দাম বেড়েছে শসা মরিচ ডিম পোলাও চালের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দাম বেড়েছে শসা মরিচ ডিম পোলাও চালের

ঈদ ঘিরে বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে শসা, কাঁচা মরিচ ও পোলাওয়ের চালের। পাশাপাশি ডিমের দামও বেড়েছে। তবে দাম কমেছে পেঁয়াজ, বেগুন, পটোল, চিচিঙ্গা, করলা, লাউ, চালকুমড়া, টমেটো, গাজরসহ বিভিন্ন সবজির। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

গতকাল কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০ টাকা। কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। বেগুন বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকায়। টমেটো বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।

গাজর বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। এ ছাড়া পটোল, ঢেঁড়স, চিচিঙ্গা, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে এরই মধ্যে অনেক মানুষ ঢাকা ছেড়ে চলে গেছে, যারা রয়েছে তারাও ঈদের কারণে এখন থেকেই সবজি কেনা কমিয়ে দিয়েছে, যার কারণে দাম কমেছে।

কারওয়ান বাজারের সবজি ব্যবসায়ী রবিউল আওয়াল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাজারে শসা ও কাঁচা মরিচ ছাড়া সব ধরনের সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ, রসুন ও আলুর পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘প্রতিবার কোরবানির ঈদের তিন-চার দিন আগে পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বাড়লেও, এবার এসব পণ্যের দাম বাড়ছে না। বরং ১৫ দিন আগের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে। খুচরায় আজ (গতকাল) পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়, আমদানি করা রসুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা এবং দেশি রসুন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে।’

জোয়ারসাহারা বাজারের মেসার্স ভাই ভাই স্টোরের বিক্রয়কর্মী মো. মোস্তফা বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে এক সপ্তাহ ধরেই পোলাওয়ের চালের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে।

খোলা ভালো মানের পোলাওয়ের চাল প্রতি কেজি ১২০ টাকায় আর প্যাকেটজাত ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এবার আদার দাম বাড়েনি। আদা প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।’

রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকারি পোলাওয়ের চাল ব্যবসায়ী জিয়াবুল হক বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে নতুন করে পাইকারি বাজারে পোলাওয়ের চালের দাম বাড়েনি। দাম যা বাড়ার আরো ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই বেড়েছে। এখন পাইকারি বাজারে পোলাওয়ের চালের ৫০ কেজির বস্তা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার ২৫০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার ৬৫০ টাকায়।’

হিলিতে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম : দিনাজপুরের হিলিতে এক দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম।

এক ক্রেতা বলেন, ‘বুধবার ৮০ টাকা কেজি কাঁচা মরিচ কিনে নিয়ে গেছি, সেই মরিচ আজ (গতকাল) বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে।’

হিলি বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতারা বলছেন, ‘বাজারে কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমে গেছে। সরবরাহ কমার কারণে দাম অনেকটাই বেড়েছে। সরবরাহ বাড়লে দাম আবারও কমে আসবে। আমরা খুচরা বাজারে ১২০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি করছি।’

[সংবাদে তথ্য দিয়েছেন হিলি প্রতিনিধি।]

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সবিশেষ

টিকটকে ‘রেড লিপ থিউরি’তে সাড়া

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
টিকটকে ‘রেড লিপ থিউরি’তে সাড়া

নতুন বছরে টিকটকে রেড লিপ থিউরি বা লাল ঠোঁট তত্ত্ব বেশ সাড়া জাগাচ্ছে। তাই টকটকে লাল লিপস্টিকের পক্ষে বেশ সাফাই গাওয়া হচ্ছে। লাল লিপস্টিক ঠোঁটে মাখলে কেন এটা দৃষ্টি আকর্ষক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের কালার বিবেচিত হয়, কেন নারীকে তখন দুর্দান্ত সাহসী মনে হয়, ইত্যাকার ব্যাখ্যাও উঠে আসছে। বিশেষ করে মেকআপহীন মুখে লাল লিপস্টিকের পরশ টিকটকের ক্রেজ কেন হয়ে উঠল, তার নানামাত্রিক ব্যাখ্যা আর উপযোগিতার কথাও বেশ আলোচিত হচ্ছে।

এসব যুক্তির মূল সুর হচ্ছে : ভালো হোক আর মন্দই হোক, লাল লিপস্টিকের পালে নতুন বছরে বেশ জোর হাওয়া বইছে।

রেড লিপ থিউরি-কে প্রতিষ্ঠিত করতে বেশ ভালো ভূমিকা রেখেছেন দুবাইভিত্তিক টিকটকার অমৃতা আনন্দানি। তাঁকে তাঁর বন্ধু নাকি মেকআপহীন মুখে কড়া লাল লিপস্টিক ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তাঁর ভাষায়. প্রথমে মনে হয়েছিল, আমাকে দেখতে জোকারের মতোই লাগবে।

কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, আমি আমার সিগনেচার লুকের অংশ হতে পেরেছি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক মাখানো মূলত সাহসের ব্যাপার। লিপস্টিক কুয়িন শিরোনামের টিকটকের স্রষ্টা পপি কিং বলেন, লাল লিপস্টিক শক্তির উৎস। একটু মেখে দেখুন, নিজের সামর্থ্যটাকে একটু বেশি করেই অনুভব করতে পারবেন।

জেসিকা বি ম্যাটলিন নামের একজন নন্দনতাত্ত্বিক ও লেখিকা একবার বলেছিলেন, লাল লিপস্টিক নিয়ে সমালোচনা চলে। এটাই মূলত লাল লিপস্টিকের শক্তি। এটা ঠোঁটে মাখতে আসলে সাহস লাগে। আস্থা না থাকলে এটা সবাই ঠোঁটে চড়াতে পারে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, টিকটকে কয়েক বছর ধরে লাল লিপস্টিকের আলাদা ক্রেজ তৈরি হয়েছে।

তবে এটা মূলত গতি বা মোমেন্টাম পেয়েছে চলতি নতুন বছরে। এই ট্রেন্ড আরো কিছুদিন স্থায়ী হতে পারে। সেলিব্রিটি অভিনেত্রী রিহানা আর টেইলর সুইফট একাই লাল লিপস্টিক মাখছেন না, তাঁদের টিকটকেও লাল লিপস্টিককে উঁচিয়ে ধরেছেন। একজন টিকটকার তাই বলেই ফেললেন, শুধু লাল লিপস্টিক লাগালেই আপনার চামড়ার সতেজতা বাড়বে।

দুবাইভিত্তিক মেকআপ স্টাইলিস্ট অমায়রা ক্যাটলিন বলেন, টকটকে লাল লিপস্টিক তাৎপর্যপূর্ণভাবে ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। এই রংটি শক্তি, দৃঢ়তা ও গ্ল্যামারের প্রতীক। এটা স্বপ্রকাশ ও মাথা উঁচু করার অনুপ্রেরণা জোগায়। সূত্র : খালিজ টাইমস

 

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
মামুনুল হক

দেশ যখন রক্তে ভাসছিল হাসিনা তখন ১২ পদের খাবার তৈরি করেছিলেন

সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
সালথা-নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
দেশ যখন রক্তে ভাসছিল হাসিনা তখন ১২ পদের খাবার তৈরি করেছিলেন
মামুনুল হক

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হক বলেছেন, দেশের তরুণ-যুবক, স্কুল-কলেজ-মাদরাসার ছাত্র ও খেটে খাওয়া শ্রমিকদের যখন হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়, যখন জনগণের রক্তে এই দেশ ভাসছিল, তখন শাসক খাওয়ার জন্য তাঁর বাসায় ১২ পদের খাবার প্রস্তুত করেছিলেন। কারণ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতাকে ভোগের বস্তু মনে করেছিল।  

গত মঙ্গলবার রাতে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বড় লক্ষণদিয়া মাঠে মাওলানা ছায়েনুদ্দিন ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এসব কথা বলেন।

মামুনুল হক বলেন, আমাদের দেশে যারা যখন ক্ষমতা পায়, বয়স যতই হোক তাদের চেহারার উজ্জ্বলতা বাড়তে থাকে।

ক্ষমতা হারানোর পর আবার তাদের চেহারা শুকিয়ে যায়। ৭৭ বছরের শেখ হাসিনা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যেন প্রতিবছর তার বয়স কমছিল। ক্ষমতা ছেড়ে চলে যাওয়ার মাত্র এক বছর পর শেখ হাসিনার চেহারার দিকে তাকিয়ে দেইখেন, কেমন দেখা যায়।

মামুনুল হক বলেন, আমাদের দেশে ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক নেতারা ও তাদের সঙ্গে থাকা বেকার যুবকরা মনে করে, আগে অন্যরা চাঁদাবাজি করেছে, এখন থেকে আমরা করব, আমাদের লুটেপুটে খাওয়ার দিন এসেছে।

এর কারণ ইসলামী রাজনীতি আমাদের দেশের মানুষকে আমরা শেখাই নাই। যদি ইসলামী রাজনীতি জাতি বুঝত, তাহলে তারা মনে করত, এত দিন যা করেছি সব অন্যায়।

হাফেজ মাওলানা রেজাউল হক বিন ছায়েনুদ্দিনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন ঢাকার ঢালকানগর মাদরাসার মুহতামিম মুফতি জাফর আহমেদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ ও বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, ফরিদপুর খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা আমজাদ হোসাইন প্রমুখ।

 

মন্তব্য

বেনজীরের স্ত্রী-মেয়ের ও ডিবি হারুনের আয়কর নথি জব্দের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বেনজীরের স্ত্রী-মেয়ের ও ডিবি হারুনের আয়কর নথি জব্দের আদেশ
বেনজীর আহমেদ

পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মীর্জা এবং তাঁর ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।

এদিন দুই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কমিশনের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন তাঁদের আয়কর নথি জব্দ চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন।

পরে শুনানি শেষে আদালত তাঁদের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন।

জীশান মীর্জার আবেদনে বলা হয়, তিনি মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে ১৬ কোটি এক লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে এবং ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারার এবং বেনজীর আহমেদ  বাংলাদেশ পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জীশান মির্জাকে এসব অপরাধে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

তাহসীন রাইসার আবেদনে বলা হয়, তাহসীন রাইসা পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৭(১) ধারার এবং বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশ ও র‌্যাবের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত থেকে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তাহসীন রাইসাকে অপরাধে প্রত্যক্ষ সহায়তা করে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

 

ডিবি হারুনের আয়কর নথি জব্দের আদেশ

দুদকের করা মামলায় সাবেক ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এবং তাঁর ভাই এ বি এম শাহারিয়ারের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন আয়কর নথি জব্দের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রহুল ইসলাম খান শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত দুই আবেদন মঞ্জুর করেন।

হারুনের আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়, আসামি মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৭ কোটি ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৮০৬ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

শাহারিয়ারের আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়, আসামি এ বি এম শাহারিয়ার ১২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬০৪ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

 

 

মন্তব্য
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও এখনো বাড়তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও এখনো বাড়তি

মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও সেটা এখনো বাড়তি বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি সবাই বলছে কিছুটা কমেছে, কিন্তু এটাকে কম বলে না। মূল্যস্ফীতি এখনো বাড়তিই আছে। এতে দিনমজুরদের ওপর চাপ পড়ছে।

মধ্যবিত্তরাও চাপে আছে।

গতকাল বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে এই ব্রিফিং হয়।

গত সোমবার ডিসেম্বরের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

সেখানে দেখা যায়, নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ১০.৮৯ শতাংশে দাঁড়ায়। নভেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১.৩৮ শতাংশ। ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ১২.৯২ শতাংশে পৌঁছে, যা  নভেম্বরে ছিল ১৩.৮০ শতাংশ।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, করোনা ও গণ-অভ্যুত্থানের কারণে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি একটি ক্ষতি হয়েছে।

এটা জনমিতির সুবিধার ক্ষেত্রে। জনসংখ্যা বয়স কাঠামোর মাঝামাঝি সময় চলছে। ১০ বছর পর জনসংখ্যার এই বয়সটা আর থাকবে না। তাদের সবারই বয়স বেড়ে যাবে। তখন চিকিৎসা খরচ আরো বাড়বে।
তবে সুশাসিত গণতান্ত্রিক শাসনে যদি উত্তরণ হতে না পারি, তাহলে এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত এটাই। আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো একটি ভালো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত রচনা করা। 

তিনি বলেন, রপ্তানিতে গতি ফিরে এসেছে। রেমিট্যান্স আগের চেয়ে বাড়ছে। এটা আশার কথা। মূল্যস্ফীতি সবাই বলছে কিছুটা কমেছে, কিন্তু এটাকে কম বলে না। মূল্যাস্ফীতি এখনো বাড়তিই আছে।

উপদেষ্টা বলেন, চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০ হাজার কোটি টাকার এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৬২ হাজার কোটি টাকা। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া প্রকল্পে আসায় এডিপি বাস্তবায়নেও গতি আসবে।

বাংলাদেশে ভোজ্য তেলে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দিনের পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য দেশের পানি ব্যবস্থাপনার সার্বিক পরিকল্পনা দরকার।

উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে হবে। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ, বাড়িসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করা হবে। আমি এসব মৌলিক কাজ করছি, সেখানে মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি মাথায় রাখছি না। এ ছাড়া এর মধ্যে ৫৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি দিয়ে শান্ত করেছি। এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল।

তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকে কোনো বছরই মার্চের আগে বই যায়নি। কোনো কোনো বছর বই গিয়েছিল জুন-জুলাইয়ে। আমরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে দিয়েছি। ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশের ইতিহাস বিতর্কিত হয়েছে, সেটি নিয়ে কোনো সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয় ছাপা হয়নি। অথচ রংপুরের আবু সাঈদের মৃত্যুর তারিখ ভুল হওয়া নিয়ে ব্যাপক নিউজ হয়েছে। আমরা বলেছি ভুলভ্রান্তি হতে পারে। সেগুলো সংশোধন করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, দেশের নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে আমরা একটা পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা তৈরি করছি। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য-উপাত্ত দরকার। তবু ডেল্টা প্ল্যান তার জায়গায় থাকবে। ওটা শত বছরের পরিকল্পনা। কিন্তু কোনো বিশেষজ্ঞই বলতে পারবেন না. শত বছরে বাংলাদেশের কী অবস্থা হবে। তাই মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার।

এদিকে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চার হাজার ২৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ের ১০টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন তিন হাজার ৬৩২ কোটি এক লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ২০৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪০৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

একনেকসভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো অর্থ মন্ত্রণালয়ের চট্টগ্রাম কর ভবন নির্মাণ প্রকল্প; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্প মোংলা বন্দরে পশুর চ্যানেলে সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প, মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদনের মাধ্যমে টেকসই পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদারকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) প্রকল্প ও সিলেট বিভাগে ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প।

এ ছাড়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রন ব্রিজ পুনর্নির্মাণ/পুনর্বাসন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডুপিটিলা-১ ও কৈলাশটিলা-৯ নং কূপ (অনুসন্ধান কূপ) খনন প্রকল্প, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণ (৪র্থ সংশোধিত) প্রকল্প। এ ছাড়া আরো দুটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়।

সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা অনুমোদিত ৯টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স, বিভাগীয় কমিশনার ও ডিআইজির বাংলো নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালকে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীতকরণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী সুবিধাবঞ্চিত ৮৬টি এলাকা ও নদী বিধৌত চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, মুজিবনগর সেচ উন্নয়ন প্রকল্প (২য় সংশোধিত), আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন (১ম সংশোধন) প্রকল্প, পদ্মা বহুমুখী সেতুর ভাটিতে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলাধীন বিভিন্ন স্থানে পদ্মা নদীর বাঁ তীর সংরক্ষণ (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ