<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিটি শাস্ত্রের দুটি দিক রয়েছে। এক. জ্ঞানগত দিক, দুই. প্রায়োগিক দিক। জ্ঞানগত দিকের সঙ্গে প্রায়োগিক দিকের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে, বিশেষত আমলের সঙ্গে ইলমে মারেফাতের (আল্লাহর পরিচয়সংক্রান্ত জ্ঞান) সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। যেমন তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। মানুষের আমলের ওপর এর বিশেষ প্রভাব রয়েছে। আল্লাহর ওপর যার বিশ্বাসের স্তর যত উঁচু, আমলের প্রতিদানও সেই স্তর পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। সাহাবায়ে কিরাম (রা.) ও আল্লাহর কামেল ওলিদের ইবাদতের সঙ্গে আমাদের ইবাদতের পার্থক্য এখানেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাহাবায়ে কিরাম (রা.) ও সাহাবায়ে কিরামের ইবাদত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তা আর্থিক হোক বা দৈহিক হোক, অন্য কারো ইবাদত তার সমকক্ষ হতে পারে না। প্রশ্ন হচ্ছে, সাহাবায়ে কিরাম (রা.)-এর ইবাদত কোন বৈশিষ্ট্যের বিচারে আমাদের তুলনায় ভিন্ন? উত্তর হলো খাঁটি ঈমান ও নিষ্ঠাপূর্ণ বিশ্বাস। আল্লাহর কালেম ওলির দুই রাকাত নামাজ আমাদের দুই লাখ রাকাত নামাজের চেয়ে উত্তম। কেননা তাদের দুই রাকাত নামাজে ঈমান ও ইখলাস এই পরিমাণ পাওয়া যায়, যা আমাদের ইবাদতে কখনো পাওয়া সম্ভব নয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার কোনো সাহাবি আধা সের পরিমাণ খাদ্যশস্য দান করলে তা উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ স্বর্ণ দান করার চেয়েও অধিক সওয়াবের উপযুক্ত হয়ে থাকে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এই হাদিসের আলোকে আধা সের শস্যের বিপরীতে আধা সের স্বর্ণ নেওয়া হয় এবং তার সঙ্গে উহুদ পাহাড়ের প্রতি লক্ষ করা হয়, তখন এই উপমার মর্যাদা বোঝা যাবে। সওয়াবের এই বিশাল পার্থক্য ইলমে মারেফাতের আধিক্যের কারণেই।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, আলেমরা বিচিত্র মানুষ। কখনো এই হাদিস উল্লেখ করে পার্থক্যের কারণ আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা বলেন, কখনো খাঁটি নিয়তের কথা বলেন, কখনো ইলম ও ইলমে মারেফাতের কথা বলেন। এই হাদিস দ্বারা বিভিন্ন উদ্দেশ্য ব্যক্ত করেন। তাদের উত্তরে বলব, আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও খাঁটি নিয়তের প্রেরণা ইলম ও মারেফাত থেকে অর্জিত হয়, যা সাহাবায়ে কিরাম (রা.)-এর মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যমান ছিল। মৌলিক বিষয় একটাই। কিন্তু তাকে আপনি ভালোবাসা, ইলম ও মারেফাত নামে ব্যক্ত করতে পারেন। কবি কতই না সুন্দর বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের বাক্য ও অভিব্যক্তি ভিন্ন ভিন্ন, কিন্তু তোমার সৌন্দর্য একই। আমরা সবাই একই সৌন্দর্যের প্রতি ইঙ্গিত করছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইলম ও মারেফাতের ফলেই তাঁদের এমন বোধশক্তি দান করা হয়েছিল যে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রথমবার দেখেছিলেন, তখন সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠেছিলেন এটা কোনো মিথ্যাবাদীর চেহারা নয়। যদিও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সান্নিধ্যের ফলে পরবর্তী সময়ে তাঁর প্রতি আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.)-এর অন্তরে যে অকৃত্রিম ভালোবাসা তৈরি হয়েছিল তা বিদ্যমান ছিল না, তবু সত্যের অন্বেষণে যে অকৃত্রিম আগ্রহ ছিল তা তাঁকে মহানবী (সা.)-এর পরিচয় লাভে সাহায্য করেছিল। এ জন্য কোনো এক কবি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওলিদের ললাটে আল্লাহর নুর দীপ্যমান থাকে, স্বচ্ছ হৃদয়ের লোকেরা তা পরিষ্কার দেখতে পায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> পবিত্র কোরআনেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। ইরশাদ হয়েছে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাদের লক্ষণ তাদের মুখমণ্ডলে সিজদার প্রভাবে পরস্ফুিট থাকবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (সুরা : ফাতহ, আয়াত : ২৯)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মোটকথা সাহাবায়ে কিরাম (রা.)-এর ইলম ছিল খাঁটি। সুতরাং তাঁদের অনুসরণ করাই আমাদের পূর্ণ সৌভাগ্য। কেননা তাঁরা ছিলেন মহানবী (সা.)-এর সান্নিধ্যধন্য, ঈমান ও ইসলামে অগ্রগামী, তাঁদের সম্মুখে কোরআন নাজিল হয়েছে এবং তাঁরা আল্লাহর ভালোবাসায় সর্বোচ্চ নজরানা পেশের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাওয়ায়িজে আশরাফিয়া থেকে </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মো. আবদুল মজিদ মোল্লার ভাষান্তর</span></span></span></span></p>