যে চার কাজে আল্লাহর হক আদায় হয়

মুফতি আবদুল্লাহ নুর
মুফতি আবদুল্লাহ নুর
শেয়ার
যে চার কাজে আল্লাহর হক আদায় হয়

আবু সালাবা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কিছু বিধান ফরজ করেছেন তা তোমরা নষ্ট করো না, কিছু সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন তা লঙ্ঘন কোরো না, কিছু বিষয় হারাম করেছেন তার নিকটবর্তী হয়ো না, কিছু বিষয়ে তোমাদের অবকাশ দিয়েছেন—তিনি তা ভুলে যাননি তা নিয়ে তোমরা বিতর্ক কোরো না। (সুনানে বায়হাকি, হাদিস : ১৯৭২৫)

আলোচ্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বান্দার ওপর আল্লাহর চারটি হক বা অধিকারের বর্ণনা দিয়েছেন। তা হলো ক. ফরজ বিধান মান্য করা, খ. দ্বিনের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘন না করা, গ. হারাম থেকে দূরে থাকা, ঘ. যেসব বিষয়ে ইসলামী শরিয়ত কোনো বিধান নির্ধারণ করে দেয়নি সেসব ব্যাপারে বাড়াবাড়ি না করা।

ক. ফরজ বিধানের ব্যাখ্যা : ফরজ এমন বিধানকে বলা হয়, যা অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত।

যা করলে তা পুণ্যের অধিকারী হয় এবং ত্যাগ করলে তার পাপ হয়। যেমন ঈমান, নামাজ, জাকাত, হজ ইত্যাদি। হাদিসে উল্লিখিত ‘ফরজ’ দ্বারা সব ধরনের ‘বিশ্বাসগত’ ও ‘কার্যত’ ফরজ বিধান এবং ‘ব্যক্তিগত’ (আইন) ও সামগ্রিক (কিফায়া) সব ধরনের ফরজ বিধান অন্তর্ভুক্ত। আর নষ্ট করার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, তা ছেড়ে দেওয়া, তার কোনো শর্ত ও রোকন ছেড়ে দেওয়া বা তা আদায়ে ইখলাস বা নিষ্ঠার অভাব থাকা, আমলের ক্ষেত্রে ত্রুটি থাকা।
(মিরকাতুল মাফাতিহ : ১/২৭৮)

খ. হারামের ব্যাখ্যা : ইমাম আহমদ (রহ.) বলেন, ‘হারাম মানে যা শরিয়তের অকাট্য প্রমাণ দ্বারা হারাম প্রমাণিত। যেসব বিষয় শরিয়তের দলিল দ্বারা হারাম প্রমাণিত নয় তা নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত নয়।’ (আত-তাবসিরাতু ফি উসুলিল ফিকহ, পৃষ্ঠা ৮০-৮১)। কোনো কাজ হারাম প্রমাণিত হলে তাতে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে—এমন কোনো কাজ করা নিষিদ্ধ।

আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না।’ (সুরা ইসরা, আয়াত : ৩২)

গ. আল্লাহ সীমানা মানে : আরবি ‘হদ’-এর ব্যাবহারিক অর্থ ‘নিষিদ্ধ অঞ্চল’। আল্লাহ তাআলা মানবজাতির জন্য যেসব বিষয় নিষিদ্ধ করেছেন, হাদিসে সেসব বিষয় থেকে মানুষকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন, ‘এটা আল্লাহর সীমানা—তার নিকটবর্তীও হয়ো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৭)

ঘ. যেসব বিষয়ে বিতর্ক কাম্য নয় : আলোচ্য হাদিসে সেসব বিষয়ে বিতর্ক পরিহার করতে বলা হয়েছে যে ব্যাপারে ইসলামী শরিয়ত কোনো বিধান নির্ধারণ করে দেয়নি।

তিনি যদি এসব কাজের ব্যাপারে কোনো বিধান দিতেন তাহলে তাতে মানুষের জীবনে সংকীর্ণতা তৈরি হতো। মহানবী (সা.) দ্বিনের ব্যাপারে সংকীর্ণতা তৈরি হয়—এমন প্রশ্ন করতে নিরুৎসাহিত করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) তিনবার বলেন, ‘মুতাআন্নিতুনদের জন্য ধ্বংস’। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৬৭০)

মুতাআন্নিতুন বলা হয় যারা কথা ও কাজে অর্থহীন অনুসন্ধান ও বাড়াবাড়ি করে এবং অনর্থক বিতর্কে লিপ্ত হয়। (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ২/৮৪০-৪১)

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

যেভাবে রমজানের বরকত লাভ করব

আলেমা হাবিবা আক্তার
আলেমা হাবিবা আক্তার
শেয়ার
যেভাবে রমজানের বরকত লাভ করব
ছবি : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি

রমজান মাস বান্দার প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। এই মাসকে তিনি অপার মহিমায় মহিমান্বিত করেছেন। এই মাসকে তিনি বান্দার জন্য বরকতময় করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমাদের কাছে রমজান উপস্থিত হয়েছে, যা একটি বরকতময় মাস।

তোমাদের ওপরে আল্লাহ তাআলা এই মাসের রোজা ফরজ করেছেন। মাসের আগমনে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়, আর আল্লাহর অবাধ্য শয়তানদের গলায় লোহার বেড়ি পরানো হয়। মাসে একটি রাত আছে, যা এক হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। যে ব্যক্তি সে রাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রয়ে গেল সে প্রকৃত বঞ্চিত রয়ে গেল।

(সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২১০৬)

 

বরকতের পরিচয়

বরকতের শাব্দিক অর্থ প্রবৃদ্ধি প্রাচুর্য। সাধারণত কোনো ইতিবাচক বিষয়ে প্রবৃদ্ধি অগ্রগতিকে বরকত বলা হয়। ইমাম রাগেব ইস্পাহানি (রহ.) বরকতের সংজ্ঞা দিয়ে বলেছেন, কোনো বিষয়ে আল্লাহ প্রদত্ত কল্যাণকে বরকত বলা হয়। অর্থাত্ আল্লাহ যে জিনিসে যে কল্যাণ রেখেছেন সে কল্যাণ অর্জন করাকেই বরকত লাভ করা বলে।

(লিসানুল আরব : ১০/৩৯৫; আল মুফরাদাত ফি গারিবিল কোরআন, পৃষ্ঠা-১১৯)

 

রমজানের বরকত কী

ইমাম রাগেব ইস্পাহানি (রহ.)-এর সংজ্ঞা অনুসারে রমজান মাসে আল্লাহ যেসব কল্যাণ রেখেছেন সেগুলোই রমজান মাসের বকরত। যে ব্যক্তি এসব কল্যাণ অর্জন করতে পারবে সেই রমজানের বরকত অর্জন করতে পারবে। কোরআন হাদিসের আলোকে এমন কয়েকটি কল্যাণ হলো

. আল্লাহর ক্ষমা : আল্লাহ রোজাদারের জন্য ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, অবশ্য আত্মসমর্পণকারী পুরুষ আত্মসমর্পণকারী নারী, মুমিন পুরুষ মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ধৈর্যশীল নারী, বিনীত পুরুষ বিনীত নারী, দানশীল পুরুষ দানশীল নারী, রোজা পালনকারী পুরুষ রোজা পালনকারী নারী, লজ্জাস্থান সংরক্ষণকারী পুরুষ লজ্জাস্থান সংরক্ষণকারী নারী, আল্লাহকে বেশি স্মরণকারী পুরুষ বেশি স্মরণকারী নারীএদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন ক্ষমা মহাপ্রতিদান। (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩৫)

. জাহান্নাম থেকে মুক্তি : রমজান হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। রাসুলুল্লাহ (সা.) সম্পর্কে বলেন, আল্লাহ প্রতিদিন ইফতারের সময় কতিপয় বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন এবং তা প্রতি রাতেই হয়ে থাকে।

(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪৩)

. আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি : রমজান মাসে আল্লাহ আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করেন। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি এই মাসে নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অনুসন্ধান করবে তাকে অন্য মাসের ফরজের সমান সওয়াব দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি এই

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

প্রশ্ন-উত্তর

    সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা
শেয়ার
প্রশ্ন-উত্তর

মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কি রোজা রাখা যায়?

প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কাজা রোজা ও কাফফারার ৬০টি রোজা রাখা যাবে কি না? দয়া করে জানালে উপকৃত হব।

মো. ইয়াকুব, মহেশখালী

উত্তর : মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার কাজাকৃত রোজার কাফফারা হিসেবে অন্য কারো রোজা রাখার বিধান নেই। তবে মৃত্যুকালে সে ব্যক্তি ফিদিয়া দেওয়ার অসিয়ত করে গেলে তার রেখে যাওয়া সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ থেকে অসিয়ত পূর্ণ করা জরুরি। অসিয়ত না করলে ফিদিয়া দেওয়া জরুরি নয়।

তবে সাবালক ওয়ারিশরা নিজ নিজ অংশ থেকে তা আদায় করলে আদায় হওয়ার আশা করা যায়। (আদ্দুররুল মুখতার : ২/৪২৪, আফকে মাসায়েল আওর উনকা

হল : ৩/২৯৬, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৫/৪৭০)

 

 

মন্তব্য

কোরআন থেকে শিক্ষা

    পর্ব, ৭২৪
শেয়ার
কোরআন থেকে শিক্ষা

আয়াতের অর্থ : ‘যারা সাধ্বী, সরলমনা ও ঈমানদার নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য আছে মহাশাস্তি। যেদিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে তাদের জিহ্বা, তাদের হাত-পা তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে, সেদিন আল্লাহ তাদের প্রাপ্য প্রতিফল পুরোপুরি দেবেন এবং তারা জানবে, আল্লাহই সত্য, স্পষ্ট প্রকাশক।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ২৩-২৫)

আয়াতগুলোতে অপবাদদাতার পরকালীন শাস্তি বর্ণনা করা হয়েছে।

শিক্ষা ও বিধান

১. আয়াতে সাধ্বী দ্বারা সতীত্ব রক্ষাকারী স্বাধীন নারী উদ্দেশ্য।

চাই সে বিবাহিত হোক অথবা অবিবাহিত।

২. আর গাফিল রমণী দ্বারা এমন সরলমনা নারী উদ্দেশ্য যে পাপাসক্ত নয় এবং যার ব্যাপারে পাপের কোনো অভিযোগ নেই।

৩. বান্দার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ হলো তাঁর দয়া ও অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত করা। আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ ছাড়া বান্দার দুনিয়া ও আখিরাতে কোনো মুক্তি নেই।

৪. সতী নারীর প্রতি অপবাদদাতার পার্থিব শাস্তি হলো শরয়ি হদ, সাক্ষ্য রহিতকরণ এবং সামাজিক গ্রহণ যোগ্যতা নষ্ট হওয়া।

৫. অপবাদদাতা যদিও পৃথিবীতে তার মিথ্যা দাবি প্রমাণ করে ফেলে, পরকালে তা প্রকাশ পাবে। তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। ফলে তাদের অস্বীকার করার সুযোগ থাকবে না।

(তাফসিরে শারভি, পৃষ্ঠা-১০২৩৬)

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

যাদের রোজা মানে শুধুই না খেয়ে থাকা

সাইফুল ইসলাম
সাইফুল ইসলাম
শেয়ার
যাদের রোজা মানে শুধুই না খেয়ে থাকা

আত্মসংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ, আত্মশুদ্ধি ও আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে রোজা একটি অপরিহার্য ইবাদত। ব্যক্তির আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধন এবং তাকওয়ার প্রশিক্ষণ গ্রহণের নিমিত্তে রোজার বিধান প্রবর্তন করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, হে মানুষ! তোমরা যারা ঈমান এনেছ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে, যেমন করে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা (রোজার মাধ্যমে) মুত্তাকি হতে পারো (আল্লাহকে ভয় করতে পারো)।

(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৩)

আলোচ্য আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাআলা গোটা ঈমানদারদের সতর্ক করেছেন, যেন তারা তাদের জাগতিক কাজকর্মে সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহকে ভয় করে। অর্থাত্ তাদের সব কাজকর্ম যেন শরিয়াভিত্তিক হয়, কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক হয় তথা আল্লাহর নির্দেশ এবং আল্লাহর রাসুলের আদর্শ অনুযায়ী হয়।

মহান আল্লাহর কাছে রোজাদারের মর্যাদা সীমাহীন। মহান আল্লাহ হাদিসে কুদসির মাধ্যমে বলেন, রোজা আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দেব।

প্রিয় নবী (সা.) বলেন, যখন রমজান মাসের আগমন ঘটে তখন বেহেশতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলিত করা হয়। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)

কোরআন-হাদিসে রোজাদারদের সম্মানে এত কিছু বলার পরও কিছু কিছু মানুষের রোজা থাকা একেবারে মূল্যহীন হবে; অর্থাত্ তাদের জন্য রোজা থাকা হবে শুধু না খেয়ে থাকা। নিম্নে তাদের বিষয়ে আলোচনা করা হলো

মিথ্যাবাদী : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা এবং তা অনুসারে কার্যকলাপ করা পরিত্যাগ করেনি, তার পানাহার পরিত্যাগ করাতে (রোজা রাখাতে) আল্লাহর কাছে কোনো মূল্য নেই। (মিশকাতুল মাসাবিহ)

আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠায় বাধাদানকারী : পবিত্র আল-কোরআনে অতি স্পষ্টভাবে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠায় বাধাদানকারীদের বিষয়ে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে।

মহান আল্লাহ বলেন, যেসব লোক আল্লাহ যা নাজিল করেছেন, তদানুযায়ী বিচার-ফয়সালা করে না, তারা কাফির। (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৪৪)

সুতরাং আলোচ্য আয়াতের ভাষ্য অনুসারে কাফিরের রোজা রাখা আর না খেয়ে থাকা সমান।

নেশাকারী : নেশাকারীর বিষয়ে মহানবী (সা.) বলেছেন, নেশাদ্রব্য পানকারী যদি তাওবা না করে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সুনান আন-নাসাঈ)

পিতা-মাতার সঙ্গে খারাপ

ব্যবহারকারী : মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি পিতা-মাতা উভয়কে অথবা তাঁদের একজনকে বার্ধক্যে পাওয়ার পরও (তাঁদের সেবা করে) জান্নাত লাভ করতে পারল না, ধ্বংস হোক সে ব্যক্তি।

(সুনান আত-তিরমিজি ও সহিহ ইবনে হিব্বান)

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রোজা রাখা সত্ত্বেও মিথ্যা কথা বলা এবং মিথ্যার ভিত্তিতে কাজ করা ছাড়তে পারেনি, তার পানাহার ত্যাগে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।

(বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)

আবু হুরাইরা (রা.) আরেক বর্ণনায় বলেন, নবী (সা.) ইরশাদ করেন, অনেক রোজাদার এমন আছে, রোজা থেকে তার প্রাপ্য কেবলই ক্ষুধার্ত থাকা ও পিপাসার্ত থাকা। এবং অনেক রাতের নামাজ আদায়কারী এমন আছে, যাদের এ নামাজের অংশ শুধুই দাঁড়িয়ে থাকা।

(সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৩৪৮১)

রোজা রাখার বিধান প্রবর্তনের অন্যতম কারণ হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাকওয়া অর্জন তথা আল্লাহভীতি। সুতরাং রোজা রেখে মহান আল্লাহর অপছন্দীয় ও নিষেধাজ্ঞামূলক কাজ করা রোজার উদ্দেশ্য পরিপন্থী। যেমনআর্থ-সামাজিক অসাধুতা, প্রতারণা, মিথ্যাচার, অশ্লীলতা, বেপর্দায় চলা, অন্যায়-অত্যাচার, অনাচার-পাপাচার, খুন-রাহাজানি, সন্ত্রাসবাদ, ব্যভিচার, মদ-জুয়া, সুদ-ঘুষ, অযথা কথা বলা, গিবত করা, পণ্যে ভেজাল, ওজনে কম দেওয়া, ধোঁকাবাজি করা, মজুদদারি ও কালোবাজারি, ব্যবসায় অধিক মুনাফা অর্জন, অন্যায়ভাবে ওপরে উল্লেখিত সম্পদ অর্জনে চেষ্টা করা, দুর্নীতি করা, অপচয়-অপব্যয়, প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব পালন না করা, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা, অধীন কর্মচারীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, অধীন কর্মচারীর ওপর অযৌক্তিক কাজ চাপিয়ে দেওয়া, অবিচার করা, কারো মনে কষ্ট দেওয়া, নাচ-গান করা, হারাম উপার্জন করাসর্বোপরি পৃথিবীতে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করা ইত্যাদি।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ