জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) একক রেট নির্ধারণ করতে পারলে ভ্যাট ফাঁকি অনেক কমে যাবে। পাশাপাশি যেসব জায়গায় করছাড় দেওয়া রয়েছে, তা ধীরে ধীরে তুলে দেওয়া হবে। বরিশাল ক্লাবে গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
আগামী বাজেট উচ্চাভিলাষী হবে না এমন মন্তব্য করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বাজেটে করহার যৌক্তিক করা হবে।
ব্যবসায়ীদের চাপ দেওয়া হবে না; প্রয়োজনে ভ্যাটের হার কমানো হবে। ভ্যাট আদায়, চালান ইস্যু, হিসাবরক্ষণ, রিটার্ন দাখিলসহ ভ্যাটের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করতে একটি ন্যাশনাল সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
করদাতাদের ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য আহবান জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এখন ঘরে বসেই ভ্যাট নিবন্ধন, ভ্যাট পরিশোধ ও সহজেই ভ্যাট রিটার্ন দেওয়া যায়। অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন জমা দিলে অফিসে হার্ডকপি জমা দেওয়া লাগবে না।
চেয়ারম্যান আরো বলেন, দেশ একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সে কারণেই অর্থনৈতিক সংকট রয়েছে। এই সংকট থেকে উত্তরণে হাতে কোনো বিকল্প নেই। তাই দ্রুত করনেট বাড়াতে হবে। যাঁরা ভ্যাট রিটার্ন দেন, তাঁদের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হবে, তাঁদের নেটের আওতায় আনা হবে। ভ্যাটের আওতা বাড়াতে প্রয়োজনে দ্বারে দ্বারে যাবে এনবিআর। ভ্যাটনেটের পরিধি বাড়াতে পারলে রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করা যাবে।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় বরিশাল বিভাগের ছয়টি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। তাঁরা বিভিন্ন সমস্যার কথা চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন।
বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য আগামী বাজেটে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে, তার কিছু ধারণা দেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের যেন কষ্ট না হয়, তাই বিভিন্ন ক্ষেত্রে আয়কর ও ভ্যাটহার যৌক্তিক করা হবে। আমদানি পর্যায়ে শুল্কহারও যৌক্তিক করা হবে। শুল্ক-কর হারে বড় পরিবর্তন আসবে। যেখানে শুল্ক-কর আদায়ের সুযোগ আছে, সেখানে করনেট বাড়ানো হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আমরা বাজেটের আকার অনেক বড় করে ফেলেছি। এনবিআর কতটা রাজস্ব আদায় করতে পারবে এর ওপর ভিত্তি করে বাজেট করা হচ্ছে না। জিডিপির ৭.১২ শতাংশ আসে ভ্যাট থেকে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশে তা জিডিপির ১৫-১৬ শতাংশ। তাই ঋণ নিয়ে আমাদের বছরের পর বছর বাজেট করতে হচ্ছে। তা ছাড়া বাজেটের খরচ নিয়েও প্রশ্ন আছে।’