<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেশির ভাগ সন্তান তার পিতাকে অনুকরণের চেষ্টা করে। সন্তানের চেহারা, হাঁটাচলা থেকে শুরু করে আচরণেও পিতার আচরণ ও অভ্যাসের ছাপ ফুটে ওঠে। তাই সন্তানকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে পিতার আমল-আখলাকও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেক সময় পিতার নেক আমলের কারণে সন্তানরা বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়। পিতার নেক আমল ও দোয়ার বরকতে সন্তানরা বিভিন্ন বড় বিপদ থেকেও মুক্ত থাকে। যেমনটা নজির আছে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত খিজির (আ.)-এর ঘটনায়। যেখানে তিনি দুই এতিম শিশুর জন্য লুকিয়ে রাখা সম্পদ বাঁচাতে একটি হেলে পড়া প্রাচীর ঠিক করে দেন। পবিত্র কোরআনে সেই ঘটনা উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়, সেই দুই শিশুর পিতা একজন সেলাক ছিল। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর প্রাচীরটির বিষয় হলো, তা ছিল এই শহরে বসবাসকারী দুই এতিম বালকের। এর নিচে তাদের গুপ্তধন  ছিল  এবং  তাদের  পিতা  ছিলেন একজন সেলাক। সুতরাং আপনার প্রতিপালক চাইলেন, ছেলে দুটি প্রাপ্তবয়সে উপনীত হোক এবং নিজেদের গুপ্তধন বের করে নিক। এসব আপনার প্রতিপালকের রহমতেই ঘটেছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৮২)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই আয়াত দ্বারা বোঝা যায়, পিতার নেক আমল, তাকওয়া-পরহেজগারি ও দোয়ার বরকতে সন্তানদের জীবন সুখময় ও নিরাপদ হয়। নেককার পিতার চোখের পানি সন্তানের জীবনকে সাফল্যমণ্ডিত করে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খ্যাতিমান তাবেঈ, খলিফাতুল মুসলিমিন উমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) বলেন, কোনো সেলাক মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাঁর সন্তানাদি ও পরের প্রজন্মের হেফাজত করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলই</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিবার, ইবনে আবিদ দুনইয়া, বর্ণনা ৭১; তারিখে দিমাশক, ইবনে আসাকির ৩১/২২২; জামিউল উলুমি ওয়াল হিকাম ১/৪৬৭)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাই কোনো পিতা যদি সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করেন, তাদের ইহকাল ও পরকালে সফলতা ও নিরাপত্তা চান, তাহলে তাঁদের অবশ্যই নিজেকে শোধরাতে হবে। জীবনকে তাকওয়া ও পরহেজগারিতে সজ্জিত করতে হবে। সালাহ ও ধার্মিকতার মাধ্যমে সন্তান দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জাহানে সালাহ ও ফালাহ অর্জনে এগিয়ে যাবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মশহুর তাবেঈ মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির (রহ.) বলেন, ব্যক্তির </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সালাহ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ও ধার্মিকতার কল্যাণে আল্লাহ তাআলা তার সন্তানাদি ও তাদের পরের প্রজন্মকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সালাহ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ও ধার্মিকতা দান করেন এবং তার ঘরবাড়ি ও তার আশপাশের ঘরবাড়ির হেফাজত করেন, যতক্ষণ সে তাদের মধ্যে বিদ্যমান থাকে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুনানে কুবরা, নাসায়ি, বর্ণনা ১১৮৬৬; আয্যুহদ ওর্য়া রাকাইক, ইবনুল মুবারক, বর্ণনা ৩৩০)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুধু দুনিয়ায়ই নয়, নেককার পিতার নেক আমলের বরকতে তার মুমিন সন্তানরা পরকালেও সম্মানিত হবে। তারা যদি জান্নাতে পিতার তুলনায় কম স্তরও পায়, পিতার নেক আমলের বরকতে তাদের মর্যাদা বাড়িয়ে পিতার সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়া হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর যারা ঈমান আনে এবং তাদের সন্তান-সন্ততি ঈমানের সঙ্গে তাদের অনুসরণ করে, আমরা তাদের সঙ্গে তাদের সন্তানদের মিলন ঘটাব এবং তাদের কর্মের কোনো অংশই কমাব না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার কামাইয়ের ব্যাপারে দায়ী থাকবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">(সুরা : তুর, আয়াত : ২১)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থাৎ, যাদের পিতারা নিজেদের আন্তরিকতা, আল্লাহভীরুতা, সৎকর্ম ও সচ্চরিত্রের ভিত্তিতে জান্নাতের সুউচ্চ মর্যাদা লাভে ধন্য হবে, মহান আল্লাহ তাদের ঈমানদার সন্তান-সন্ততিদের মর্যাদাও বাড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে তাদের পিতাদের সঙ্গে মিলিত করবেন। এ রকম করবেন না যে তাদের পিতাদের মর্যাদা কম করে তাদেরকে তাদের সন্তানদের নিম্নমানের মর্যাদায় তাদের নিয়ে আসবেন। অর্থাৎ মুমিনদের প্রতি তিনি দ্বিগুণ অনুগ্রহ করবেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহান আল্লাহ আমাদেরকে এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে দ্বিনদার ও মুত্তাকি হিসেবে কবুল করুন। আমিন।</span></span></span></span></p>