<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মহানবী (সা.)-এর আগমনের বিভিন্ন উদাহরণ হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে। যার মাধ্যমে পৃথিবীবাসীর জন্য নবীজির গুরুত্বের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এক হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী (সা.) বলেন, আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীদের অবস্থা এমন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এক ব্যক্তি যেন একটি গৃহ নির্মাণ করল, তাকে সুশোভিত ও সুসজ্জিত করল, কিন্তু এক পাশে একটি ইটের জায়গা খালি রয়ে গেল। অতঃপর লোকজন এর চারপাশে ঘুরে আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল ওই শূন্যস্থানের ইটটি লাগানো হলো না কেন? নবী (সা.) বলেন, আমিই সেই ইট। আর আমিই সর্বশেষ নবী।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(বুখারি, হাদিস : ৩৫৩৫)</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্য বর্ণনায় নবীজির শ্রেষ্ঠত্বের উদাহরণ এভাবে এসেছে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, একদল ফেরেশতা নবী (সা.)-এর কাছে এলেন। তিনি তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। একজন ফেরেশতা বলেন, তিনি ঘুমিয়ে আছেন। অন্য একজন বলেন, চক্ষু ঘুমিয়ে বটে, কিন্তু অন্তর জেগে আছে। তখন তাঁরা বলেন, তোমাদের এই সাথির একটি উদাহরণ আছে। সুতরাং তাঁর উদাহরণ তোমরা বর্ণনা করো। তখন তাঁদের কেউ বললেন, তিনি তো ঘুমন্ত, আর কেউ বললেন, চক্ষু ঘুমন্ত, তবে অন্তর জাগ্রত। তখন তাঁরা বললেন, তার উদাহরণ হলো সেই লোকের মতো, যে একটি বাড়ি তৈরি করল। তারপর সেখানে খানার আয়োজন করল এবং একজন আহ্বানকারীকে (লোকদের ডাকতে) পাঠাল। যারা আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দিল, তারা ঘরে প্রবেশ করে খানা খাওয়ার সুযোগ পেল। আর যারা আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দিল না, তারা ঘরেও প্রবেশ করতে পারল না এবং খানাও খেতে পারল না। তখন তাঁরা বলেন, উদাহরণটি ব্যাখ্যা করুন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন। তখন কেউ বললেন, তিনি তো ঘুমন্ত, আর কেউ বললেন, চক্ষু ঘুমন্ত, তবে অন্তর জাগ্রত। তখন তাঁরা বলেন, ঘরটি হলো জান্নাত, আহ্বানকারী হলেন মুহাম্মদ (সা.)। যারা মুহাম্মাদ (সা.)-এর অনুসরণ করল, তারা আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যারা মুহাম্মদ (সা.)-এর অবাধ্যতা করল, তারা আসলে আল্লাহরই অবাধ্যতা করল। মুহাম্মদ (সা.) হলেন মানুষের মধ্যে পার্থক্যের মাপকাঠি। (বুখারি, হাদিস : ২৮১)</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উল্লিখিত হাদিসে চমকপ্রদ উপমার মাধ্যমে নবীজির শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। হাদিসে সব নবীর নবুয়তকে উপমা দেওয়া হয়েছে একজন মানুষের নির্মাণকৃত সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর প্রাসাদের সঙ্গে। আর প্রাসাদের ইটের কথা বলে বোঝানো হয়েছে প্রত্যেকের শরিয়তের ভিন্নতাকে। বহুসংখ্যক ইট দ্বারা নির্মিত প্রাসাদ যত বড়ই হোক না কেন, তার মূল হলো নিচের ভিত। তেমনি সব নবীর শরিয়তের মূল ভিতও এক ও অভিন্ন। আর তা হচ্ছে তাওহিদ তথা আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপন। আর প্রাসাদ নির্মাণে ব্যবহৃত ইটের মতো শরিয়তের কিছু শাখাগত বিধানে ভিন্নতা রয়েছে। যেহেতু আমাদের প্রিয় রাসুল (সা.) এই ধারায় সর্বশেষ, তাই তিনি হলেন প্রাসাদের শেষ ওই ইট, যার মাধ্যমে নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং তার সৌন্দর্য পূর্ণতা লাভ করেছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উল্লিখিত হাদিসদ্বয়ের মাধ্যমে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তা হচ্ছে আল্লাহর রাসুল (সা.) পৃথিবীর শেষ নবী। অতএব, তাঁর পর যদি কেউ নবুয়তের দাবি করে তাহলে সে ঘোর মিথ্যাবাদী, সত্য-মিথ্যাকে মিশ্রিতকারী দাজ্জাল, পথভ্রষ্ট ও অন্যকে গোমরাহকারী। এমন মিথ্যাবাদীকে জালেম আখ্যা দিয়ে পবিত্র কোরআনের ইরশাদ হয়েছে, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় জালিম কে হবে, যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে অথবা বলে, আমার প্রতি ওহি অবতীর্ণ হয়েছে। অথচ তার প্রতি কোনো ওহি আসেনি এবং যে দাবি করে যে আমিও নাজিল করে দেখাচ্ছি যেমন আল্লাহ নাজিল করেছেন।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">(সুরা : আনআম, আয়াত : ৯৩) </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মোটকথা, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তাআলার সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবী ও রাসুল। এ জন্যই আল্লাহ তাআলা তাঁকে সমগ্র জগদ্বাসীর মধ্যে সবচেয়ে উত্তম চরিত্র, উজ্জ্বল নিদর্শন ও জ্ঞানের ভাণ্ডার মহাগ্রন্থ আল কোরআন দিয়ে পাঠিয়েছেন। অতএব, তাঁর পর যে কেউ নবুয়তের দাবি করবে সে সুস্পষ্ট মিথ্যাবাদী, দাজ্জাল ও ফিতনা সৃষ্টিকারী। যাদের ব্যাপারে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের যথেষ্ট সতর্কবার্তা আছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>