<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প কাটছাঁট হতে পারে, যার প্রভাব পড়তে পারে মেগাপ্রকল্পেও। পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এমন কথা বলছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্লেষকরা বলছেন, মেগাপ্রকল্পের কাজ অন্তর্বর্তী সরকারের নীতির ওপর নির্ভর করছে। আওয়ামী লীগ সরকার এসব প্রকল্প তার দৃশ্যমান উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। এ জন্য তারা প্রকল্পগুলোতে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে আসছিল। অর্থনীতিবিদরা বারবার এসব প্রকল্পে গুরুত্ব কম দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাও রয়েছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) গুরুত্ব পাওয়া মেগাপ্রকল্পের মধ্যে রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। এই প্রকল্পের বরাদ্দ রয়েছে ১০ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। এটিতে রাশিয়ার বৈদেশিক ঋণ আছে। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত এ প্রকল্পের আওতায় খরচ হয়েছে ৬৪ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে মেট্রো রেল লাইন-৬ প্রকল্প। চলতি অর্থবছরে এই প্রকল্পে বরাদ্দ এক হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে ২০ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। মেট্রো রেল লাইন-১ প্রকল্পে বরাদ্দ আছে এক হাজার ৯৪২ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে এক হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা। মেট্রো রেল লাইন-৫ নর্দান রুট প্রকল্পে বরাদ্দ ৯৬৮ কোটি টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেল সেতুর জন্য বরাদ্দ দুই হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এসব প্রকল্পে জাপানসহ বিভিন্ন সংস্থার ঋণ রয়েছে। পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পে বরাদ্দ তিন হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। এটি বাস্তবায়নে ঋণ দিচ্ছে চীন। দোহাজারী-রামু-ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ এক হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় সাত হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এটি বাস্তবায়নে চীন ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণ রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরো কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হচ্ছে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন, পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন, সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ এবং সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্প : এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে অর্থসংকটের কারণে থমকে গেছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন। বিদায়ি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ৮০ শতাংশ, মূল এডিপির তুলনায় যা আরো কম।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মেগাপ্রকল্পের পাশাপাশি অনিশ্চয়তা রয়েছে চলতি অর্থবছরে এডিপিতে অনুমোদন পাওয়া এক হাজার ৩২১টি প্রকল্পে। এসব প্রকল্পের মধ্যে বিনিয়োগ প্রকল্প এক হাজার ১৩৩টি, কারিগরি সহায়তার ৮৭টি এবং সমীক্ষা প্রকল্প ২১টি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার এগুলোর মধ্যে অনেক প্রকল্প বাদ দিতে পারে। কারণ প্রকল্পগুলোতে রাজনৈতিক বিবেচনা তথা লবিংয়ের প্রকল্পও রয়েছে। বিশেষ করে ৫০ কোটি টাকার নিচে যেসব প্রকল্প রয়েছে, এগুলোর অনেক প্রকল্পই লবিংয়ের মাধ্যমে অনুমোদন হয়ে থাকে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইএনএম) নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তফা কে. মুজেরী কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজ অনেক হলেও সময় কম। সুতরাং চলমান প্রকল্পগুলো ভালোভাবে খতিয়ে দেখে প্রকৃত প্রয়োজন হলে বাস্তবায়ন শেষ করতে হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া এবং কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হলে সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত ও অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) এমদাদ উল্লাহ মিয়ান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ ঠিক করা হবে। মেগাপ্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্পের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা বৈঠক করব। এই সরকারের পলিসি অনুযায়ী আমাদের কার্যক্রম চলবে। তিনি মন্ত্রণালয়ে এলে পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যে বৈঠক করবেন, সেখানে আমরা সার্বিক অবস্থা তুলে ধরব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোনো প্রকল্প বাদ দেওয়া হবে কিনা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। উপদেষ্টা আমাদের যেভাবে কাজ করতে বলবেন, আমরা সেভাবে করব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক প্রশ্নের জবাবে এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, মেট্রো রেল ও এক্সপ্রেসওয়ের মতো ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পগুলো সংস্কারে যদি কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়, সেগুলো অবশ্যই আগে গুরুত্ব দেওয়া হবে। তবে মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ থেকেও এগুলো সংস্কার করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোনো প্রকল্প প্রস্তাবনা না-ও আসতে পারে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, দ্রুত সময়ে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন প্রকল্পই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে অবকাঠামো উন্নয়ন হলে যেসব প্রকল্প থেকে ফিডব্যাক পাওয়া যাবে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন প্রকল্প আপাতত অনুমোদন না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।</span></span></span></span></p>