কোরআনের কসমের মাধ্যমে সুরাটি শুরু হয়েছে। এতে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে এই শিরকের সপক্ষে তোমাদের কাছে কোনো যুক্তি-প্রমাণ আছে? তারা বলে, আমাদের বাপ-দাদার সময় থেকে এ কাজ এভাবেই হয়ে আসছে। অথচ ইবরাহিম (আ.) পূর্বপুরুষদের এমন অন্ধ অনুসরণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আর আরবরা তো তাঁরই বংশধর।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. পূর্বসূরিদের অন্ধ অনুকরণ কোরো না। (আয়াত : ২২)
২. জীবিকার তারতম্য আল্লাহই করেন। (আয়াত : ৩২)
৩. কোরআন মুসলিম উম্মাহর জন্য সম্মানের বিষয়। (আয়াত : ৪৪)
৪. নবীদের নিয়ে উপহাস কাফিরদের অভ্যাস।
(আয়াত : ৪৭)
৫. ভালো কাজ থেকে বিমুখ হয়ো না। (আয়াত : ৬২)
৬. তোমরা পরস্পরের সঙ্গে মতবিরোধ কোরো না।
(আয়াত : ৬৫)
৭. জান্নাতে মনের সব ইচ্ছা পূর্ণ হবে। (আয়াত : ৭১)
৮. অবাধ্য পাপীদের উপেক্ষা করো। (আয়াত : ৮৯)
সুরা দুখান
আলোচ্য সুরা শুরু হয়েছে কোরআন নাজিলের ইতিহাস বর্ণনার মাধ্যমে। কোরআন নাজিল হয়েছে রমজান মাসের কদরের রাতে। এরপর অবিশ্বাসীদের ইহকালীন ও পরকালীন শাস্তি বর্ণনা করা হয়েছে। সুরার শেষের দিকে নেককার ও বদকারদের পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. জীবন-মৃত্যু আল্লাহর হাতে। (আয়াত : ৮)
২. সংশয়গ্রস্ত লোকেরাই দ্বিন নিয়ে বিদ্রুপ করে।
(আয়াত : ৯)
৩. আল্লাহ পাপীদের কঠোরভাবে পাকড়াও করেন।
(আয়াত : ১৬)
সুরা জাসিয়া
এই সুরায় তাওহিদ ও আখিরাত সম্পর্কে মক্কার কাফিরদের সন্দেহ, সংশয় ও আপত্তির জবাব দেওয়া হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে যে পৃথিবীর সব কিছু আল্লাহর অস্তিত্বের সাক্ষ্য দেয়। এই পৃথিবীতে মানুষ যত জিনিসের সাহায্য গ্রহণ করছে এবং বিশ্বে যে অসংখ্য বস্তু ও শক্তি মানুষের সেবা করছে তা আল্লাহই নিজের পক্ষ থেকে দান করেছেন। এরপর মক্কার কাফিরদের হঠকারিতা, অহংকার, ঠাট্টা-বিদ্রুপ সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. মিথ্যাবাদীদের জন্য দুর্ভোগ। (আয়াত : ৭)
২. পাপের পথ থেকে সরে এসো। (আয়াত : ৮)
৩. সমুদ্রে আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো।
(আয়াত : ১২)
৪. অবিশ্বাসীদেরও ক্ষমা করো। (আয়াত : ১৪)
৫. মূর্খদের অনুসরণ কোরো না। (আয়াত : ১৮)
৬. কোরআন মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ।
(আয়াত : ২০)
৭. পার্থিব জীবনকেই শেষ মনে কোরো না। (আয়াত : ২৪)
৮. গৌরব-গরিমা কেবল আল্লাহর। (আয়াত : ৩৭)
সুরা আহকাফ
কোরআনের প্রশংসার মাধ্যমে আলোচ্য সুরা শুরু হয়েছে। কাফিরদের কাছে দুনিয়াটা একটি উদ্দেশ্যহীন খেলার বস্তু। তারা এখানে নিজেদের দায়িত্বহীন সৃষ্টি মনে করে। এ কথার মাধ্যমে সুরা শেষ হয়েছে যে কিয়ামত অনিবার্য সত্য।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. মা-বাবার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা। (আয়াত : ১৫)
২. মানুষ ইহকালে ও পরকালে তাদের কাজ অনুযায়ী সম্মান লাভ করবে। (আয়াত : ১৯)
৩. দুনিয়ার জীবন এক দিনের চেয়েও ক্ষুদ্র। (আয়াত : ৩৫)
সুরা মুহাম্মাদ
এই সুরায় যুদ্ধ, বন্দি, গনিমত এবং বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। উভয় দলের পরিণতিও বর্ণনা করা হয়েছে। পাশাপাশি মুরতাদ ও মুনাফিকের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে। সুরাটি কোনো ভূমিকা ছাড়াই এ কথার মাধ্যমে শুরু হয়েছে যে যারা কাফির এবং যারা মানুষকে আল্লাহর পথে বাধা দেয়, তারা আল্লাহর শত্রু। সুরাটি শেষ হয়েছে যুদ্ধের প্রতি উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে। এখানে ঈমানদারদের ভীরুতা ও হীনম্মন্যতা দূর করতে বলা হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. অবিশ্বাসীদের ভালো কাজও নিষ্ফল হয়ে যায়। (আয়াত : ৮)
২. কিয়ামতের আলামত প্রকাশ পেয়েছে এবং পাচ্ছে। (আয়াত : ১৮)
৩. মানুষ ক্ষমতা পেলে আত্মীয়তা ছিন্ন করে।
(আয়াত : ২২-২৩)
৪. কোরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা জরুরি। (আয়াত : ২৪)
৫. দ্বিনবিমুখ মানুষের আনুগত্য কোরো না। (আয়াত : ২৬)
৬. পাপীদের শাস্তি মৃত্যুর সময় থেকে শুরু। (আয়াত : ২৭)
৭. বাকভঙ্গিতে অন্তরের ভাব প্রকাশ পায়। (আয়াত : ৩০)
৮. সত্য জেনেও বিমুখ হয়ো না। (আয়াত : ৩২)
৯. নিজের কাজকে অর্থহীন কোরো না। (আয়াত : ৩৩)
১০. অবিশ্বাস নিয়ে মৃত্যুবরণ কোরো না। (আয়াত : ৩৪)
১১. নিজের ও আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করার ক্ষেত্রে কার্পণ্য করো না। (আয়াত : ৩৮)
গ্রন্থনা : মুফতি আতাউর রহমান