে নেন। তখন থেকেই তিনি এলভিএমএইচের চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।</p> <p>তিন দশকের বেশি সময় ধরে বার্নার্ড আর্নল্ট এলভিএমএইচকে বিলাসবহুল শৌখিন পণ্যের শীর্ষ ব্র্যান্ডে পরিণত করেছেন। শ্যাম্পেইন, ওয়াইন, ফ্যাশনেবল পোশাক, চামড়াজাত পণ্য, ঘড়ি, গয়না, প্রসাধন ও পারফিউম পণ্যের বিরাট সম্ভার আছে এলভিএমএইচের। বর্তমানে সারা বিশ্বে এলভিএমএইচের সাড়ে পাঁচ হাজার শাখা আছে।</p> <p>ধনীদের তালিকায় প্রায়ই পরিবর্তন আসে। সম্পদের মূল্যের ভিত্তিতে এই তালিকা করা হয় বলে শেয়ারের দাম এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে। শেয়ারের দাম কমলে ধনীদের সম্পদের মূল্য কমে, বাড়লে সম্পদের মূল্যও বেড়ে যায়।</p> <p>টানা অনেক বছর বিশ্বের শীর্ষ ধনী ছিলেন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। কিন্তু বিপুল দানের কারণে তিনি একসময় পেছনে পড়ে যান। তাঁকে হারিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা লুফে নেনে অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজস। কিন্তু কয়েক বছর পর তাঁকে হটিয়ে নতুন রাজা হন ইলন মাস্ক। এবার সেই রাজত্বে চিড় ধরিয়েছেন বার্নার্ড আর্নল্ট। হিন্দুস্তান টাইমস, ফোর্বস ম্যাগাজিন।</p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>