<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে গত ছয় অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অর্থছাড় হয়েছে। গত এক যুগের মধ্যে সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। চলতি অর্থবছরের এডিপি থেকে সরকার বড় ধরনের কাটছাঁট করতে চায়, তারই প্রভাব এডিপি বাস্তবায়নে পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল জুলাই-আগস্টের এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে আইএমইডি। তাতে দেখা যায়, দুই মাসে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে ২.৫৭ শতাংশ। এর চেয়ে কম এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য সংস্থাটির ওয়েবসাইটে নেই। সেই আলোকে গত এক যুগে এত কম এডিপি বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে দুই মাসে সাত হাজার ১৪৩ কোটি টাকা অর্থছাড় হয়েছে, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পর সর্বনিম্ন। গত অর্থবছরে ১০ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা ছাড় হয়েছিল এই সময়। শুধু গত আগস্ট মাসে অর্থছাড় হয়েছে চার হাজার ২২০ কোটি টাকা। যেখানে আগের অর্থবছরের আগস্ট মাসে ছাড় হয়েছিল সাত হাজার ৫২ কোটি টাকা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) থেকে প্রায় এক লাখ কোটি টাকা কাটছাঁট হতে পারে। তাই বেশি প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোতে অর্থছাড় করা হচ্ছে। প্রকল্পের অগ্রাধিকার যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের এডিপির আকার ধরা হয় দুই লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোন প্রকল্পটি বেশি প্রয়োজনীয়, কোনটির প্রয়োজনীয়তা কম তা যাচাই-বাছাই চলছে। প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span>  </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশের অর্থনীতি সংকটের মধ্যে আছে। রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হচ্ছে। ফলে সরকারকে ব্যয় কমাতে হবে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে অপচয়মূলক ব্যয় কমানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে খরচ কমানোর বড় জায়গা হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন বর্তমানে শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাদ দিয়ে এডিপি বড় ধরনের কাটছাঁট করলে তেমন কোনো অর্থের অপচয় হবে না। চলতি অর্থবছরে এডিপির আওতায় এক হাজার ৩২৬টি প্রকল্প আছে। এর মধ্যে অনেকগুলো ২০২৩ সালে অন্তর্ভুক্ত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যয় দেখা যায়নি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">যেমন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১০২টি প্রকল্পে চলতি অর্থবছরে ১৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি প্রকল্প নতুন হওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনো খরচ হয়নি। তা ছাড়া গত নির্বাচনের আগে দুই শতাধিক প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অনেক অপ্রয়োজনীয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আছে। এসব প্রকল্পের জন্য এডিপিতে আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদও সম্প্রতি বলেছেন, মেগাপ্রকল্পের বদলে জীবন-জীবিকা ও ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখার প্রকল্পে গুরুত্ব দেওয়া হবে। বড় বা মেগাপ্রকল্পের অর্থছাড় বড় হয়। তাই এ বিষয়ে পরে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বাংলাদেশের অর্থ অপচয় বন্ধ করতে হবে। স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা ছাড়া কিছু চলবে না।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রদান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজনৈতিক বা প্রশ্নবিদ্ধ প্রকল্পগুলো পুনরায় বিবেচনা করা উচিত। কারণ সরকার আর্থিক সংকটে আছে, রাজস্ব আদায়েও ঘাটতি রয়েছে। সরকারকে ব্যয় কমাতে হবে। ব্যয় কমানোর বড় জায়গা এডিপি। প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় বরাদ্দ দিতে হবে। কারণ এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন অনেক এগিয়েছে। যেসব মেগাপ্রকল্পের অগ্রগতি ভালো, সেগুলো শেষ করা ভালো হবে। তবে যেসব মেগাপ্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি বা প্রাথমিক ধাপে আছে সেগুলো বাদ দেওয়া ভালো হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে সবচেয়ে বেশি এক হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা অর্থ খরচ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এর পর সর্বোচ্চ খরচ করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ এক হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। সড়ক-মহাসড়ক বিভাগ খরচ করেছে ৫৭৮ কোটি টাকা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খরচ করছে ৪২৬ কোটি টাকা। ৮৮৫ কোটি টাকা খরচ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এক টাকাও খরচ করতে পারেনি পাঁচ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন ও বিচার বিভাগ ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়।</span></span></span></span></span></p> <p> </p>