<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শামসুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর আদালতে উপস্থিত থেকেও শুনানিতে হাজিরা না দেওয়ার কারণে বিচারক তাঁর বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি শামসুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে। একটি মামলায় তিনি নিজে এবং অন্য একটি মামলায় তিনিসহ স্ত্রীও আসামি। তদন্ত শেষে দুটি মামলায় তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে একই সময় একই আদালতে মামলা দুটির শুনানি হয়। একটি মামলায় শামসুদ্দোহা হাজিরা দিলেও স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারকে দুর্নীতিতে সহযোগিতার অভিযোগে করা অন্য মামলায় তিনি হাজিরা দেননি। এ মামলায় তাঁর স্ত্রী ফেরদৌসী হাজিরা দিয়ে জামিন পেলেও তিনি আদালতে উপস্থিত থেকে কাগজপত্রে পলাতক থেকে যান। এতে আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর দুটি মামলার চার্জশিট অনুমোদনের তারিখ ছিল। ওই দিন শামসুদ্দোহা এবং তাঁর স্ত্রী আদালতে উপস্থিত হন। একটি মামলায় তাঁর আইনজীবী শাহিনুর ইসলাম জামিন শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে মামলাটির অভিযোগ আমলে নেন আদালত। পরে আরেক মামলায় তাঁর স্ত্রী ফেরদৌসী হাজিরা দেন। তিনিও জামিন পান। তবে এই মামলার সহযোগী আসামি শামসুদ্দোহা আদালতে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তাঁর কোনো পদক্ষেপ ছিল না। এতে আদালত তাঁকে পলাতক দেখান। পরে মামলাটির চার্জশিট আমলে নিয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তিনি স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণ ছাড়েন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, দুটি মামলায় শামসুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। তিনি একটি মামলায় জামিনে থাকলেও অন্য মামলায় পলাতক আসামি। তিনি আদালতে উপস্থিত হয়ে একটি মামলায় হাজিরা দিয়েছেন। অন্য মামলায় তিনি জামিন আবেদন করেননি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ব্যাপারে শামসুদ্দোহার আইনজীবী ফজলুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের প্রস্তুতি না থাকায় আদালতে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আসলে যেকোনো মামলায় আত্মসমর্পণ করতে হলে মামলার অভিযোগের বিষয়ে প্রস্তুতি থাকতে হয়। কিন্তু ওই দিন প্রস্তুতি ছিল না। যেহেতু আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছেন, আমরা সব অভিযোগ বিশ্লেষণ করে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চেয়ে আবেদন করব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে জানতে শামসুদ্দোহার মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১৮ সালে শামসুদ্দোহা এবং তাঁর স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করা হয়। অনুসন্ধান শেষে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। সন্তানদের পড়াশোনা এবং সংসারের ব্যয় মিটিয়ে শামসুদ্দোহা এবং তাঁর স্ত্রী যে সম্পদ অর্জন করেছেন, তা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত। ফেরদৌসী দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে সম্পদের উৎস হিসেবে স্বামীর দেশে-বিদেশে চাকরি, যুক্তরাজ্যে নিজের তিন বছরের চাকরি, কৃষি খামার ও ব্যবসার আয় এবং মায়ের দান, জমি ও ফ্ল্যাট বিক্রির কথা উল্লেখ করেন। তবে এই উৎসগুলোর সপক্ষে ফেরদৌসী প্রমাণপত্র জমা দেননি। শামসুদ্দোহার কাছ থেকেও প্রমাণপত্র পাওয়া যায়নি। ২০১৯ সালে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করে সংস্থাটি। তদন্ত শেষে গত ২ জুলাই আদালতে দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দেন। এক মামলার অভিযোগপত্রে শামসুদ্দোহা খন্দকারের বিরুদ্ধে আট কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদ গোপনসহ দুই কোটি ৮৭ লাখ তিন হাজার ৩৭৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং বিভিন্ন ব্যাংকে সন্দেহজনক তথা অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া অন্য মামলার অভিযোগপত্রে শামসুদ্দোহা এবং তাঁর স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারের বিরুদ্ধে ২৮ কোটি ৪৭ লাখ তিন হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদ গোপন করাসহ ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকার পেশায় একজন গৃহিণী হয়েও বিভিন্ন ব্যাংকে সন্দেহজনক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া যায়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৮৬ সালে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন শামসুদ্দোহা। ২০১১ সালে অতিরিক্ত আইজিপি থাকাবস্থায় তাঁকে প্রেষণে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় সরকার। দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ওঠে। ২০১৫ সালে তাঁকে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ৩ মার্চ চাকরি থেকে অবসরে যান তিনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম কালের কণ্ঠকে বলেন, শামসুদ্দোহার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় তিনি আদালতে ছিলেন। তবে আরেক মামলায় তিনি উপস্থিত না থাকায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। </span></span></span></span></p>