<p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যারা অন্য ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন, তারা নতুন জীবন ও সমাজে এসে নানা ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হন। বিশেষ করে নতুন জীবনধারার সঙ্গে তাল মেলাতে কষ্ট হয়, কখনো নিজ পরিবার ও সমাজের পক্ষ থেকে বিরূপ আচরণের শিকার হয়। এমন পরিস্থিতি এড়াতে নওমুসলিমদের সতর্ক ও সচেতনতার সঙ্গে পথচলা আবশ্যক। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><strong><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নওমুসলিমের প্রথম কাজ</span></span></span></span></strong></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একজন নওমুসলিমের প্রথম ও প্রধান কাজ হলো পরিপূর্ণ মুমিন ও মুসলমান হওয়া। কেননা এটাই মহান আল্লাহর নির্দেশ। তিনি বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ কোরো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২০৮)</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কোরো এবং তোমরা (পরিপূর্ণ) মুসলমান না হয়ে কোনো অবস্থায় মৃত্যুবরণ কোরো না।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১০২)</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নওমুসলিমের করণীয় ও বর্জনীয়</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রাজ্ঞ আলেমরা নওমুসলিমদের জন্য নিম্নোক্ত নির্দেশনাগুলো প্রদান করে থাকেন : </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১. অন্তর থেকে এটা বিশ্বাস করা যে ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত পূর্ণাঙ্গ দ্বিন বা জীবন বিধান। জীবনের কোনো কিছুই ইসলামের গণ্ডির বাইরে নয়। ইসলামী শরিয়তই চূড়ান্ত শরিয়ত।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২. ঈমান পূর্বের সব পাপ মোচন করে। সুতরাং পূর্বের জীবনের কোনো ভ্রান্ত বিশ্বাস ও পাপাচার যেন জীবনে ছায়া ফেলতে না পারে।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৩. মনে রাখতে হবে, ইসলামের উৎস কোরআন ও সুন্নাহ, কোনো মুসলমানের কথা ও কাজ নয়। কোরআন ও সুন্নাহই সত্য ও মিথ্যার নির্ধারণের মাপকাঠি।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৪. গুরুত্বের সঙ্গে কোরআন, সুন্নাহ ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনী পাঠ করা।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৫. পবিত্রতার বিষয়গুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৬. নিজের জন্য সময়মতো এবং জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়কে আবশ্যক করে নেওয়া।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৭. যথাসম্ভব ইসলামী পরিবেশে মুসলমানদের সঙ্গে সময় কাটানো। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৮. নিজ মহল্লার মসজিদগুলো, মসজিদের ইমাম এবং মুসলিম প্রতিবেশীদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৯. দিন-রাতের একটি সময় ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের জন্য নির্ধারণ করা। চাই তা সম্মিলিতভাবে হোক বা একাকী। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১০. পূর্ববর্তী জীবনে যারা পাপ কাজের সঙ্গী ছিল তাদের থেকে দূরে থাকা।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১১. আহলুল ইলম তথা মুসলিম সমাজের জ্ঞানী ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা। বিশেষত যারা ইসলাম ও ইসলামের ব্যাপারে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় দ্বিনি পরামর্শ দিতে পারবে।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১২. মুসলমানদের মধ্যে যারা সামর্থ্যবান ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত তাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং যোগাযোগ রাখা। যেন অনভিপ্রেত কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে তাদের সাহায্য পাওয়া যায়।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৩. ইসলাম গ্রহণ করার পর কখনো কখনো সংকট তৈরি হতে পারে। এটাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা মনে করবে এবং ধৈর্যের সঙ্গে দ্বিনের ওপর অটল থাকবে।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৪. ইসলাম গ্রহণের পর পূর্ববর্তী ধর্মীয় বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও চর্চার কারণে মনে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হতে পারে। এসব প্রশ্নকে প্রশ্রয় না দেওয়া। যদি নিজ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া না যায়, তবে আলেমদের সঙ্গে কথা বলা এবং কোরআন ও হাদিসে তার উত্তর খোঁজা।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৫. সব কিছুর ওপর আল্লাহর একত্ববাদ ও ইসলামী বিশ্বাসগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া। অর্থাৎ সবার আগে ইসলামী বিশ্বাসগুলোকে আয়ত্ত করার চেষ্টা করা।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৬. ইসলাম সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন না করে কারো সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত হবে না। এতে মনোবল নষ্ট হতে পারে।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৭. মা-বাবা যদি ইসলাম পরিপালনে বাধা না হন, তবে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন না করা। যথাসম্ভব ভালো আচরণ করা।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৮. পরিবার-পরিজনের সঙ্গেও ঝগড়া-বিবাদ না করা। সম্ভব হলে তাদের দ্বিনের দাওয়াত দেওয়া। পরিবার-পরিজনের সামনে ঈমান ও ইসলামের গুরুত্ব তুলে ধরা।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯. বর্তমানে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই কোনো নওমুসলিমের আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা না হলে তা দ্রুত সম্পন্ন করা।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০. সর্বোপরি মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। যেন তিনি ঈমান ও ইসলামের ওপর অটল থাকার তাওফিক দেন।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল্লাহ সবাইকে পরিপূর্ণ মুমিন হওয়ার তাওফিক দিন। আমিন</span></span></span></span></p>