<p>শায়খ আহমাদুল্লাহ। বাংলাদেশে যেসব ইসলামী ব্যক্তিত্ব প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, সাম্য, ন্যায়বিচারের চিন্তাকে সামনে রেখে সমাজ বিনির্মাণ করতে চান তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য তিনি। তাঁর উদার ও মানবিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তরুণ প্রজন্মকে আশার আলো দেখাচ্ছে। তথ্যনির্ভর আলোচনা ও গবেষণাধর্মী কাজের মাধ্যমে ইসলামের দাওয়াত সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার নিরন্তর চেষ্টা করছেন তিনি। শায়খ আহমাদুল্লাহর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো তিনি ইসলামের আলোকে সমসাময়িক নানা সমস্যার বিশ্লেষণ করে থাকেন। তিনি শুধু বিশ্লেষণই করেন না, সমাধানের একটি পথও বাতলে দেন। তাঁর সমসাময়িক আলোচনাগুলো ভার্চুয়াল জগতে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তাঁর লাইভ প্রগ্রামগুলোয় অংশ নেয় অসংখ্য শ্রোতা ও দর্শক। উপকৃত হয় সাধারণ মানুষ। বহুধাবিভক্ত মুসলিমদের মধ্যে ঐক্যপ্রয়াসী একজন মানুষ শায়খ আহমাদুল্লাহ।</p> <p>তিন কারণে শায়খ আহমাদুল্লাহ অন্য অনেকের থেকে ব্যতিক্রম। এক. ইতিবাচক ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি লালন, দুই. শুদ্ধ ভাষায় বিনয়ের সঙ্গে সব বিষয় উপস্থাপন, তিন. সমসাময়িক বিষয়ে দলিলভিত্তিক আলোচনা।</p> <p>১৫ ডিসেম্বর ১৯৮১ লক্ষ্মীপুরে জন্ম শায়খ আহমাদুল্লাহর। কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে দাওরায়ে হাদিস শেষ করে খুলনা দারুল উলুম থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন। লেখাপড়া শেষ করে মিরপুরের দারুর রাশাদে শিক্ষকতায় যোগ দেন। ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন। এক বছর মিরপুরের আরজাবাদ মাদরাসায়ও শিক্ষকতা করেছেন। পাশাপাশি ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইমাম ও খতিবের দায়িত্ব পালন করেন মিরপুরের বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদে। ২০০৯ সালে সুযোগ আসে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করার। আরবি ভাষায় বিশেষ দক্ষতার কারণে ডাক পান মধ্যপ্রাচ্যের। সৌদি আরবের পশ্চিম দাম্মাম ইসলামিক দাওয়াহ সেন্টারে যোগ দেন। একজন দায়ি ও অনুবাদক হিসেবে সেখানে দীর্ঘ ৯ বছর কাজ করেন। আরবদের পাশাপাশি বাংলাদেশিদের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করেন তিনি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ইতোমধ্যেই তিনি জাপান, ভারত, আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের একাধিক আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন।</p> <p>নিজের দ্বিনি কর্মগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে শায়খ আহমাদুল্লাহ প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’। শিক্ষা, সেবা ও দাওয়াহ—তিন বিভাগে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। সারা দেশের ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে অসচ্ছল, দরিদ্র নারী-পুরুষকে স্বনির্ভর করতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রতি ঈদে অসহায় শিশুদের নতুন জামাকাপড় তুলে দেয়। এ ছাড়া বন্যা, নদীভাঙন বা প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ-দুর্ঘটনায় ত্রাণ বিতরণ করে ফাউন্ডেশনটি। করোনা সংকটে পাঁচ হাজারেরও বেশি পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা এবং করোনায় নিঃস্ব হয়ে যাওয়া ক্ষুদ্র আয়ের শতাধিক মানুষকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগও নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অনাথ ও দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানসহ একাধিক স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।</p> <p>দ্বিনি আলোচনার পাশাপাশি লেখালেখিও করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। এই পর্যন্ত দাওয়াহ ও গবেষণা বিষয়ে শতাধিক প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখেছেন। বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে। আরবি ভাষাতেও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ। শায়খ আহমাদুল্লাহ বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ভূমিপল্লী জামে মসজিদের খতিব। পাশাপাশি ভূমিপল্লীর একটি মাদরাসার পরিচালনার সঙ্গেও যুক্ত।</p> <p>লেখক : প্রধান বার্তা সম্পাদক</p> <p>চেঞ্জ টিভি ডটকম</p> <p> </p>