<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভারতের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার প্রক্রিয়া এখন প্রশ্নের মুখে। সরকার আদানি গ্রুপসহ ভারত থেকে আনা দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের স্বচ্ছতা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। এই বিদ্যুৎ আমদানি হলেও এ ক্ষেত্রে ভারত শুল্ক আইন মানেনি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এযাবৎকালে কখনো বিল অব এন্ট্রিও জমা দেওয়া হয়নি বলেও প্রশ্ন উঠেছে। তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর আট সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে। এই কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে ভারত থেকে আনা বিদ্যুতের দায় শোধ, প্রতি ইউনিটের দাম, প্রযোজ্য শুল্ক-কর ও শুল্ক আইন মেনে আমদানি করার সব তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা খতিয়ে দেখবে। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তথ্য বলছে, বাংলাদেশ বিভিন্ন সময়ে ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করে। এসব চুক্তির আওতায় তিনটি পথে প্রায় দুই হাজার ৬৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করে বাংলাদেশ। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা, কুমিল্লা আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে আসে বিদ্যুৎ। তবে মাত্র ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য শুল্ক-কর সংক্রান্ত ছাড়পত্র জারি হয়েছে। বাকি বিদ্যুৎ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক-কর ছাড়ের কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। এ ছাড়া আদানিসহ বিভিন্ন পথে যে বিদ্যুৎ আসছে, এর জন্য শুল্ক আইন মেনে বিভিন্ন শুল্ক স্টেশনে বিল অব এন্ট্রি জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু কখনো বিল অব এন্ট্রি জমার তথ্য নেই কাস্টমসের কাছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এনবিআরের শুল্ক খাতের গোয়েন্দা সংস্থাটি এখন ভারতের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির সব তথ্য খতিয়ে দেখে যদি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে থাকে তা-ও ধরবে বলে জানা গেছে। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সংস্থার যুগ্ম পরিচালক এদিপ বিল্লাহকে। সদস্যসচিব করা হয়েছে উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমানকে। সংস্থার উপাপরিচালকসহ আরো ছয়জনকে রাখা হয়েছে কমিটির সদস্য হিসেবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানা যায়, ভারতের বিতর্কিত শিল্পপতি গৌতম আদানির মালিকানাধীন বহুজাতিক কম্পানি আদানি গ্রুপের কাছ থেকে বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ভারতের পশ্চিবঙ্গের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গড্ডায় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে আদানি গ্রুপ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত গৌতম আদানি তাঁর উৎপাদিত বিদ্যুৎ বেচতে বাংলাদেশ থেকে বাড়তি দাম নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এটি বিদ্যুৎ কেনার অসম চুক্তি বলেও বেশ সমালোচনা রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এমন প্রেক্ষাপটে আদানির কাছ থেকে কেনা বিদ্যুৎসহ অন্য যেসব চুক্তি রয়েছে, তাতে বাংলাদেশের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে কি না, কত দামে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কেনা হয়েছে, শুল্ক-কর ছাড় নিয়েছে কি না, না নিয়ে থাকলে প্রকৃত চিত্র কী</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এসব নানা প্রশ্নের জবাব খুঁজবেন এনবিআরের শুল্ক-গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ভারত থেকে কয়েকটি পথে বিদ্যুৎ আসে। দেশে বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে কিছু সমালোচনাও রয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কাস্টমসের ক্ষেত্রে সব আইনকানুন মানা হয়েছে কি না, সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে কি না, এ পর্যন্ত কত শুল্ক-কর দিয়েছে ইত্যাদি তথ্য খতিয়ে দেখা হবে। এমনকি এই বিদ্যুৎ আমদানির জন্য যে এইচএস কোড দেওয়া হয়েছে, সেটি উপযুক্ত কি না</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এসব বিষয়ও দেখা হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কাস্টমস সূত্র জানায়, ভারত থেকে আড়াই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এলেও মাত্র ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ক্ষেত্রে শুল্ক-কর ও ভ্যাট ছাড়ের প্রমাণপত্র রয়েছে। বাকি বিদ্যুতের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই। কাস্টমস আরো জানায়, যদি কাস্টমস আইন মেনে বিল অব এন্ট্রি জমা না দিয়ে অব্যাহতভাবে বিদ্যুৎ আমদানি হয়ে থাকে, তবে তা স্মাগলিংয়ের সমতুল্য। আর বিদ্যুতের দায় শোধের বিষয়টিও কতটা স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয়েছে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়টিও সামনে এসেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশের কাস্টমস গোয়েন্দারা এমন এক সময়ে আদানিসহ ভারতের কাছ থেকে কেনা বিদ্যুতের স্বচ্ছতা যাচাইয়ের কাজটি শুরু করতে যাচ্ছেন, যখন সদ্য আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশটির পদচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন সেই দেশের আশ্রয়ে আছেন।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>