<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিটি করপোরেশনগুলোকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর যে ঠিকানা দিচ্ছে, তা ৬২ শতাংশ ক্ষেত্রে ভুল বলে দাবি করেছেন দুই সিটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, বাইরে থেকে আসা অনেক রোগীকে ঢালাওভাবে সিটি করপোরেশন এলাকার রোগী হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এতে তাঁদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এমন পরিস্থিতিতে জানা গেল, এডিস মশার ঘনত্ব জানাতে এ বছর বর্ষায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো জরিপ হয়নি। মশার লার্ভার উপস্থিতি কোথায় কত, সে বিষয়েও কারো কাছে কোনো সঠিক তথ্য নেই।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এমন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু নিধন কার্যক্রম ব্যাহত হবে এবং এডিস মশা বেড়ে ডেঙ্গুর বিস্তার বাড়তে পারে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ কবিরুল বাশার কালের কণ্ঠকে বলেন, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সঠিক তথ্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে হটস্পট ম্যানেজমেন্ট কিভাবে হবে?  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ মুহূর্তে আমাদের করণীয় হলো কভিড পরীক্ষার মতো প্রযুক্তির ব্যবহার করা। জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা দিয়ে অনলাইনে নিবন্ধন করে পরীক্ষা করা। তাহলে সব রোগীর তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। একই সঙ্গে হটস্পট চিহ্নিত হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">চলতি সেপ্টেম্বরের প্রথম ২০ দিনে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয় ৯ হাজার ৪২৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৪১ জন। এর আগে আগস্টে ডেঙ্গুতে ছয় হাজার ৫২১ জন আক্রান্ত হয়। মৃত্যু হয় ২৭ জনের। অর্থাৎ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার দুটিই লাফিয়ে বাড়ছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বর্ষা-পরবর্তী সময় অর্থাৎ আগস্ট থেকে অক্টোবরকে ধরা হয় </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ডেঙ্গুর মৌসুম</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">। পরিমিত বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা থাকায় বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ সময়ে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার প্রজনন যেমন বেশি হয়, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তও হয় অনেকে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরো দুজন মারা গেছে। এই সময়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরো ২৯৯ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২২ হাজার ২৬৫ জন। রোগটিতে মারা গেছে ১২৪ জন।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য ভুল ও অসংগতিপূর্ণ</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে প্রচারিত নিয়মিত ডেঙ্গু রোগী সম্পর্কিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঢাকা উত্তর সিটিতে আক্রান্ত চার হাজার ২৫২ জন, মৃত্যু ১৫ জনের। দক্ষিণে আক্রান্ত পাঁচ হাজার ৫৪৩ জন, মৃত্যু ৭১ জনের। তবে এ তথ্যকে ভুল ও অসংগতিপূর্ণ বলছেন দুই সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দুই সিটি করপোরেশনের যাচাই করা তথ্য মতে, চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উত্তর সিটিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় এক হাজার ৪৫৫ জন, মৃত্যু হয় চারজনের। দক্ষিণে আক্রান্ত হয় দুই হাজার দুজন, মৃত্যু হয় ১২ জনের। হিসাব করলে দাঁড়ায় ৩৭.২৪ শতাংশ। অর্থাৎ ৬২.৭৬ শতাংশ রোগী ঢাকার বাইরে থেকে আসা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দুই সিটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দাবি, সিটি করপোরেশনের অধীন হাসপাতালগুলোতে সারা দেশের ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা ঢাকায় বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনের ঠিকানা ব্যবহার করে। এসব রোগীকে ঢালাওভাবে সিটি করপোরেশন এলাকার রোগী হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। এতে তাঁদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফজলে শামসুল কবীরের দাবি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন রোগীর যে তথ্য দিচ্ছে, তার চার ভাগের এক ভাগ রোগী পাওয়া যাচ্ছে সিটি করপোরেশন এলাকার। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর তথ্যে দক্ষিণ সিটি লেখা হচ্ছে। আমরা প্রতিটি রোগীর ফোন নম্বরে কল দিয়ে নিশ্চিত হই রোগীটি দক্ষিণের কি না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জানা যায়, এসব রোগী ঢাকায় বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনের ঠিকানা ব্যবহার করছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল ডিএনসিসিতে ২৫১ জন আক্রান্তের তথ্য দিয়েছে। আমাদের কল সেন্টার প্রতিনিধির মাধ্যমে যাচাই করে জানা গেছে এই সংখ্যা মাত্র ৪০। এমন তথ্যে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মশা নিধনে আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। ডিএনসিসির ৪৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিদর্শন করছে। সপ্তাহব্যাপী মশা নিধন বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আমাদের কমিউনিটি ভলান্টিয়ার তার এলাকায় ২০০ থেকে ২৫০ খানা পরিদর্শন করছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সঠিক তথ্য না থাকায় ঢাকার বাইরে কোথায় রোগী বাড়ছে, সেটি জানা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এতে হটস্পট এলাকায় চিকিৎসাব্যবস্থা বা মশক নিধনের যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, সেটিও হচ্ছে না। এতে একদিকে মশক নিধন যেমন সম্ভব নয়, সেই সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতালে ৩০% রোগী ঢাকার বাইরের</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে রোগী, রোগীর স্বজন, নার্স এবং হাসপাতাল পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ১২ থেকে ৩০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি। বেশির ভাগ আসছে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, খিলগাঁও, লালবাগ, কামরাঙ্গীর চর ও মিরপুর থেকে; ঢাকার বাইরে নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, বরিশাল ও খুলনা থেকে।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতালটির পরিচালক ডা. এস এম হাসিবুল ইসলাম বলেন, জ্বর, শরীর ব্যথা বা মাথা ব্যথা নিয়ে রোগীরা বেশি আসছে। তবে এবার নতুন কিছু উপসর্গও দেখা যাচ্ছে। অনেকের পেট ও লিভারের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে রোগী বা সাধারণ মানুষ রক্তের প্লাটিলেট কমে যাওয়ার বিষয়টিতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ডেঙ্গুতে শুধু প্লাটিলেট কমে যাওয়ার কারণে নয়, বরং রোগী মারা যায় ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে। তাই প্লাটিলেটের সংখ্যা ১০ হাজারের ওপরে থাকলে এবং রক্তপাত (অ্যাক্টিভ ব্লিডিং) না থাকলে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।</span></span></span></span></span></p>