<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দেশের এতিম শিশুর লালন-পালন ও উন্নয়নের বেসরকারি পর্যায়ে এতিমখানাগুলো দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক অনুদান পেয়ে আসছে। এখন থেকে বেসরকারি সংস্থা বা আশ্রমগুলোতে একই প্রক্রিয়ায় সুবিধাবঞ্চিত শুিশুদের জন্য আর্থিক অনুদান বা ক্যাপিটেশন গ্রান্ট দেবে সরকার।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১৫ সালের বেসরকারি এতিমখানায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ ও বণ্টন নীতিমালা সংশোধন করে সম্প্রতি ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ ও বণ্টন নীতিমালা ২০২৪ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এই নীতিমালায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আর্থিক অনুদান দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই অর্থ বরাদ্দ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চতকরণ, স্বচ্ছতা আনয়ন এবং সমন্বয় সাধনের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।   </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নতুন নীতিমালায় বলা হয়, এতিম বলতে পিতাহীন, মাতাহীন বা পিতা-মাতাহীন শিশু। কিংবা পিতা-মাতার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদের কারণে যেকোনো একজনের ঘরে অবস্থানকারী শিশু। শিশু আইন ২০১৩, ধারা ৮৯ অনুযায়ী সুবিধাবঞ্চিত শিশু। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শিশু আইনের ওই ধারায় বলা হয়, সুবিধাবঞ্চিত শিশু বলতে পিতা-মাতার মধ্যে একজন বা উভয় মৃত্যুবরণ করেছে। আইনানুগ বা বৈধ অভিভাবকহীন শিশু। নির্দিষ্ট আবাসস্থলহীন এবং জীবনধারণের জন্য দৃশ্যমান অবলম্বনহীন কোনো শিশু। ভিক্ষাবৃত্তি বা শিশুর মঙ্গলের পরিপন্থী কাজে লিপ্ত শিশু। কারাভোগরত মাতা-পিতার ওপর নির্ভরশীল বা কারাভোগরত মাতার সঙ্গে কারাগারে অবস্থানরত শিশু। যৌন নির্যাতন বা হয়রানির শিকার শিশু। যৌনবৃত্তি বা সমাজবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যে নিয়োজিত ব্যক্তি অপরাধীর বাসস্থান বা কর্মস্থলে অবস্থানকারী শিশু। যেকোনো ধরনের প্রতিবন্ধী শিশু। মাদক বা অন্য কোনো কারণে অস্বাভাবিক আচরণগত সমস্যাযুক্ত শিশু। অসৎ সঙ্গে পতিত বা নৈতিক অবক্ষয়ের সম্মুখীন হতে পারে বা অপরাধ জগতে প্রবেশের ঝুঁকির সম্মুখীন শিশু। বস্তিতে বসবাসকারী শিশু। রাস্তাঘাটে বসবাসকারী গৃহহীন শিশু। হিজড়া শিশু, বেদে ও হরিজন শিশু। এইচআইভি-এইডস আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত শিশু। শিশু আদালত বা বোর্ড বিবেচিত শিশু, যাদের বিশেষ সুরক্ষা, যত্ন-পরিচর্যা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা প্রয়োজন তাদের সুবিধাবঞ্চিত শিশু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ক্যাপিটেশন গ্রান্টের সংজ্ঞায় এতিম শিশুর মতো সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই অনুদানের মাধ্যমে বেসরকারিভাবে পরিচালিত নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সামর্থ্য বাড়ানো হবে। এর মাধ্যমে এতিমদের মতো সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ভরণপোষণ ও শিক্ষা, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমাজে পুনর্বাসন করে সমাজের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে সহযোগিতা করবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদনকারী এ ধরনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এতিম ও সুবিধাবঞ্চিত শিশু ভর্তির জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এসব যাচাই-বাছাই করবে নীতিমালায় রূপরেখা অনুযায়ী গঠন করা ভর্তি কমিটি। এই কমিটি শিশুদের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, খাদ্য, বস্ত্র ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নীতিমালায় বলা হয়, আর্থিক অনুদান পেতে স্থানীয় সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এই অনুদান পেতে প্রাথমিক বা মাধ্যমিক বা সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে। দুই কিস্তিতে পুরো বছরের অর্থ দেওয়া হবে। এ জন্য অর্থবছর হিসাবে জুলাই ও জানুয়ারি মাসের আগে নিবন্ধিত হতে হবে। ক্যাপিটেশন গ্রান্ট পেতে বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকে যথানিয়মে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও প্রদর্শন করতে হবে। একই সঙ্গে শিশুদের শরীরচর্চা ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ১০ জন এতিম বা সুবিধাবঞ্চিত শিশু আছে এমন প্রতিষ্ঠান আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারবে। নিয়মিত এই অনুদান পেতে আগের বছরের অডিট প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নীতিমালায় আরো বলা হয়, ছেলেশিশু প্রতিষ্ঠানের মোট এতিম ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুর ৫০ শতাংশের বেশি আর্থিক অনুদান পাবে। মেয়েশিশু প্রতিষ্ঠানের মোট এতিম ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুর ৭৫ শতাংশের বেশি আর্থিক অনুদান বরাদ্দ পাবে। অনুদান বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনুন্নত, পশ্চাৎপদ, প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত এলাকা অগ্রাধিকার পাবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সমাজসেবা অধিদপ্তর ষাটের দশক থেকে মাথাপিছু মাসিক ৩৬০ টাকা হারে আর্থিক অনুদান বা সহায়তা ছিল। ওই সময় থেকে দিয়ে আসা এই অনুদান ক্যাপিটেশন গ্রান্ট নামে পরিচিত। এখনো এই আর্থিক অনুদান দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। গত অর্থবছরে বেসরকারি এতিমখানায় ২৮০ কোটি টাকা দুই কিস্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দেশের ৬৪ জেলায় চার হাজার ২২টি বেসরকারি এতিমখানার এক লাখ ১৬ হাজার ৬৬৬ জন এতিম শিশুর জন্য এই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়।</span></span></span></span></span></p>