<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথম সারির আনসারি সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা.)। রাসুল (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের আগেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। আকাবার শপথে রাসুল (সা.)-এর হাতে হাত রেখে মুসলমান হন। ওই শপথে রাসুল (সা.)-এর নির্বাচিত ১২ নকিবের মধ্যে তিনি বনু হারিস ইবনে খাজরাজ গোত্রের নকিব (দায়িত্বশীল) নির্বাচিত হন। রাসুল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মদিনায় হিজরতের পর তাঁদের সাহায্য-সহযোগিতায় এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনে আনসারদের মধ্যে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। গুপ্ত ষড়যন্ত্রকারী মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবাই</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যাকে পূর্ব থেকেই তার ভক্তরা মদিনার শাহি মসনদে বসানোর স্বপ্ন লালন করে আসছিল, ইসলামের বিরুদ্ধে তার নানা ধরনের ষড়যন্ত্রের প্রতি খুব বেশি সচেতন ছিলেন তীক্ষ্ম দৃষ্টিসম্পন্ন বিচক্ষণ এই সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা.)। (রিজালুন হাওলার রাসুল : ১/২০৬)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গোটা আরবসমাজে মুষ্টিমেয় বিশেষ কিছু লোক ছাড়া সাধারণ মানুষ লিখতে জানত না। আবদুুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা.) ছিলেন সেই বিশেষ ব্যক্তিদের একজন। এর পাশাপাশি তিনি অসাধারণ কাব্যপ্রতিভারও অধিকারী ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর সে যোগ্যতা তিনি কাজে লাগিয়েছেন দ্বিনের জন্য। যুদ্ধ-জিহাদে তাঁর রচিত কবিতা ও তাঁর আবৃত্তি মুজাহিদদের উজ্জীবিত করত। রাসুল (সা.) তাঁর কাব্যপ্রতিভার ওপর বিস্ময় প্রকাশ করতেন এবং মাঝেমধ্যে তাঁর কবিতা শ্রবণ করতেন। (আত-ত্বাবাক্বাতুল কুবরা : ৩/৩৯৮, ৩৯৯-৪০০)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বদর, উহুদ, খন্দক যুদ্ধ, হুদাইবিয়ার বাইআতে রিজওয়ান, খাইবার যুদ্ধ ও উমরাতুল কাজাসহ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সব যুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন। এক যুদ্ধে রাসুল (সা.) তাঁকে নিজের স্থলাভিষিক্ত করে মদিনায় রেখে যান। রাসুল (সা.) তাঁকে খাইবারের খেজুরের পরিমাপ করার দায়িত্ব দেন। মূতায় শাহাদাতবরণ পর্যন্ত সে দায়িত্বে বহাল থাকেন। (আত-তাবাকাতুল কুবরা ৩/৩৯৮; উসদুল গাবাহ ৩/১৩০-১৩১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাঁর ঈমান ছিল অত্যন্ত মজবুত। আবুদ দারদা (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর কাছে এমন দিন থেকে পানাহ চাই, যে দিনটিতে আমি আবদুল্লাহ ইবনে রাওয়াহাকে স্মরণ না করি। কারণ তিনি যখন সামনের দিকে থেকে আমার সঙ্গে মিলিত হতেন, আমার বুকে হাত মারতেন, আর পেছনের দিক থেকে মিলিত হলে পিঠে হাত মারতেন। অতঃপর বলতেন, একটু সময়ের জন্য বসুন! কিছুক্ষণ ঈমানের আলোচনা করি। বসতাম, কিছুক্ষণ আল্লাহর স্মরণ করতাম। আল্লাহর বড়ত্ব, মহত্ত্ব ও কুদরত নিয়ে আলোচনা করতাম। এরপর বিদায়কালে বলতেন, আবুদ দারদা! এ হচ্ছে ঈমানের মজলিস। (উসদুল গাবাহ ৩/১৩১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মক্কা বিজয়ের পূর্বে ৮ম হিজরির জুমাদাল উলায় সংঘটিত মূতার যুদ্ধে তিনি শাহাদাতবরণ করেন। সে যুদ্ধে তিনি ছিলেন রাসুল (সা.)-এর ঘোষিত তিন সেনাপতির তৃতীয় সেনাপতি। পর্যায়ক্রমে তিন সেনাপতি শাহাদাতবরণ করার পর যুদ্ধের হাল ধরেন বীরযোদ্ধা সাহাবি খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.)। (তাহজিবুল আসমা ওয়াল-লুগাত ১/২৫৬)</span></span></span></span></p> <p> </p> <p style="text-align:right"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><strong> লেখক :</strong> মুহাদ্দিস, আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাইজদী, নোয়াখালী</span></span></span></span></p>